সাধু বেনেডিক্ট মঠের ওয়েব-সাইট - মহেশ্বরপাশা - খুলনা - বাংলাদেশ
[অনলাইন পঞ্জিকা]
সাধারণকাল
• সাধারণকালের প্রথম সপ্তাহ প্রভুর বাপ্তিস্ম থেকে শুরু হয়।
• পরমপবিত্র ত্রিত্ব পঞ্চাশত্তমীর পরবর্তী রবিবারে পালিত হয়।
• খ্রিষ্টের পরমপবিত্র দেহরক্ত পরমপবিত্র ত্রিত্বের পরবর্তী রবিবারে পালিত হয়।
• পরমারাধ্য যিশুহৃদয় পঞ্চাশত্তমীর পরবর্তী দ্বিতীয় রবিবারের পরবর্তী শুক্রবারে পালিত হয়।
• বিশ্বরাজ আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্ট সাধারণকালের শেষ রবিবারে পালিত হয়।

রবিবার: ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩
সাধারণকালের মহাপর্বচতুষ্টয়: ত্রিত্ব | খ্রিষ্টের দেহরক্ত | যিশুহৃদয় | খ্রিষ্টরাজা

২য় রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর, তুমিই স্বর্গমর্তের সকল প্রাণীর নিয়ন্তা!
প্রসন্ন হয়ে তোমার জনগণের মিনতি কান পেতে শোন:
আমাদের জীবনকালে তোমার শান্তি মঞ্জুর কর।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
নবী ইশাইয়ার পুস্তক থেকে পাঠ (৪৯:৩,৫-৬)

প্রভু আমাকে বললেন,
‘ইস্রায়েল, তুমি আমার আপন দাস,
তোমাতেই আমার কান্তি প্রকাশ করব।’
আর এখন সেই প্রভু কথা বললেন,
যিনি মাতৃগর্ভ থেকে আপন দাসরূপে আমাকে গড়েছেন,
যেন যাকোবকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে আনি,
ও তাঁর সঙ্গে ইস্রায়েলকে পুনর্মিলিত করি,
—বাস্তবিকই প্রভুর দৃষ্টিতে আমি গৌরবের পাত্র হয়েছি,
পরমেশ্বরই হলেন আমার শক্তি।
তিনি বললেন:
‘যাকোবের সমস্ত গোষ্ঠী পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য,
ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশ ফিরিয়ে আনার জন্যই যে তুমি আমার দাস,
তা তোমার পক্ষে যথেষ্ট নয়।
তাই আমি তোমাকে দেশগুলির জন্য আলোরূপে নিযুক্ত করব,
তুমি যেন পৃথিবীর প্রান্তসীমা পর্যন্ত হও আমার পরিত্রাণ।’
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ৪০
ধুয়ো:
তোমার ইচ্ছা পূর্ণ করতে
এই যে আমি আসছি, প্রভু।

আমি প্রভুর ব্যাকুল প্রতীক্ষায় ছিলাম,
আমার উপর আনত হয়ে তিনি আমার চিৎকার শুনলেন;
আমার মুখে তিনি দিলেন একটি নতুন গান,
আমাদের পরমেশ্বরের প্রশংসাগান।   [ধুয়ো]

যজ্ঞ ও নৈবেদ্যে তুমি প্রীত নও,
বরং উন্মুক্ত করেছ আমার কান;
আহুতি ও পাপার্থে বলিদান চাওনি তুমি,
তখন আমি বললাম, ‘এই যে আমি আসছি।’   [ধুয়ো]

শাস্ত্রগ্রন্থে আমার বিষয়ে লেখা আছে,
আমি যেন তোমার ইচ্ছা পূর্ণ করি;
হে আমার পরমেশ্বর, এতে আমি প্রীত,
আমার অন্ত্ররাজি-গভীরেই তোমার বিধান বিরাজিত।   [ধুয়ো]

আমি মহা জনসমাবেশে
ধর্মময়তার কথা প্রচার করলাম,
দেখ, রুদ্ধ করি না কো আমার ওষ্ঠ,
তুমি তো জান, প্রভু।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (১:১-৩)

আমি পল, ঈশ্বরের মঙ্গল-ইচ্ছায় খ্রিষ্টযিশুর প্রেরিতদূত হতে আহূত, এবং ভাই সোস্থেনেস, করিন্থে ঈশ্বরের মণ্ডলীর সমীপে; তাদেরও সমীপে, যারা খ্রিষ্টযিশুতে পবিত্রীকৃত হয়ে তাদের সকলেরই সঙ্গে পবিত্রজন হতে আহূত হয়েছে যারা সর্বত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের নাম করে যিনি তাদের ও আমাদের প্রভু: আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যিশুখ্রিষ্ট থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের উপর বর্ষিত হোক।
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
বাণী হলেন মাংস,
ও আমাদের মাঝে তাঁবু খাটালেন।
যারা তাঁকে গ্রহণ করল,
সেই সকলকে তিনি ঈশ্বরসন্তান হওয়ার অধিকার দিলেন।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (১:২৯-৩৪)

যিশুকে নিজের দিকে আসতে দেখে যোহন বললেন, ‘ওই দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, জগতের পাপ যিনি হরণ করেন! তাঁরই সম্বন্ধে বলেছিলাম: আমার পরে এমন একজন আসছেন, যিনি আমার অগ্রগণ্য, কারণ আমার আগেও ছিলেন। আমিও তাঁকে জানতাম না, কিন্তু ইস্রায়েলের কাছে তিনি যেন প্রকাশিত হন, এজন্যই আমি এসে জলে বাপ্তিস্ম দিই।’
আর যোহন এই বলে সাক্ষ্য দিলেন, ‘আমি দেখেছি, আত্মা কপোতের মত স্বর্গ থেকে নেমে এসে তাঁর উপর থাকলেন। আমিও তাঁকে জানতাম না, কিন্তু যিনি আমাকে জলে বাপ্তিস্ম দিতে পাঠিয়েছেন, তিনি আমাকে বললেন, “যাঁর উপরে আত্মাকে নেমে এসে থাকতে দেখবে, তিনিই পবিত্র আত্মায় বাপ্তিস্ম দেন।” আর আমি দেখেছি, এবং এই সাক্ষ্য দিয়েছি যে, ইনিই ঈশ্বরের সেই মনোনীতজন।’
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
যোহন-রচিত সুসমাচারে আলেক্সান্দ্রিয়ার বিশপ সাধু সিরিলের ব্যাখ্যা

আমাদের ব্যাখ্যা করতে হবে, সেই তিনি কে যিনি কাছে আসছেন, আর কেন তিনি স্বর্গ থেকে আমাদের মাঝে নেমে এলেন। সুসমাচার-রচয়িতা বলে ওঠেন, ওই দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যাঁর বিষয়ে নবী ইশাইয়া ভাববাণী দিয়ে বলেছিলেন: তিনি ছিলেন জবাইখানায় চালিত মেষশাবকেরই মত, লোমকাটিয়ের সামনে নীরব মেষেরই মত (ইশা ৫৩:৭)। একসময় মোশির বিধান সেই মেষশাবকের পূর্বচ্ছবি দিয়েছিল; সেসময় কিন্তু সে আংশিকভাবেই ত্রাণ করত, নিজ দয়া সকলের উপরে বর্ষণ করত না, কেননা সে ছিল পূর্বচ্ছবি ও প্রতীক মাত্র; এখন কিন্তু প্রতীকাকারে পূর্বনির্দিষ্ট সেই মেষশাবক নিষ্কলঙ্ক বলিরূপে সকলের জন্য নিহত হতে চালিত হচ্ছেন যাতে তিনি জগতের পাপ হরণ করেন, পৃথিবীতে যে সর্বনাশ এনেছিল তিনি যেন সেই দুর্জনকে ধ্বংস করেন, সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করায় মৃত্যু বিনষ্ট করেন, আর এভাবে তিনি যেন মানুষকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে ও তুমি ধুলো, আর ধুলোতেই আবার ফিরে যাবে (আদি ৩:১৯) উক্তিটা নিঃশেষ করতে পারেন। তিনি সেই দ্বিতীয় আদম হতে চাইলেন—মাটির নয়, স্বর্গীয় যে আদম (১ করি ১৫:৪৭ দ্রঃ), যেন নিজেই মানবস্বরূপের সমস্ত মঙ্গলদানের সূত্রপাত হতে পারেন, যথা ধ্বংস থেকে ত্রাণকর্তা, অনন্ত জীবনের মধ্যস্থ, ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাওয়ার কারণ, ভক্তি ও ধর্মময়তার ভিত্তি, স্বর্গরাজ্যের দিকে পথ।
একটিমাত্র মেষশাবক সকলের হয়ে মরলেন, আর সেই মৃত্যুতে তিনি সমস্ত মানব-পাল ত্রাণ করলেন যাতে সকলকে পিতার কাছে ফিরিয়ে নিতে পারেন; সকলের হয়ে একজনমাত্র মরলেন যাতে সকলকেই ঈশ্বরের অধীন করতে পারেন: সকলের হয়ে একজনমাত্র মরলেন যাতে সকলকে ত্রাণ করতে পারেন, যারা জীবিত, তারা যেন আর নিজেদের জন্য নয়, বরং তাঁরই জন্য জীবন যাপন করে, যিনি তাদের জন্য মৃত্যু বরণ করেছেন ও পুনরুত্থিত হয়েছেন (২ করি ৫:১৫)।
বহু পাপে নিমজ্জিত হওয়ায় আমরা মৃত্যু ও ক্ষয়প্রাপ্তির অধীন ছিলাম; এজন্য পিতা আমাদের পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে আপন পুত্রকে দান করলেন—সকলের হয়ে একজনমাত্র, কেননা তাঁরই মধ্যে সবকিছু বিরাজিত আর তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বেই অধিষ্ঠিত।
কেবল তিনিই সকলের হয়ে মরলেন, যাতে আমরা সকলে তাঁর মধ্যে জীবিত থাকতে পারি। যে মৃত্যু আমাদের হয়ে নিহত সেই মেষশাবককে কবলিত করেছিল, সেই মৃত্যু তাঁর মধ্যে ও তাঁর সঙ্গে সকলকেই ফিরিয়ে দিল; কেননা আমরা সকলে সেই খ্রিষ্টেই ছিলাম যিনি আমাদের জন্য ও আমাদের হয়ে মরলেন বটে, কিন্তু পুনরুত্থানও করলেন। একবার যখন পাপ বিনষ্ট হল, তখন আর কোন্‌ বাধাই বা থাকতে পারবে যাতে পাপের ফল সেই মৃত্যুও বিনষ্ট হয়? শিকড় একবার শুকিয়ে গেলে কি করেই বা অঙ্কুরটা বাঁচতে পারবে? পাপ মৃত হলে আমাদের জন্য মৃত্যুর আর কোন্‌ কারণ থেকে যেতে পারবে? আসলে আমরা ঈশ্বরের মেষশাবকের মৃত্যুকে উদ্দেশ করে গম্ভীর আনন্দের সঙ্গে বলে উঠি, ওহে মৃত্যু, তোমার বিজয় কোথায়? কোথায়, মৃত্যু, তোমার হুল? (১ করি ১৫:৫৫)। আর সামসঙ্গীতের রচয়িতা বলেন, তা দেখে ন্যায়নিষ্ঠ সকলে আনন্দিত হয়ে ওঠে, ও যত দুর্জন বন্ধ করে তার আপন মুখ (সাম ১০৭:৪২), এমনকি যারা দুর্বলতাবশত পাপ করে, সেই দুর্জন তাদের আর অভিযুক্ত করতে পারবে না, কারণ ঈশ্বর মানুষকে ধর্মময় করে তোলেন: মূল্য দিয়ে বিধানের অভিশাপ থেকে আমাদের মুক্ত করেছেন, কারণ তিনি আমাদের জন্য অভিশাপস্বরূপ হলেন (গা ৩:১৩), আমরা যেন পাপের অভিশাপ থেকে রেহাই পেতে পারি।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ২৩
ধুয়ো:
আমার সম্মুখে তুমি সাজাও ভোজনপাট;
কেমন গৌরবময় সেই পানপাত্র, যা আমার তৃষ্ণা মেটায়।

প্রভু আমার পালক;
অভাব নেই তো আমার;
আমায় তিনি শুইয়ে রাখেন নবীন ঘাসের চারণমাঠে,
আমায় নিয়ে যান শান্ত জলের কূলে;   [ধুয়ো]

তিনি সঞ্জীবিত করেন আমার প্রাণ,
তাঁর নামের খাতিরে আমায় চালনা করেন ধর্মপথে।
মৃত্যু-ছায়ার উপত্যকাও যদি পেরিয়ে যাই,
আমি কোন অনিষ্টের ভয় করি না, তুমি যে আমার সঙ্গে আছ।   [ধুয়ো]

তোমার যষ্টি, তোমার পাচনি আমাকে সান্ত্বনা দেয়।
আমার সম্মুখে তুমি সাজাও ভোজনপাট আমার শত্রুদের সামনে;
আমার মাথা তুমি তৈলসিক্ত কর;
আমার পানপাত্র উচ্ছলিত।   [ধুয়ো]

মঙ্গল ও কৃপাই হবে আমার সহচর
আমার জীবনের সমস্ত দিন ধরে,
আমি প্রভুর গৃহে ফিরব—চিরদিনের মত!
ত্রিত্বের গৌরব হোক চিরকালের মত। আমেন।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, তোমার ভালবাসার আত্মাকে আমাদের অন্তরে সঞ্চার কর:
স্বর্গীয় রুটি দানে যাদের পরিতৃপ্ত করেছ,
তাদের একমন একপ্রাণ করে তোল।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]    


৩য় রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর,
তোমার মঙ্গল-ইচ্ছার পথে আমাদের পদক্ষেপ চালিত কর,
আমরা যেন তোমার প্রিয় পুত্রের নামে শুভকর্ম সাধনে ফলশালী হতে পারি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
নবী ইশাইয়ার পুস্তক থেকে পাঠ (৮:২৩খ–৯:৩)
পুরাকালে জাবুলোন দেশ ও নেফ্তালি দেশ প্রভু দুর্নামে আচ্ছন্ন করেছিলেন,
কিন্তু ভাবীকালে সমুদ্রপথ, যর্দনের ওপারের
বিজাতীয়দের সেই প্রদেশ তিনি গৌরবান্বিত করবেন।
যে জাতি অন্ধকারে পথ চলত, তারা মহান এক আলো দেখতে পেল;
যারা মৃত্যু-ছায়ার দেশে বসে ছিল, তাদের উপর আলো জ্বলে উঠল।
তুমি বাড়িয়েছ পুলক, আনন্দ করেছ মহান,
তোমার সম্মুখে তারা আনন্দ করে,
যেইভাবে শস্য কেটে লোকে আনন্দ করে,
যেইভাবে লুটের মাল ভাগ ক’রে লোকে পুলকিত হয়।
কারণ সেই যে জোয়াল তাদের উপর চেপে ছিল,
তাদের কাঁধে সেই বাঁক, তাদের অত্যাচারীর সেই দণ্ড
তুমি ভেঙে ফেলেছ মিদিয়ানের সেদিনের মত।
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ২৭
ধুয়ো:
প্রভুই আমার আলো,
আমার পরিত্রাণ।

প্রভুই আমার আলো, আমার পরিত্রাণ,
কাকে ভয় করব আমি?
প্রভুই আমার জীবনের আশ্রয়দুর্গ,
কার্‌ ভয়ে কম্পিত হব আমি?   [ধুয়ো]

প্রভুর কাছে আমার শুধু এই যাচনা—এইটুকু মাত্র অন্বেষণ করি—
আমি প্রভুর গৃহে বাস করতে চাই আমার জীবনের সমস্ত দিন,
প্রভুর কান্তির উপর যেন দৃষ্টি রাখতে পারি,
তাঁর মন্দির দর্শনে যেন মুগ্ধ হতে পারি।   [ধুয়ো]

আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে—
প্রভুর মঙ্গলময়তা দেখবই আমি জীবিতের দেশে।
প্রভুর প্রতীক্ষায় থাক, শক্ত হও,
তোমার অন্তর দৃঢ় হোক, প্রভুর প্রতীক্ষায় থাক।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (১:১০-১৩,১৭)

ভাই, আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের নামের দোহাই আমি তোমাদের অনুরোধ করছি: তোমরা সকলে একই কথা বল, তোমাদের মধ্যে যেন কোন বিভেদ না থাকে, বরং এক মনোভাবে ও এক বিচারে সম্পূর্ণরূপে এক হও।
কেননা, হে আমার ভাইয়েরা, আমি খ্লয়ের লোকজনদের কাছ থেকে তোমাদের বিষয়ে একথা জানতে পেরেছি যে, তোমাদের মধ্যে নাকি যথেষ্ট বিবাদ দেখা দিচ্ছে। আমি যে ব্যাপার ইঙ্গিত করে কথা বলছি, তা হল এ: তোমরা নাকি এক একজন বলে থাক, আমি পলের, আমি কিন্তু আপল্লোসের, আমি আবার কেফাসের, আর আমি খ্রিষ্টের।
খ্রিষ্টকে বিভক্ত করা হয়েছে নাকি? পলকে কি তোমাদের জন্য ক্রুশে দেওয়া হয়েছে? পলের নামের উদ্দেশেই কি তোমরা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছ?
কারণ খ্রিষ্ট বাপ্তিস্ম দিতে নয়, সুসমাচার প্রচার করতেই আমাকে প্রেরণ করেছেন; তাও এমন প্রজ্ঞার ভাষায় নয়, যা খ্রিষ্টের ক্রুশ ব্যর্থ করতে পারে।
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
যিশু রাজ্যের শুভসংবাদ প্রচার করতেন,
ও জনগণের মধ্যে সব ধরনের রোগ-ব্যাধি নিরাময় করতেন।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৪:১২-২৩)

যোহনকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে শুনে যিশু গালিলেয়ায় সরে গেলেন, এবং নাজারা ছেড়ে সমুদ্রতীরে, জাবুলোন-নেফ্তালির অঞ্চলে অবস্থিত কাফার্নাউমে বাস করতে গেলেন, যেন নবী ইশাইয়ার মধ্য দিয়ে উচ্চারিত এই বচন পূর্ণ হয়:
জাবুলোন দেশ! নেফ্তালি দেশ!
সমুদ্রপথের, যর্দনের ওপারের বিজাতীয়দের সেই গালিলেয়া!
যে জাতি অন্ধকারে বসে ছিল, তারা মহান এক আলো দেখতে পেল;
যারা মৃত্যু-ছায়ার দেশে বসে ছিল, তাদের উপর এক আলো উদিত হল।
এসময় থেকেই যিশু প্রচার করতে শুরু করলেন; তিনি বলছিলেন: ‘মনপরিবর্তন কর, কেননা স্বর্গরাজ্য কাছে এসে গেছে।’
তিনি গালিলেয়া সাগরের তীর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পেলেন, দুই ভাই—শিমোন ওরফে পিতর ও তাঁর ভাই আন্দ্রিয়—সমুদ্রে জাল ফেলছেন, কারণ তাঁরা জেলে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার পিছনে এসো; আমি তোমাদের করে তুলব মানুষ-ধরা জেলে।’ আর তখনই তাঁরা জাল ফেলে রেখে তাঁর অনুসরণ করলেন।
আর সেখান থেকে এগিয়ে গিয়ে তিনি দেখলেন, অন্য দুই ভাই—জেবেদের ছেলে যাকোব ও তাঁর ভাই যোহন—নিজেদের পিতা জেবেদের সঙ্গে নৌকায় নিজেদের জাল সারাচ্ছিলেন; তিনি তাঁদের ডাকলেন; আর তখনই তাঁরা নৌকা ও নিজেদের পিতাকে ফেলে রেখে তাঁর অনুসরণ করলেন।
তিনি সারা গালিলেয়া জুড়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন: তাদের সমাজগৃহে উপদেশ দিতেন, রাজ্যের শুভসংবাদ প্রচার করতেন, ও জনগণের মধ্যে সব ধরনের রোগ ও সব ধরনের ব্যাধি নিরাময় করতেন।
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
আর্লের বিশপ সাধু কায়েসারিউসের উপদেশ

প্রিয় ভ্রাতৃগণ, সুসমাচার পাঠে আমরা একথা শুনেছি: মনপরিবর্তন কর, কেননা স্বর্গরাজ্য কাছে এসে গেছে (মথি ৩:২)। স্বর্গরাজ্য হলেন সেই খ্রিষ্ট, যিনি—সকলেরই জানা কথা—ভাল-মন্দ সকল মানুষকে চেনেন ও সমস্ত ব্যাপার বিচার করেন।
সুতরাং এসো, ঐশবিচার ঘটবার আগে পাপ স্বীকার করি, ও ঐশরায়ের আগে সমস্ত ভুলত্রুটি থেকে আত্মাকে শুচিশুদ্ধ করে তুলি। পাপের সংস্কার করার জন্য যথাসাধ্য যত্নবান না হওয়া মহা ঝুঁকি! তাছাড়া আমরা যখন বুঝি, আমাদের অপরাধের গুপ্ত উদ্দেশ্যেরই বিশেষভাবে হিসাব দিতে হবে, তখন আমাদের প্রায়শ্চিত্ত করা প্রয়োজন।
প্রিয়জনেরা, যখন ঈশ্বর চান আমরা বিচারের আগেই আমাদের অপরাধের সংস্কার করি, তখন স্বীকার কর, আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা সত্যিই মহান! এজন্যই তো কঠোরতা অনুশীলন করার আগে ন্যায়বিচার সবসময় একটা চেতনা-বাণী শোনায়; প্রিয়জনেরা, এজন্যই তো আমাদের ঈশ্বর আমাদের কাছে অশ্রুনদী দাবি করেন, যাতে অবহেলা করে যা কিছু হারিয়ে ফেলেছি, প্রায়শ্চিত্ত করেই তার সংস্কার করতে পারি। ঈশ্বর তো জানেন, মানুষ সবসময় সৎকর্ম সাধনে নিষ্ঠাবান নয়: মানুষ কাজ করার সময়ে প্রায়ই পাপ করে, ও কথা বলার সময়ে ভুল করে; এজন্য তিনি আমাদের কাছে প্রায়শ্চিত্ত-পথ শিখিয়েছেন, যাতে ধ্বংসিত সবকিছু পুনর্নির্মাণ করতে পারি ও ভুলভ্রান্তির সংস্কার করতে পারি। এজন্য ক্ষমালাভে নিশ্চিত হতে গিয়ে মানুষকে সবসময় নিজ অপরাধের জন্য হাহাকার করতে হবে। তথাপি, মানবদশা বহু ক্ষতের জন্য এত পীড়িত হলেও, তবু কেউই যেন নিরাশ না হয়, কেননা প্রভু মঙ্গলদানে এতই উদার যে, যাদের প্রয়োজন রয়েছে তিনি সেই সকলের কাছে আপন দয়ার দানগুলি বিতরণ করতে প্রীত।
তবু কেউ কেউ হয় তো বলবে, আমি তো খারাপ কিছুই করি না, তাহলে ভয় করব কেন? আচ্ছা, এবিষয়ে প্রেরিতদূত যোহনের বাণী শোন, আমরা যদি বলি আমাদের পাপ নেই, তাহলে আমরা নিজেদেরই প্রতারণা করি এবং আমাদের অন্তরে সত্য নেই (১ যোহন ১:৮)। অতএব প্রিয়জনেরা, কেউই যেন তোমাদের প্রবঞ্চিত না করে: নিজেদের পাপ না দেখা, এই তো সবচেয়ে গুরুতর পাপ। নিজের অপরাধ যে স্বীকার করে, সে প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে পুনর্মিলিত হতে পারে; অপরদিকে যে মনে করে, অনুতপ্ত হওয়ার মত তার কিছু নেই, তেমন পাপীর চেয়ে শোচনীয় অবস্থা আর কারও নেই। এজন্য আমি শাস্ত্রের বাণী শুনিয়ে তোমাদের আবেদন জানাচ্ছি: ঈশ্বরের পরাক্রান্ত বাহুর অধীনে নিজেদের নমিত রাখ (১ পি ৫:৬)। আর যেহেতু নিষ্পাপ বলতে কেউই নেই, সেজন্য প্রায়শ্চিত্ত করে না এমন কেউই যেন না থাকে: কেউ যদি মনে করে সে নিরপরাধী, ঠিক এ কারণেই সে অপরাধী। কেউ কেউ রয়েছে যার দোষত্রুটি লঘুভার, একথা স্বীকার্য; কিন্তু কখনও পাপ করবে না এমন কেউই নেই; এ দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বটে, তবু অপরাধশূন্য বলতে কেউই নেই। অতএব, হে প্রিয়জনেরা, যে কেউ গুরুতর অপরাধে ঈশ্বরকে অপমান করেছে, সে যেন মহত্তর ভরসার সঙ্গে ক্ষমা যাচনা করে; আর এমন কেউ যদি থাকে যে তত গুরুতর অপরাধে নিজেকে কলুষিত করেনি, সে প্রার্থনা করুক যেন আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টেরই অনুগ্রহে পতন থেকে রেহাই পেতে পারে, যিনি পিতা ও পবিত্র আত্মার সঙ্গে বিশ্বরাজ ও জীবনেশ্বর রূপে যুগে যুগে বিরাজমান। আমেন।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ৩৪
ধুয়ো:
প্রভুর দিকে চেয়ে দেখ, তোমরা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,
লজ্জায় ঢেকে যাবে না কো তোমাদের মুখ।

আমার সঙ্গে প্রভুর মহিমাকীর্তন কর,
এসো, আমরা একসঙ্গে তাঁর নাম বন্দনা করি।
প্রভুর অন্বেষণ করেছি, তিনি আমাকে সাড়া দিলেন,
যত ভয়-শঙ্কা থেকে আমাকে উদ্ধার করলেন।   [ধুয়ো]

তাঁর দিকে চেয়ে দেখ, তোমরা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,
লজ্জায় ঢেকে যাবে না কো তোমাদের মুখ।
এই দীনহীন ডাকে, প্রভু শোনেন,
তার সকল সঙ্কট থেকে তাকে পরিত্রাণ করেন।   [ধুয়ো]

প্রভুর দূত প্রভুভীরুদের চারপাশে শিবির বসান,
তাদের নিস্তার করেন।
আস্বাদন কর, দেখ প্রভু কত মঙ্গলময়,
সুখী সেই মানুষ, যে তাঁর আশ্রিতজন।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আশীর্বাদ কর:
তোমার জীবনদায়ী অনুগ্রহে সঞ্জীবিত হয়ে উঠে
আমরা যেন অনুক্ষণ তোমার সহায়তা লাভে ধন্য হতে পারি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]    


৪র্থ রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, আমাদের পরমেশ্বর, আশীর্বাদ কর,
আমরা যেন সমস্ত মন দিয়ে তোমাকে ভক্তি করতে পারি,
সকল মানুষকেও সত্যকার প্রেমে ভালবাসতে পারি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
নবী জেফানিয়ার পুস্তক থেকে পাঠ (২:৩; ৩:১২-১৩)

প্রভুর অন্বেষণ কর, হে পৃথিবীর সকল বিনম্র মানুষ,
যারা তাঁর আদেশগুলি পালন করে থাক।
ধর্মময়তার অন্বেষণ কর, বিনম্রতার অন্বেষণ কর,
তবেই প্রভুর ক্রোধের দিনে হয় তো আশ্রয় পেতে পারবে।
তোমার মধ্যে আমি বিনম্র ও দীনহীন এক জাতিকে অবশিষ্ট রাখব,
ইস্রায়েলের এ অবশিষ্ট অংশ প্রভুর নামেই আশ্রয় নেবে।
তারা অপকর্ম করবে না, বলবে না মিথ্যা কথা,
তাদের মুখে খুঁজে পাওয়া যাবে না প্রতারক জিহ্বা।
তারা চরে বেড়াবে, তারা বিশ্রাম করবে,
তাদের ভয় দেখাবে এমন কেউ থাকবে না।
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ১৪৬
ধুয়ো:
আত্মায় দীনহীন যারা, তারাই সুখী,
কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।

প্রভু বিশ্বস্ততা বজায় রাখেন চিরকাল ধরে,
অত্যাচারিতের পক্ষে সুবিচার করেন,
ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করেন,
প্রভু কারারুদ্ধকে মুক্ত করেন।   [ধুয়ো]

প্রভু খুলে দেন অন্ধের চোখ,
প্রভু অবনতকে টেনে তোলেন,
প্রভু ধার্মিককে ভালবাসেন,
প্রভু প্রবাসীকে রক্ষা করেন।   [ধুয়ো]

তিনি এতিম ও বিধবাকে সুস্থির রাখেন,
কিন্তু বাঁকা করেন দুর্জনের পথ।
প্রভু রাজত্ব করেন চিরকাল ধরে,
হে সিয়োন, তোমার পরমেশ্বর রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (১:২৬-৩১)

ভাই, একটু বিচার-বিবেচনা কর, তোমরা নিজেরা কেমন ভাবে আহূত হয়েছ: আসলে—জাগতিক বিচার অনুসারে—তোমাদের মধ্যে প্রজ্ঞাবান বলতে বেশি কেউ নেই, ক্ষমতাশালী বলতে বেশি কেউ নেই, সম্ভ্রান্ত বংশীয় বলতে বেশি কেউ নেই; কিন্তু জগতের যা মূর্খ, ঈশ্বর তা-ই বেছে নিয়েছেন প্রজ্ঞাবানদের লজ্জা দেবার জন্য; এবং জগতের যা দুর্বল, ঈশ্বর তা-ই বেছে নিয়েছেন, যা শক্তিশালী, তা লজ্জা দেবার জন্য; এবং জগতের যা হীন, অবজ্ঞাত, যার কোন অস্তিত্ব নেই, ঈশ্বর তা-ই বেছে নিয়েছেন, যার অস্তিত্ব আছে, তা নস্যাৎ করে দেবার জন্য, যেন কোন মর্তমানুষ ঈশ্বরের সামনে গর্ববোধ করতে না পারে।
তাঁরই জন্যে তোমাদের সেই খ্রিষ্টযিশুতে একটা অস্তিত্ব আছে, যিনি আমাদের জন্য হয়ে উঠেছেন ঈশ্বর থেকে আগত প্রজ্ঞা—অর্থাৎ ধর্মময়তা, পবিত্রতা ও মুক্তি; যেমনটি লেখা আছে: যে কেউ গর্ব করতে চায়, সে প্রভুতেই গর্ব করুক।
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আনন্দ কর, উল্লাস কর!
স্বর্গে তোমাদের মজুরি প্রচুর।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৫:১-১২ক)

একদিন যিশু লোকের ভিড় দেখে পর্বতে গিয়ে উঠলেন, এবং তিনি আসন নেবার পর তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এগিয়ে এলেন।
তখন তিনি কথা বলতে শুরু করে তাঁদের এই উপদেশ দিতে লাগলেন:
‘আত্মায় দীনহীন যারা, তারাই সুখী, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।
শোকার্ত যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই সান্ত্বনা পাবে।
কোমলপ্রাণ যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই পাবে দেশের উত্তরাধিকার।
ধর্মময়তার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত যারা, তারাই সুখী,
কারণ তারাই পরিতৃপ্ত হবে।
দয়াবান যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই দয়া পাবে।
শুদ্ধহৃদয় যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই ঈশ্বরকে দেখতে পাবে।
শান্তির সাধক যারা, তারাই সুখী,
কারণ তারাই ঈশ্বরের সন্তান বলে অভিহিত হবে।
ধর্মময়তার জন্য নির্যাতিত যারা, তারাই সুখী, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।
তোমরাই সুখী, লোকে যখন আমার জন্য তোমাদের নিন্দা ও নির্যাতন করে, এবং তোমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যামিথ্যি সব ধরনের জঘন্য কথা বলে। আনন্দ কর, উল্লাস কর, কেননা স্বর্গে তোমাদের মজুরি প্রচুর।’
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
মথি-রচিত সুসমাচারে বিশপ সাধু হিলারির ব্যাখ্যা

যিশুর চারপাশে লোকের মহা ভিড়; তিনি তখন পর্বতে উঠে উপদেশ দেন: অর্থাৎ কিনা তিনি পিতার মাহাত্ম্যের একই উচ্চ পর্যায়ে দাঁড়িয়েই স্বর্গীয় জীবনের বিধান ঘোষণা করেন। নিজে অনন্তকালের অধিকারী না হলে তিনি অনন্ত জীবনের উপদেশ দিতে পারতেন না। তিনি মুখ খুলে উপদেশ দিতে লাগলেন (মথি ৫:২ ভুলগাতা দ্রঃ)। অবশ্য আরও সংক্ষিপ্ত ভাবে বলা যেতে পারত, ‘তিনি কথা বললেন।’ কিন্তু তিনি পিতৃমাহাত্ম্যের গৌরবে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন ও অনন্ত জীবনের কথা (যোহন ৬:৬৮) উচ্চারণ করছিলেন বিধায় সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, তাঁর মানবীয় কণ্ঠ বাণী উচ্চারণকারী আত্মার প্রেরণায় বাধ্য।
আত্মায় দীনহীন যারা, তারাই সুখী, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই (মথি ৫:৩)। প্রভু আপন আদর্শ দানে তখনই শিখিয়েছিলেন যে মানব প্রশংসাজনিত গৌরবের অন্বেষণ করতে নেই, যখন শয়তানকে উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই প্রণাম করবে; কেবল তাঁকেই উপাসনা করবে (মথি ৪:১০)। আর যেহেতু নবীদের মধ্য দিয়ে তিনি একসময় ঘোষণা করেছিলেন, তিনি এমন নম্রচিত্ত জনগণকেই মনোনীত করবেন যারা তাঁর বাণী ভয় করবে (ইশা ৬৬:২ দ্রঃ), সেজন্য তিনি এখন সিদ্ধ সুখের সূচনা আত্মার বিনম্রতায় স্থাপন করলেন।
একারণে আমাদের অতি সাধারণ বিষয়েরই আকাঙ্ক্ষী হতে হবে একথা মনে রেখে যে, আমরা মানুষমাত্র; এ বিষয়েও সচেতন হতে হবে যে, স্বর্গরাজ্যই আমাদের লক্ষ্য হলেও তবু পূর্ণগঠিত হবার আগে এ দেহ কতই না হীনদশার অধিকারী ছিল। শ্রবণ, দর্শন, বিচার, কার্যকারিতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমরা যতই উন্নতিশীল হই না কেন, এর কারণ এ, ঈশ্বরই আমাদের শক্তি দেন।
কেউই যেন কোন কিছু নিজস্ব বা সম্পূর্ণরূপে নিজেরই বলে না মনে করে; কারণ মানব অস্তিত্বের সূচনা থেকে তার শেষ পর্যায় পর্যন্ত আমরা যা উপভোগ করি না কেন, সবকিছু একই পিতার দান বলেই আমাদের মঞ্জুর করা হয়। সুতরাং সেই উত্তম পিতার আদর্শে যিনি আমাদের সবকিছু দান করেছেন, আমাদেরও আমাদের প্রতি দেখানো তাঁর সেই মঙ্গলকারিতার অনুকারী হতে হবে: সকলের প্রতি মঙ্গলকামী হব, সবকিছু সকলেরই অধিকার বলে গণ্য করব, সংসারের অস্থায়ী আড়ম্বর, ঐশ্বর্যের কামনা বা অসার আত্মপ্রশংসা দ্বারা নিজেদের কলুষিত হতে দেব না, বরং ঈশ্বরের অধীন হয়ে থাকব। এসো, আমরা সকলে যেন ঐক্যবদ্ধ জীবনের আসক্তি দ্বারা জীবন-সহভাগিতায় নিজেদের একত্রিত হতে দিই; যিনি আমাদের মানব অস্তিত্বে আহ্বান করলেন, সেই পরম মঙ্গলময় শাশ্বতকালের জন্য যে দানের প্রতিশ্রুতি দেন, এসো, সেই দান মূল্যবান মনে করি—সেই দান এমন, যার পুরস্কার ও যোগ্যতা বর্তমান জীবনের সৎকর্মের মধ্য দিয়েই পাবার কথা।
এভাবে আত্মার এ বিনম্রতা গুণে আমরা ঈশ্বরের কথা অনুক্ষণ মনে রাখি, যা যা পাচ্ছি ও যা যা পাবার আশা করছি তা তাঁর দান বলে গণ্য করি—তবেই স্বর্গরাজ্য আমাদেরই হবে।
ধর্মময়তার জন্য নির্যাতিত যারা, তারাই সুখী (মথি ৫:১০)। স্বয়ং খ্রিষ্টই ধর্মময়তা বিধায় সুখ-বাণীর তালিকা শেষে তারাই সুখী তথা পূর্ণ পুরস্কারেরই অধিকারী বলে ঘোষিত, যাদের প্রাণ তাঁর খাতিরে সবকিছু সহ্য করতে আকাঙ্ক্ষিত। সংসার তুচ্ছ করল আত্মায় তেমন দীনহীনদের কাছে, বিভিন্ন দুর্দশার জন্য বা জাগতিক সম্পদ হারাল তেমন অবহেলিতদের কাছে, মানুষের হিংসা সত্ত্বেও ঐশন্যায্যতায় বিশ্বাস করল তেমন ভক্তদের কাছে, সনাতন ঈশ্বরের জন্য নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিলেন ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির তেমন গৌরবময় সাক্ষ্যমরদের কাছেই স্বর্গীয় এক মহাপুরস্কার প্রতিশ্রুত, তাঁদের জন্যই ঐশরাজ্য সংরক্ষিত।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ৩১
ধুয়ো:
তোমার দাসের উপর শ্রীমুখ উজ্জ্বল করে তোল,
তোমার কৃপায় ত্রাণ কর আমায়।

কতই না মহান তোমার সেই মঙ্গলময়তা, প্রভু,
যা তাদের জন্য তুমি সঞ্চিত রাখ যারা ভয় করে তোমায়,
যা আদমসন্তানদের দৃষ্টিগোচরে
তুমি তোমার আশ্রিতজনকে মঞ্জুর কর।   [ধুয়ো]

মানুষের চক্রান্ত থেকে তুমি আপন শ্রীমুখের নিভৃতে তাদের লুকিয়ে রাখ,
জিভের আক্রমণ থেকে তুমি আপন কুটিরেই তাদের নিরাপদে রাখ।
ধন্য প্রভু! সুরক্ষিত নগরে আমার জন্য
তিনি সাধন করলেন তাঁর কৃপার আশ্চর্য কীর্তি।   [ধুয়ো]

প্রভুকে ভালবাস, তাঁর ভক্তজন সবাই, প্রভু আপন বিশ্বস্তদের রক্ষা করেন,
কিন্তু অহঙ্কারীর উপর অপর্যাপ্ত প্রতিফল দেন।
শক্ত হও, অন্তর দৃঢ় করে তোল তোমরা,
তোমরা সকলে, যারা প্রভুর প্রত্যাশায় আছ।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, এ মুক্তিপ্রদ অন্নে পরিপুষ্ট হয়ে উঠে আমরা অনুনয় করি:
এই সাক্রামেন্ত যেমন শাশ্বত পরিত্রাণ লাভের জন্য সহায়তা দান করে,
তেমনি যেন আমাদের বিশ্বাস দৃঢ়তর করে তোলে।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]    


৫ম রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, অনুনয় করি: যারা কেবল তোমার দিব্য অনুগ্রহের উপর নির্ভরশীল,
তোমার সেই পরিবার-মণ্ডলীকে তুমি তোমার অবিরত পিতৃস্নেহে প্রতিপালন কর, তারা যেন তোমার নিত্য সহায়তা লাভে রক্ষা পেতে পারে।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
নবী ইশাইয়ার পুস্তক থেকে পাঠ (৫৮:৭-১০)

প্রভু একথা বলছেন:
ক্ষুধিতের সঙ্গে তোমার খাবার ভাগ করে নেওয়া,
গৃহহীন দীনহীনকে আশ্রয় দেওয়া,
উলঙ্গকে দেখলে তাকে বস্ত্র পরিয়ে দেওয়া,
তোমার আপন জাতির মানুষের প্রতি বিমুখ না হওয়া
—এ কি আমার সন্তোষজনক উপবাস নয়?
তবেই তোমার আলো উষার মত উজ্জ্বল প্রকাশ পাবে,
তোমার ক্ষত শীঘ্রই সেরে উঠবে!
তোমার আগে আগে ধর্মময়তা চলবে,
আর প্রভুর গৌরব তোমার পিছু পিছু চলবে।
তখন তুমি ডাকবে আর প্রভু সাড়া দেবেন;
তুমি চিৎকার করবে আর তিনি বলবেন: ‘এই যে আমি!’
তোমার মধ্য থেকে যদি জোয়াল, অঙুলিতর্জন ও শঠতাপূর্ণ কথন দূর করে দাও,
যদি ক্ষুধিতের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দাও,
যদি দুঃখীর অভাব মিটিয়ে দাও,
তবে অন্ধকারের মধ্যে তোমার আলো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,
তোমার তমসা মধ্যাহ্নের মত হবে।
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ১১২
ধুয়ো:
ধার্মিক মানুষ
যেন অন্ধকারে আলোর উদ্ভাস।

ন্যায়নিষ্ঠদের জন্য সে যেন অন্ধকারে আলোর উদ্ভাস,
সে দয়াবান, স্নেহশীল, ধর্মময়।
যে দয়া করে, যে করে ঋণদান, তার মঙ্গল হয়,
সে ন্যায়ের সঙ্গে কাজ সম্পাদন করে।   [ধুয়ো]

সে কখনও টলবে না,
ধার্মিকজন স্মরণীয় থাকবে চিরকাল।
সে ভয় করে না কোন অশুভ সংবাদ,
তার অন্তর সুস্থির, প্রভুতেই নির্ভরশীল।   [ধুয়ো]

তার অন্তর সুদৃঢ়, সে ভীত নয়,
নিঃস্বকে সে মুক্তহস্তে দান করে,
তার ধর্মময়তা চিরস্থায়ী,
তার শক্তি গৌরবে উত্তোলিত।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (২:১-৫)

ভাই, আমি যখন তোমাদের কাছে এসেছিলাম, তখন এসে ভাষা বা প্রজ্ঞার উৎকৃষ্টতা অনুসারেই যে তোমাদের কাছে ঈশ্বরের রহস্য জানিয়েছি, তা নয়; কেননা আমি মনে স্থির করেছিলাম, তোমাদের মধ্যে আমি যিশুখ্রিষ্টকে ছাড়া, ক্রুশবিদ্ধই যিশুখ্রিষ্টকে ছাড়া আর অন্য কিছু চিনব না।
আমি দুর্বলতায়, ভয়ে ও কম্পিত অন্তরেই তোমাদের কাছে এসেছিলাম, আর আমার বাণী ও আমার প্রচার প্রজ্ঞার চিত্তগ্রাহী ভাষার উপর নির্ভর করছিল না, বরং আত্মাকে ও তাঁর পরাক্রম প্রকাশ করাই ছিল আমার উদ্দেশ্য, যেন তোমাদের বিশ্বাস মানবীয় প্রজ্ঞার উপরে নয়, ঈশ্বরের পরাক্রমের উপরেই নির্ভর করে।
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমিই জগতের আলো—একথা বলছেন প্রভু;
যে আমার অনুসরণ করে, সে অন্ধকারে চলবে না।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৫:১৩-১৬)

একদিন যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন, ‘তোমরা পৃথিবীর লবণ, কিন্তু লবণ নিঃস্বাদ হয়ে গেলে, তবে কী করেই বা তা আবার নোনতা করা যাবে? তা আর কোন কাজে লাগে না; তা শুধু বাইরে ফেলে দেওয়া হবে যেন লোকে তা পায়ে মাড়িয়ে দেয়।
তোমরা জগতের আলো; পর্বতের উপরে অবস্থিত কোন নগর গুপ্ত থাকতে পারে না। আর লোকে প্রদীপ জ্বালিয়ে তা ধামার নিচে রাখে না, দীপাধারের উপরেই রাখে; তবে ঘরের সকলের জন্য তা আলো দেবে।
তেমনি তোমাদের আলো মানুষের সামনে উজ্জ্বল হোক, যেন তারা তোমাদের সৎকর্ম দেখে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার গৌরবকীর্তন করে।’
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
নূতন নিয়মের কতিপয় স্থানে বিশপ সাধু জন খ্রিসোস্তমের উপদেশ

আমার কতই না দুঃখ লাগে, যখন স্মরণ করি যে, পর্বদিনগুলিতে আমাদের সমাবেশ সমুদ্রের পরিব্যাপ্ত উদারতার মতই পরিব্যাপ্ত ছিল, এখন কিন্তু সেই মহাভিড়ের ক্ষুদ্রতম একটা অংশও এখানে সম্মিলিত দেখা যেতে পারে না! মহাপর্বে যারা আমার দুঃখের কারণ, তারা এখন কোথায়? তাদের দেখবার বাসনাই করি, তাদের কারণে আমি দুশ্চিন্তায় আছি যখন ভাবি যে পরিত্রাণকৃতদের অনেকেই বিনাশের দিকে যাচ্ছে। হায় রে, কতজনের পতনই না সহ্য করতে হচ্ছে, কতই না ছোট হয়ে যাচ্ছে তাদের সংখ্যা, যারা পরিত্রাণ পেতে যাচ্ছে; ফলে মণ্ডলীর দেহের অধিকাংশ মরা ও নিস্তেজ দেহের মত প্রতীয়মান হতে যাচ্ছে।
হয় তো কেউ বলবে, এ নিয়ে আমাদের কী? এ কিন্তু তোমাদের খুবই বড় বিবেচনার ব্যাপার, কারণ তোমরা তাদের কোন যত্ন কর না, তাদের চেতনা দাও না, তোমাদের পরামর্শদানে তাদের সাহায্য কর না, তাদের আকর্ষণ করতে ও আসতে বাধ্য করতে পার না, বড় শিথিলতার সঙ্গেই তাদের ভর্ৎসনা কর! কেননা খ্রিষ্ট যখন আমাদের লবণ ও আলো বললেন, তখন দেখাতে চাইলেন, নিজেদের শুধু নয়, অনেকেরই উপকর্তা হতে হবে। সেই জিনিস দু’টো প্রকৃতপক্ষে পরের উপকারিতার জন্য: প্রদীপ তো নিজের জন্য নয়, যারা অন্ধকারে বসে আছে তাদেরই জন্য জ্বলে। আর তুমি যেন একাই আলো উপভোগ কর, এজন্য নয়, বরং যারা পথহারা তাদের ফিরিয়ে আনবার জন্যই তুমি প্রদীপ। যারা অন্ধকারে বসে রয়েছে, তাদের আলো দেবার জন্য ছাড়া প্রদীপের উপকারিতা কী? আর কাউকেই সৎপথে না ফিরিয়ে আনলে তবে খ্রিষ্টিয়ান হওয়ার উপকারিতা কী? একই প্রকারে লবণ কেবল নিজেকে বিশুদ্ধ করে না, বরং দেহের কলুষ রোধ করে ও এমনটি ঘটায় যেন নিঃশেষিত হলে দেহ বিনষ্ট না হয়। তেমনি তুমিও: যখন ঈশ্বর তোমাকে আত্মিক লবণ করেছেন, তখন কলুষিত অঙ্গগুলি তথা শিথিল ভাইদের সংগ্রহ করে একত্রিত কর; তাদেরও একত্রিত কর যারা হাতের কাজে সদাই ব্যস্ত, তারা যেন কলুষিত ঘায়ের মত সেই শিথিলতা থেকে মুক্ত হয়ে আবার মণ্ডলীর দেহের অংশ হতে পারে। এজন্যই তো তিনি তোমাকে খামিরও বললেন: ক্ষুদ্র হয়েও খামির নিজেকে শুধু নয়, সমস্ত ময়দার পিণ্ডও গাঁজিয়ে তোলে—সেই পিণ্ড যতই বড় ও সীমাহীন হোক না কেন। তেমনি তোমরাও: সংখ্যার দিক দিয়ে স্বল্পজন হয়েও তোমরা বিশ্বাস ও ঐশউপাসনার আসক্তির দিক দিয়ে বহুসংখ্যক ও শক্তিশালী হও! কেননা খামির যেমন নিজ ক্ষুদ্রতার কারণে নিস্তেজ নয়, কিন্তু নিজ স্বরূপে নিহিত উত্তাপ ও নিজ বৈশিষ্ট্যের জোরেই ময়দার সমস্ত পিণ্ডের উপর প্রভাব বিস্তার করে, তেমনি তোমরাও ইচ্ছা করলে বহুসংখ্যক ভাইদের একই উদ্দীপনা ও একই ভক্তিতে ফিরিয়ে আনতে পার।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ১০৭
ধুয়ো:
তারা প্রভুকে ধন্যবাদ দিক তাঁর কৃপার জন্য,
তিনি যে পরিতৃপ্ত করলেন তৃষাতুরের প্রাণ,

প্রভুকে ধন্যবাদ জানাও, তিনি যে মঙ্গলময়,
তাঁর কৃপা যে চিরস্থায়ী।
একথা তারাই বলুক,
প্রভু যাদের মুক্তিকর্ম সাধন করলেন,   [ধুয়ো]

তারা ঘুরছিল প্রান্তরে, মরুদেশে,
পাচ্ছিল না বাস করার মত কোন নগরের পথ;
তারা ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত ছিল,
মূর্ছা যাচ্ছিল তাদের প্রাণ।   [ধুয়ো]

সেই সঙ্কটে তারা প্রভুকে চিৎকার করে ডাকল,
সমস্ত ক্লেশ থেকে তিনি তাদের উদ্ধার করলেন:
সরল পথে তাদের নিয়ে চললেন,
বাস করার মত একটি নগরে তারা যেন যেতে পারে।   [ধুয়ো]

তারা প্রভুকে ধন্যবাদ দিক তাঁর কৃপার জন্য,
আদমসন্তানদের প্রতি তাঁর আশ্চর্য কর্মকীর্তির জন্য;
তিনি যে পরিতৃপ্ত করলেন তৃষাতুরের প্রাণ,
ক্ষুধিতের প্রাণ পরিপূর্ণ করলেন মঙ্গলদানে।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের
একরুটি এক-পানপাত্রের সহভাগী করতে ইচ্ছা করেছ।
অনুনয় করি: খ্রিষ্টে এক হয়ে উঠে আমরা যেন
মনের আনন্দে জগতের পরিত্রাণের জন্য ফলশালী হতে পারি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]    


৬ষ্ঠ রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে ঈশ্বর, তুমি কথা দিয়েছ,
ন্যায়শীল সৎমানুষ যারা, তাদেরই হৃদয়ে তুমি বসবাস কর।
তোমার অনুগ্রহ গুণে আমাদের এমনভাবেই গড়ে তোল
যাতে তোমার যোগ্য বাসস্থান হয়ে উঠতে পারি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
বেন-সিরা পুস্তক থেকে পাঠ (১৫:১৫-২০)

ইচ্ছা করলে তুমি আজ্ঞাগুলি পালন করবে;
বিশ্বস্ত হওয়াই তোমার সদিচ্ছার উপরে নির্ভর করবে।
তিনি তোমার সামনে রেখেছেন আগুন ও জল;
তোমার যেদিকে ইচ্ছে, সেইদিকে হাত বাড়াও।
মানুষের সামনে রয়েছে জীবন-মরণ;
এক একজন যাতে প্রীত, তা-ই তাকে দেওয়া হবে।
কেননা প্রভুর প্রজ্ঞা মহান,
তিনি সর্বশক্তিমান, তিনি সর্বদর্শী।
প্রভুর চোখ তাদেরই প্রতি, যারা তাঁকে ভয় করে;
মানুষদের সমস্ত কর্ম তাঁর কাছে জানা।
ভক্তিহীন হতে তিনি তো কাউকে বাধ্য করেননি,
পাপ করতেও কাউকে অনুমতি দেননি।
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ১১৯
ধুয়ো:
সুখী তারা,
প্রভুর বিধানে যারা চলে।

সুখী তারা, নিখুঁত যাদের পথ,
প্রভুর বিধানে যারা চলে।
সুখী তারা, যারা তাঁর নির্দেশমালা পালন করে,
সমস্ত হৃদয় দিয়ে যারা তাঁর অন্বেষণ করে।   [ধুয়ো]

তুমি জারি করেছ তোমার আদেশমালা,
তারা যেন তা সযত্নেই মেনে চলে।
আহা! তোমার বিধিকলাপ মেনে চলায়
আমার পথসকল সুস্থির হোক।   [ধুয়ো]

তোমার এ দাসের উপকার কর,
তবে আমি বাঁচব, তোমার বাণী মেনে চলব।
খুলে দাও আমার চোখ,
আমি যেন দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখি তোমার বিধানের আশ্চর্য কর্মকীর্তির উপর।   [ধুয়ো]

আমাকে দেখাও, প্রভু, তোমার বিধিপথ,
আমি শেষ পর্যন্তই তা পালন করব।
আমাকে সুবুদ্ধি দাও—পালন করব তোমার বিধান,
সমস্ত হৃদয় দিয়ে তা মেনে চলব।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (২:৬-১০)

প্রিয়জনেরা, আমরা সিদ্ধপুরুষদের মধ্যে প্রজ্ঞার কথা বলছি বটে, তবু সেই প্রজ্ঞা এই যুগের নয়, এই যুগের শাসনকর্তাদেরও নয়: এরা তো নস্যাৎ হয়ে পড়ছে। কিন্তু আমরা এমন ঐশ্বরিক ও রহস্যময় প্রজ্ঞারই কথা বলছি যা গুপ্ত ছিল, যা ঈশ্বর আমাদের গৌরবের জন্য অনাদিকাল থেকেই নিরূপণ করেছিলেন। এ যুগের শাসনকর্তাদের মধ্যে কেউই তার কথা জানত না, কেননা যদি জানত, তবে গৌরবের প্রভুকে ক্রুশে দিত না। কিন্তু যেমন লেখা আছে, কোন চোখ যা যা দেখেনি ও কোন কান যা যা শোনেনি, কোন মানুষের মনে যা যা কখনও ভেসে ওঠেনি, যারা তাঁকে ভালবাসে, ঈশ্বর তাদেরই জন্য এসব কিছু প্রস্তুত করেছেন।
আমাদের কাছে কিন্তু ঈশ্বর আত্মা দ্বারাই সেই সবকিছু প্রকাশ করেছেন, কারণ আত্মা সবই তলিয়ে দেখেন, ঈশ্বরের গভীর সমস্ত বিষয়ও তলিয়ে দেখেন।
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
হে পিতা, হে স্বর্গমর্তের প্রভু,
আমি তোমাকে ধন্য বলি,
কারণ তুমি স্বর্গরাজ্যের রহস্যময় কথা
শিশুদেরই কাছে প্রকাশ করেছ।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৫:২০-২২ক,২৭-২৮,৩৩-৩৪ক,৩৭)

একদিন যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, শাস্ত্রী ও ফরিশীদের চেয়ে তোমাদের ধর্মিষ্ঠতা যদি গভীরতর না হয়, তবে তোমরা স্বর্গরাজ্যে কখনও প্রবেশ করবে না।
তোমরা শুনেছ, প্রাচীনকালের মানুষদের কাছে বলা হয়েছিল, তুমি নরহত্যা করবে না, আর যে নরহত্যা করে, সে বিচারাধীন হবে। কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ নিজের ভাইয়ের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়, সে বিচারাধীন হবে; আর যে কেউ নিজের ভাইকে নির্বোধ বলে, সে বিচারসভার অধীন হবে; আর যে কেউ তাকে পাষণ্ড বলে, সে অগ্নিময় জাহান্নামের অধীন হবে।
তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, তুমি ব্যভিচার করবে না। কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোন স্ত্রীলোকের দিকে লালসার চোখে তাকায়, সে ইতিমধ্যেই মনে মনে তার সঙ্গে ব্যভিচার করে ফেলেছে।
আবার তোমরা শুনেছ, প্রাচীনকালের মানুষদের কাছে বলা হয়েছিল, তুমি মিথ্যা শপথ করবে না; কিন্তু প্রভুর কাছে তোমার শপথ সকল রক্ষা কর। কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, কোন শপথও করো না। কিন্তু তোমাদের কথা এ-ই হোক: হ্যাঁ, হ্যাঁ, না, না; এর অতিরিক্ত যা, তা সেই ধূর্তজন থেকেই আগত।’
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
বিশপ সাধু আগস্তিনের উপদেশ

আমি তোমাদের বলছি: শাস্ত্রী ও ফরিশীদের চেয়ে তোমাদের ধর্মিষ্ঠতা যদি গভীরতর না হয়, তবে তোমরা স্বর্গরাজ্যে কখনও প্রবেশ করবে না (মথি ৫:২০); অর্থাৎ, মানুষের প্রাথমিক গঠনের জন্য বিধানের সেই ক্ষুদ্রতম আজ্ঞাগুলি যদি পালন না কর, এমনকি, আমি যে বিধান বাতিল করতে নয়, তা পূর্ণই করতে এসেছি, এই আমি যে নতুন আজ্ঞাগুলি দিয়েছি তোমরা সেগুলিও যদি পালন না কর, তাহলে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে না।
তুমি কিন্তু আমাকে বলবে: ‘ক্ষুদ্রতম আজ্ঞাগুলি প্রসঙ্গে তিনি যখন আগে বলেছিলেন যে, সেগুলির একটাও যে লঙ্ঘন করে ও অপরকে তাই করতে শেখায়, স্বর্গরাজ্যে সে ক্ষুদ্রতম বলে গণ্য হবে, অপরদিকে সেগুলি যে পালন করে ও অপরকে তাই করতে শেখায়, সে মহান বলে গণ্য হবে—ফলে মহান হওয়ায় সে ইতিমধ্যেই স্বর্গরাজ্যের বাসিন্দা!—তখন বিধানের ক্ষুদ্রতম আজ্ঞাগুলির সঙ্গে অন্য আজ্ঞাগুলি যোগ করা কীবা প্রয়োজন রয়েছে যদি সেগুলি যে পালন করে ও পালন করতে শেখায়, মহান হওয়ায় সে ইতিমধ্যেও স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে?’ কিন্তু যে কেউ সেগুলো পালন করে ও শিখিয়ে দেয়, তাকে স্বর্গরাজ্যে মহান বলে গণ্য করা হবে (মথি ৫:১৯) বাক্যটা আমার প্রস্তাবিত ব্যাখ্যা অনুসারেই অনুধাবন করা দরকার।
তিনি বলছেন, তোমাদের ধর্মিষ্ঠতা শাস্ত্রী ও ফরিশীদের চেয়ে গভীরতর হোক, কারণ গভীরতর না হলে তোমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে না। সুতরাং যে কেউ সেই ক্ষুদ্রতম আজ্ঞাগুলি লঙ্ঘন করে ও সেইভাবে শিখিয়ে দেয়, সে ক্ষুদ্রতম বলে গণ্য হবে; অপরদিকে যে কেউ সেই ক্ষুদ্রতম আজ্ঞাগুলি পালন করে ও সেইভাবে শিখিয়ে দেয়, তাকে অধিক মহান বা স্বর্গরাজ্যের জন্য অধিক উপযুক্ত বলে গণ্য করা উচিত নয়; আবার, সেগুলি যে লঙ্ঘন করে, সে যতখানি ক্ষুদ্র, সেগুলি যে পালন করে, সে তার মত ততখানি ক্ষুদ্র নয়। সে যেন মহান হয় ও স্বর্গরাজ্যের উপযুক্ত হয়, এর জন্য প্রয়োজন রয়েছে, সে খ্রিষ্টের মত ব্যবহার করবে ও শিক্ষা দেবে; অন্য কথায়, প্রয়োজন রয়েছে, যেন শাস্ত্রী ও ফরিশীদের চেয়ে তার ধর্মিষ্ঠতা গভীরতর হয়।
ফরিশীদের ধর্মিষ্ঠতা হল, তুমি হত্যা করবে না; ঐশরাজ্যে যারা প্রবেশ করে, তাদের ধর্মিষ্ঠতা হল, তুমি অকারণে ক্রুদ্ধ হবে না। সুতরাং, হত্যা না করা হল সেই ক্ষুদ্রতম আজ্ঞা যা লঙ্ঘন করলে মানুষ স্বর্গরাজ্যে ক্ষুদ্রতম বলে গণ্য হবে; কিন্তু তা যে পালন করে, সে সঙ্গে সঙ্গেই যে মহান হবে ও স্বর্গরাজ্যের জন্য উপযুক্ত হবে তেমন নয়, তবু উচ্চতর পর্যায়ে উঠবে।
কিন্তু সে যদি অকারণে ক্রুদ্ধ না হয়, তাহলেই সে সিদ্ধ হবে; এমনকি, এ আজ্ঞা পালন করার ফলে সে হত্যা করা থেকে বেশ দূরেই থাকবে। সুতরাং, ক্রুদ্ধ না হওয়া, তেমন আজ্ঞা যে কেউ শেখায়, সে সেই বিধান লঙ্ঘন করছে না, যে বিধান হত্যা না করার কথা শেখায়; সে বরং বিধানের পূর্ণতা সাধন করে, যাতে করে আমরা হত্যা না করায় নিরপরাধিতা বাহ্যিক দিক দিয়ে রক্ষা করি, ও ক্রোধের সুযোগ না দিয়ে হৃদয়েই সেই নিরপরাধিতা রক্ষা করি।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ৭৮
ধুয়ো:
তারা খুব তৃপ্তির সঙ্গেই খেল,
প্রভু যে তাদের সেই বাসনা করেছিলেন মঞ্জুর।

মরুপ্রান্তরে শৈলশিলা বিদীর্ণ ক’রে
তিনি তাদের প্রচুর জল পান করালেন যেন সমুদ্রের অতল থেকে;
শৈল থেকে বের করে আনলেন কত জলস্রোত,
নদনদীর মতই বইয়ে দিলেন জল।   [ধুয়ো]

অথচ মরুদেশে পরাৎপরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ক’রে
তারা তাঁর বিরুদ্ধে পাপ করে চলল;
মনোমত খাদ্য চেয়ে
অন্তরে ঈশ্বরকে যাচাই করল।   [ধুয়ো]

তারা পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে গজগজ করে একথা বলল,
‘ঈশ্বর কি মরুপ্রান্তরে ভোজনপাট সাজাতে পারবেন?’
এই যে! তিনি শৈলে আঘাত হানলেই বইতে লাগল জল,
উছলে পড়ল যত খরস্রোত।   [ধুয়ো]

‘তিনি কি রুটিও দিতে পারবেন,
আপন জনগণের জন্য কি মাংস যোগাতে পারবেন?’
তারা যে পরমেশ্বরে বিশ্বাস রাখল না,
ভরসা রাখল না তাঁর পরিত্রাণে।   [ধুয়ো]

তবুও তিনি ঊর্ধ্বের মেঘপুঞ্জকে আজ্ঞা দিলেন,
খুলে দিলেন আকাশের যত দ্বার,
তাদের উপর খাদ্যরূপে বর্ষণ করলেন মান্না,
তাদের দিলেন স্বর্গের গোধুম।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, অনুনয় করি: স্বর্গীয় অন্নগ্রহণে পরিতৃপ্ত হয়ে উঠে আমরা যেন অনুক্ষণ
সেই বিষয়ের অন্বেষণ করি যা মানুষকে প্রকৃত জীবনে সঞ্জীবিত করে।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]    


৭ম রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আশীর্বাদ কর: স্বর্গের বিষয়ে অনুক্ষণ মন দিয়ে
আমরা যেন কথাকর্মে তোমার মঙ্গল ইচ্ছা পূর্ণ করতে পারি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
লেবীয় পুস্তক থেকে পাঠ (১৯:১-২,১৭-১৮)

প্রভু মোশিকে বললেন, ‘ইস্রায়েল সন্তানদের গোটা জনমণ্ডলীর কাছে কথা বল; তাদের বল: তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি প্রভু তোমাদের পরমেশ্বর, আমি নিজেই পবিত্র।
তুমি হৃদয়ের মধ্যে তোমার ভাইয়ের প্রতি ঘৃণা রাখবে না; তুমি তোমার স্বজাতীয়কে মুক্তকণ্ঠেই তিরস্কার করবে, তবে তোমাকে তার পাপ বহন করতে হবে না।
তুমি প্রতিশোধ নেবে না; তোমার আপন জাতির সন্তানদের বিরুদ্ধে আক্রোশ পোষণ করবে না, বরং তোমার প্রতিবেশীকে নিজেরই মত ভালবাসবে। আমিই প্রভু!’
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ১০৩
ধুয়ো:
প্রভু স্নেহশীল,
প্রভু দয়াবান।

প্রাণ আমার, প্রভুকে বল ধন্য;
আমার অন্তরে যা কিছু আছে, ধন্য কর তাঁর পবিত্র নাম।
প্রাণ আমার, প্রভুকে বল ধন্য;
ভুলে যেয়ো না তাঁর সমস্ত উপকার:   [ধুয়ো]

তিনিই তো তোমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করেন,
তোমার সমস্ত রোগ-ব্যাধি নিরাময় করেন,
গহ্বর থেকে মুক্ত করেন তোমার জীবন,
তোমাকে কৃপা ও স্নেহে করেন মুকুট-ভূষিত।   [ধুয়ো]

প্রভু স্নেহশীল, দয়াবান,
ক্রোধে ধীর, কৃপায় ধনবান।
আমাদের প্রতি তাঁর আচরণ আমাদের পাপরাশির অনুপাতে নয়,
আমাদের প্রতি তাঁর প্রতিদান আমাদের যত অপরাধের অনুপাতে নয়।   [ধুয়ো]

পশ্চিম থেকে পুব যত দূরবর্তী,
তিনি আমাদের কাছ থেকে তত দূরে ফেলে দেন আমাদের যত অপরাধ।
পিতা যেমন সন্তানদের স্নেহ করেন,
যারা তাঁকে ভয় করে, প্রভুও তাদের প্রতি তত স্নেহশীল।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (৩:১৬-২৩)

প্রিয়জনেরা, তোমরা কি একথা জান না যে, তোমরা স্বয়ং ঈশ্বরের মন্দির, এবং ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের অন্তরে নিবাসী হয়ে আছেন? কেউ যদি ঈশ্বরের সেই মন্দির ধ্বংস করে, তাহলে ঈশ্বর তাকে ধ্বংস করবেন; কারণ পবিত্রই ঈশ্বরের মন্দির—আর তোমরাই তো সেই মন্দির!
কেউ যেন নিজেকে না ভোলায়। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজেকে এই যুগের আদর্শে প্রজ্ঞাবান বলে মনে করে, সে প্রজ্ঞাবান হবার জন্য মূর্খ হোক; কারণ এই জগতের যে প্রজ্ঞা, তা ঈশ্বরের কাছে মূর্খতা; কেননা লেখা আছে, তিনি প্রজ্ঞাবানদের তাদের নিজেদের কুটিলতার ফাঁদে ধরে ফেলেন। আরও, প্রভু তো জানেন, প্রজ্ঞাবানদের ধ্যানধারণা অসার।
তাই কেউ যেন নিজের গর্ব মানুষেই না রাখে, কারণ সবই তোমাদের: পল হোক, আপল্লোস বা কেফাস হোক, জগৎ বা জীবন বা মৃত্যু হোক, বর্তমানকালীন বা আসন্ন যাই কিছু হোক—সবই তোমাদের; তোমরা কিন্তু খ্রিষ্টেরই, ও খ্রিষ্ট ঈশ্বরেরই!
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
যে কেউ যিশুখ্রিষ্টের বাণী পালন করে,
ঈশ্বরের ভালবাসা তার অন্তরে সত্যি সিদ্ধি লাভ করেছে।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৫:৩৮-৪৮)

একদিন যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন, ‘তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, চোখের বদলে চোখ ও দাঁতের বদলে দাঁত। কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, দুর্জনকে প্রতিরোধ করো না; বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে, অন্য গালও তার দিকে ফিরিয়ে দাও; যে তোমার সঙ্গে বিচারালয়ে মামলা করে তোমার জামাটা নিতে চায়, তাকে চাদরও নিতে দাও। যে কেউ এক মাইল যেতে তোমাকে বাধ্য করে, তার সঙ্গে দুই মাইল পথ চল। যে কেউ তোমার কাছে যাচনা করে, তাকে দাও, আর কেউ তোমার কাছে ধার চাইলে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না।
তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসবে ও তোমার শত্রুকে ঘৃণা করবে। কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবাস, ও যারা তোমাদের নির্যাতন করে, তাদের মঙ্গল প্রার্থনা কর, যেন তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান হতে পার, কারণ তিনি ভাল মন্দ সকলের উপরেই নিজের সূর্য জাগান, ও ধার্মিক অধার্মিক সকলের উপরেই বৃষ্টি নামিয়ে আনেন।
কেননা যারা তোমাদের ভালবাসে, তাদেরই ভালবাসলে তোমাদের কী মজুরি হবে? কর-আদায়কারীরাও কি সেইমত করে না? আর তোমরা যদি কেবল নিজ নিজ ভাইদের সঙ্গেই কুশল আলাপ কর, তবে অসাধারণ কীবা কর? বিজাতীয়রাও কি সেইমত করে না? অতএব এক্ষেত্রে তোমাদের যেন কোন সীমা না থাকে, যেমনটি তোমাদের স্বর্গস্থ পিতারও কোন সীমা নেই।’
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
বিশপ সাধু চিপ্রিয়ানুস-লিখিত ‘ঈর্ষা ও হিংসা প্রসঙ্গ’
আমাদের স্মরণ করা দরকার কোন্‌ নামেই বা খ্রিষ্ট আপন জনগণকে ডাকেন, আপন মেষপালকে কোন্‌ নামেই বা অভিহিত করেন। তিনি তাদের মেষ বলেন, যেন খ্রিষ্টিয়ানদের নির্মলতা মেষদের স্বভাবের অনুরূপ হয়; তাদের মেষশাবক বলেন, যেন তাদের মনের সরলতা মেষশাবকদের সরল প্রকৃতির অনুকরণ করে। কেনই বা নেকড়ে মেষের ছদ্মবেশে নিজেকে লুকিয়ে রাখে? খ্রিষ্টিয়ান নামটা যারা মিথ্যায় ধারণ করে, তারা কেনই বা খ্রিষ্টের পালের দুর্নাম ঘটায়? খ্রিষ্টের নাম ধারণ করা অথচ খ্রিষ্টের পদক্ষেপে না চলা, এ কি ঈশ্বরের নামের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা ও পরিত্রাণের পথ ত্যাগ করা নয়? তিনি তো নিজেই শিক্ষা দেন ও গম্ভীরভাবে ঘোষণা করেন যে, তাঁর আজ্ঞাগুলি যারা পালন করে তারাই জীবনের কাছে পৌঁছবে, তাঁর বাণী যারা শোনে ও মেনে নেয় তারাই জ্ঞানবান; আরও, তিনি যেভাবে শিক্ষা দিতেন, সেইভাবে যে শিক্ষা দেবে ও কাজ করবে, স্বর্গরাজ্যে সেই মহত্তম আচার্য বলে অভিহিত হবে; তিনি আরও বলেছিলেন, মুখে যা ঘোষণা করা হয়, তা যখন কাজে প্রমাণিত হয়, তখনই ঘোষকের পক্ষে তার ঘোষণা সুন্দর ও ফলপ্রসূ বলে গণ্য হবে।
তিনি যেভাবে শিষ্যদের ভালবেসেছিলেন, আমরা যেন সেইভাবে পরস্পরকে ভালবাসি, একথার চেয়ে প্রভু আপন পরিত্রাণদায়ী সতর্কবাণী ও দিব্য আজ্ঞার মধ্যে আর কোন্‌ কথাই বা শিষ্যদের অন্তরে অধিক ঢোকাতে চেষ্টা করলেন? বা কোন্‌ কথাই বিশেষভাবে পালন ও রক্ষা করতে আজ্ঞা করলেন? কিন্তু ঈর্ষার দরুন যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না, ভালবাসার পাত্রও হতে পারে না, সে কেমন করে প্রভুর শান্তি ও ভালবাসা রক্ষা করতে পারবে?
এজন্য শান্তি ও ভালবাসার গুণ উল্লেখ করতে গিয়ে, জোর করেই এ কথাও ব’লে যে ভালবাসার দাবি অক্ষুণ্ণ ও অলঙ্ঘ্য না রাখতে পারলে তাঁর বিশ্বাস, আশা, অর্থদান, সাক্ষ্যমর বা ধর্মশহীদের যন্ত্রণাও তাঁর কোন উপকার আসবে না, প্রেরিতদূত পল বলে চলেন, ভালবাসা সহিষ্ণু, মধুর তো ভালবাসা; ভালবাসা ঈর্ষা করে না (১ করি ১৩:৪)। তেমন কথা বলে তিনি শিক্ষা ও প্রমাণ করতে চান যে, যে ব্যক্তি উদারমনা, মঙ্গলকামী, হিংসা ও ঈর্ষা থেকে দূরে থাকে, সে-ই ভালবাসা রক্ষা করতে পারে। একই প্রকারে, বাপ্তিস্মের গুণে যে মানুষ পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়েছে ও ঈশ্বরের সন্তান হয়ে উঠেছে, আত্মিক ও স্বর্গীয় যত কিছুর অন্বেষণ করতে তাকে আহ্বান করে তিনি অন্য স্থানে বলে চলেন, ভাই, আমি সেসময় তোমাদের কাছে আত্মিক মানুষদের কাছে যেন কথা বলতে পারিনি, মাংসময় মানুষদের কাছে যেন, খ্রিষ্টে এখনও শিশুদেরই কাছে যেন কথা বলেছি, কারণ এখনও তোমরা মাংসাধীন হয়ে আছ। যতদিন তোমাদের মধ্যে ঈর্ষা ও বিবাদ দেখা দেয়, ততদিন তোমরা কি মাংসাধীন নও? (১ করি ১৩:১, ৩)।
আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনের সূত্রপাত থেকেই যদি দেখাতে না পারি, আমরা খ্রিষ্টের অনুরূপ, তাহলে স্বর্গীয় মানুষের সাদৃশ্য পরিধান করতে পারি না। এর মানে হল: তুমি আগে যা ছিলে তার পরিবর্তন ঘটাও, আর যা ছিলে না তাই হতে শুরু কর, যাতে তোমার মধ্যে তোমার ঐশপুত্রত্ব উজ্জ্বলভাবে প্রকাশ পেতে পারে। ঈশ্বরের পিতৃত্বের পাশাপাশি আমাদের ঈশ্বরসন্তানোচিত ব্যবহার থাকার কথা, তবেই জীবনাচরণ দ্বারা ঈশ্বর মানুষের মধ্যে গৌরবান্বিত ও প্রশংসিত হবেন। যারা তাঁকে গৌরবান্বিত করবেন, তাদের কাছে প্রতিগৌরব দানের কথা প্রতিশ্রুত হয়ে ঈশ্বর নিজেই এ উদ্দেশ্যে আমাদের আহ্বান করেন, সতর্কবাণীও দান করেন; তিনি বলেন: যারা আমাকে সম্মান করবে, আমিও তাদের সম্মান করব; আর যারা আমাকে অবজ্ঞা করবে, তারা অবজ্ঞার বস্তু হবে (১ শামু ২:৩০)। তেমন গৌরবলাভের জন্য আমাদের প্রস্তুত ও গঠন করার উদ্দেশ্যে ঈশ্বরের পুত্র সেই প্রভু সুসমাচারে পিতা ঈশ্বরের ছবি আমাদের অর্পণ করেন; তিনি বলেন, তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসবে ও তোমার শত্রুকে ঘৃণা করবে। কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবাস, ও যারা তোমাদের নির্যাতন করে, তাদের মঙ্গল প্রার্থনা কর, যেন তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার সদৃশ হতে পার (মথি ৫:৪৩-৪৫)।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ৯
ধুয়ো:
প্রচার করব তোমার সকল আশ্চর্য কাজের কথা।
করব তোমার নামগান, হে পরাৎপর।

সমস্ত হৃদয় দিয়ে আমি করব প্রভুর স্তুতিবাদ,
প্রচার করব তোমার সকল আশ্চর্য কাজের কথা।
তোমাতে আনন্দ করব, করব উল্লাস,
করব তোমার নামগান, হে পরাৎপর।   [ধুয়ো]

অত্যাচারিতের জন্য প্রভু হবেন দুর্গ,
সঙ্কটকালেই দুর্গ তিনি।
যারা তোমার নাম জানে, তারা তোমাতেই ভরসা রাখবে,
কারণ তোমার অন্বেষীদের তুমি ত্যাগ কর না কো প্রভু।   [ধুয়ো]

সিয়োনে সমাসীন প্রভুর উদ্দেশে তোমরা স্তবগান কর,
জাতিসকলের কাছে প্রচার কর তাঁর কর্মকীর্তির কথা,
কারণ রক্তপাতের সেই প্রতিফলদাতা সবই মনে রাখেন,
তিনি দীনদুঃখীদের চিৎকার ভোলেন না।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, এ মহারহস্যে যোগদানের ফলে
আমরা অগ্রিম দান হিসাবে যা পেয়েছি,
তোমার আশীর্বাদে যেন তার পরিত্রাণদায়ী ফলের অভিজ্ঞতা করতে পারি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]    


৮ম রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, আমাদের মিনতিতে সাড়া দিয়ে আশীর্বাদ কর:
বিশ্বজগৎ যেন তোমার পরিচালনায় শান্তির পথে এগিয়ে চলে,
তোমার মণ্ডলীও যেন নির্ভয়ে তোমার সেবায় নিবিষ্ট থেকে
আনন্দ অনুভব করতে পারে।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
নবী ইশাইয়ার পুস্তক থেকে পাঠ (৪৯:১৪-১৫)

সিয়োন বলল, ‘প্রভু আমাকে ত্যাগ করেছেন,
প্রভু আমাকে ভুলে গেছেন।’
কোন নারী কি নিজের কোলের শিশুকে ভুলে যেতে পারে?
নিজের গর্ভজাত সন্তানকে কি স্নেহ না করে পারে?
তারা যদিও ভুলে যায়, আমি তোমাকে ভুলব না।
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ৬২
ধুয়ো:
কেবল পরমেশ্বরেই
স্বস্তি পায় আমার প্রাণ।

কেবল পরমেশ্বরেই স্বস্তি পায় আমার প্রাণ,
তাঁরই কাছ থেকে আসে আমার পরিত্রাণ।
কেবল তিনিই আমার শৈল, আমার পরিত্রাণ,
তিনি আমার দুর্গ—আমি টলব না।   [ধুয়ো]

কেবল পরমেশ্বরেই স্বস্তি পায় আমার প্রাণ,
তাঁরই কাছ থেকে আসে আমার আশা;
কেবল তিনিই আমার শৈল, আমার পরিত্রাণ,
তিনি আমার দুর্গ—আমি টলব না।   [ধুয়ো]

পরমেশ্বরেই আমার পরিত্রাণ, আমার গৌরব;
পরমেশ্বরেই আমার শক্তিশৈল, আমার আশ্রয়।
হে জনগণ, তাঁর উপরেই অনুক্ষণ ভরসা রাখ,
তাঁর সম্মুখে অন্তর উজাড় করে দাও।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (৪:১-৫)

প্রিয়জনেরা, লোকে আমাদের যেন খ্রিষ্টের সেবক ও ঈশ্বরের রহস্যগুলির গৃহাধ্যক্ষ বলে মনে করে। এখন, গৃহাধ্যক্ষের বিষয়ে সকলের প্রত্যাশা, তারা প্রত্যেকে যেন বিশ্বাসযোগ্য হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু আমি যে তোমাদের দ্বারা বা মানবীয় কোন বিচারসভা দ্বারা বিচারিত হই, তা আমার কাছে অতি সামান্য ব্যাপার; এমনকি আমি নিজেও নিজের বিচার করি না; আমার বিবেক আমাকে ভর্ৎসনা করছে না, একথা সত্য; কিন্তু এতে যে আমি নির্দোষ বলে প্রতিপন্ন হয়ে দাঁড়াই, তা নয়: প্রভুই আমার বিচারকর্তা।
তাই নির্দিষ্ট সময়ের আগে তোমরা কোন-কিছু বিচার করো না, যতদিন না প্রভু আসেন। তিনি অন্ধকারাচ্ছন্ন সবকিছুই আলোতে উদ্ঘাটিত করবেন ও হৃদয়ের যত অভিপ্রায় ব্যক্ত করবেন। আর তখনই প্রতিটি মানুষ ঈশ্বরের কাছ থেকে নিজ নিজ প্রশংসা পাবে।
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
ঈশ্বরের বাণী জীবন্ত ও কার্যকর;
তা হৃদয়ের বাসনা ও ভাবনার সূক্ষ্ম বিচার করে।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৬:২৪-৩৪)

একদিন যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন: ‘দুই মনিবের সেবায় থাকা কারও পক্ষে সম্ভব নয়: সে হয় একজনকে ঘৃণা করবে আর অন্যজনকে ভালবাসবে, না হয় একজনের প্রতি আকৃষ্ট হবে আর অন্যজনকে উপেক্ষা করবে—ঈশ্বর ও ধন, উভয়ের সেবায় থাকা তোমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
এজন্য আমি তোমাদের বলছি, কী খাব, কী পান করব বলে প্রাণের বিষয়ে, কিংবা কী পরব বলে শরীরের বিষয়ে চিন্তিত হয়ো না; খাদ্যের চেয়ে প্রাণ ও পোশাকের চেয়ে শরীর কি বড় ব্যাপার নয়?
আকাশের পাখিদের দিকে তাকাও; তারা বোনেও না, কাটেও না, গোলাঘরেও জমায় না, অথচ তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তাদের খেতে দিয়ে থাকেন; তোমরা কি তাদের চেয়ে অধিক মূল্যবান নও? আর তোমাদের মধ্যে কে চিন্তিত হয়ে নিজের আয়ুষ্কাল কিঞ্চিৎও বাড়াতে পারে?
আর পোশাকের জন্য কেন চিন্তিত হও? মাঠের লিলিফুলের কথা ভেবে দেখ তারা কেমন করে বেড়ে ওঠে: তারা তো শ্রম করে না, সুতোও কাটে না; অথচ আমি তোমাদের বলছি, শলোমনও নিজের সমস্ত গৌরবে এগুলোর একটার মত সুসজ্জিত ছিলেন না। আচ্ছা, মাঠের যে ঘাস আজ আছে ও কাল চুল্লিতে ফেলে দেওয়া হবে, ঈশ্বর যখন তা এভাবে বিভূষিত করেন, তখন হে অল্পবিশ্বাসী, তোমাদের জন্য তিনি কি বেশি চিন্তা করবেন না?
অতএব, কী খাব বা কী পান করব বা কী পরব, এ বলে চিন্তিত হয়ো না। বিজাতীয়রাই এই সকল বিষয়ে ব্যস্ত থাকে; বাস্তবিকই তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা জানেন যে, তোমাদের এ সবকিছুর প্রয়োজন আছে।
তোমরা বরং প্রথমে তাঁর রাজ্য ও তাঁর ধর্মময়তার অন্বেষণ কর, তাহলে ওই সবকিছুও তোমাদের দেওয়া হবে।
সুতরাং আগামীকালের জন্য চিন্তিত হয়ো না: হ্যাঁ, আগামীকাল তার নিজের চিন্তায় নিজে চিন্তিত থাকবে; দিনের পক্ষে তার নিজের কষ্টই যথেষ্ট।’
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
লুক-রচিত সুসমাচারে আলেক্সান্দ্রিয়ার বিশপ সাধু সিরিলের ব্যাখ্যা

একথা থেকে শিষ্যদের কী শিক্ষা পেতে হবে, বা তাঁদের কী সিদ্ধান্ত নিতে হবে? নিঃসন্দেহে উত্তর এ: খাদ্য সম্বন্ধে তাঁরা তাঁর উপরেই সমস্ত প্রত্যাশা রাখবেন, সামসঙ্গীতের এ বচন স্মরণ ক’রে যে, প্রভুর উপর ফেলে দাও তোমার বোঝা, তিনি তোমাকে সুস্থির করবেন (সাম ৫৫:২৩)। কেননা প্রভু আপন পুণ্যজনদের উপর জীবনযাপনে যা কিছু প্রয়োজন বর্ষণ করেন; তিনি তখনও মিথ্যা বলেন না যখন বলেন, ‘কী খাব, কী পান করব’ বলে প্রাণের বিষয়ে, কিংবা ‘কী পরব’ বলে শরীরের বিষয়ে চিন্তিত হয়ো না… কেননা তোমাদের পিতা জানেন যে, তোমাদের এ সবকিছুর প্রয়োজন আছে। তোমরা বরং প্রথমে তাঁর রাজ্য ও তাঁর ধর্মময়তার অন্বেষণ কর, তাহলে ওই সবকিছুও তোমাদের বাড়তি হিসাবে দেওয়া হবে (মথি ৬:২৫, ৩২-৩৩)।
যাঁরা প্রেরিতদূত পদমর্যাদায় নিযুক্ত, তাঁদের প্রাণ যে কোন ঐশ্বর্য থেকে মুক্ত হবে ও তাঁরা যে উপহার পাবার বাসনা থেকে দূরে থাকবেন ও ঈশ্বর যা দেন তাতেই খুশি হবেন, এ সত্যিই উপযুক্ত ও প্রয়োজন ছিল, কেননা লেখা আছে, অর্থলালসাই সমস্ত অনিষ্টের মূল (১ তি ৬:১০)।
সুতরাং, শয়তানের অধীনে বশীভূত না হবার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাপারে প্রবৃত্ত হয়ে সমস্ত অনিষ্টের মূল এ রিপু থেকে সতর্কতার সঙ্গে দূরে থাকা ও মুক্ত হওয়া তাঁদের পক্ষে একান্ত প্রয়োজন ছিল। এভাবে সাংসারিক যত চিন্তা থেকে স্বাধীন হয়ে তাঁরা শরীরের সমস্ত বিষয় তুচ্ছ করতে পারবেন ও ঈশ্বর যা ইচ্ছা করেন তাই শুধু বাসনা করতে পারবেন।
বীরযোদ্ধাও সংগ্রাম করতে গিয়ে যুদ্ধ সংক্রান্ত অন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে নেয় না। তাই যাঁদের খ্রিষ্ট পৃথিবীর সহায়তা করতে ও বিপন্ন যত মানুষের সপক্ষে এই অন্ধকারময় জগতের অধিপতিদের বিরুদ্ধে (এফে ৬:১২), এমনকি শয়তানেরই বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে প্রেরণ করছিলেন, তাঁদের পক্ষে এ জগতের দুশ্চিন্তা ও পার্থিব যত চিন্তা থেকে মুক্ত হওয়া উচিত ছিল, তাঁরা যেন আত্মিক অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে তাদেরই বিরুদ্ধে বীর্যের সঙ্গে সংগ্রাম করতে পারেন যারা খ্রিষ্টের গৌরবের বিরোধিতা করছিল ও পৃথিবীর যত কিছু নষ্ট করে দিয়েছিল—হ্যাঁ, এরাই তো জগদ্বাসীদের মন ভুলিয়েছিল, মানুষ যেন স্রষ্টার স্থানে সৃষ্টবস্তুকে পূজা করে ও পার্থিব পদার্থ আরাধনা করে।
অতএব, ঐশপরিত্রাণের শিরস্ত্রাণ ও ধর্মময়তা-রণসজ্জায় সজ্জিত হয়ে ও পবিত্র আত্মার খড়্গ অর্থাৎ ঐশবাণী হাতে নিয়ে প্রেরিতদূতদের এই কর্তব্য ছিল, তাঁরা শত্রুদের প্রতি নির্মম হবেন, কলুষিত বা ত্রুটিপূর্ণ কোন কিছুই যথা অর্থলাভের কামনা কি অন্যায্য অর্থলাভের বাসনা ইত্যাদি বাসনা সঙ্গে নেবেন না, কারণ সেই ধরনের বাসনা প্রাণের চিন্তা ঈশ্বরের গ্রহণীয় জীবন থেকে সরিয়ে দেয়, ফলে প্রাণ ঈশ্বরধ্যানে বাধা পেয়ে পার্থিব ও সাংসারিক চিন্তায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ১৩
ধুয়ো:
প্রভুর উদ্দেশে গাইব গান, তিনি যে করেছেন আমার উপকার।
পরাৎপর প্রভুর করব নামগান।

চেয়ে দেখ! আমাকে সাড়া দাও গো প্রভু, পরমেশ্বর আমার;
দাও আলো আমার চোখে, পাছে মৃত্যুঘুমে ঘুমিয়ে পড়ি,
পাছে আমার শত্রু বলে, ‘তার সঙ্গে পেরেছি এবার,’
আমি টলমল হলে পাছে আমার বিপক্ষরা মেতে ওঠে।   [ধুয়ো]

আমি কিন্তু তোমার কৃপায় ভরসা রাখি,
তোমার পরিত্রাণে মেতে ওঠে আমার অন্তর,
প্রভুর উদ্দেশে গাইব গান, তিনি যে করেছেন আমার উপকার।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, তোমার পরিত্রাণদায়ী অন্নগ্রহণে পরিতৃপ্ত হয়ে উঠে
আমরা তোমার দয়া প্রার্থনা করি: যে সাক্রামেন্ত গুণে
তুমি এ পার্থিব জীবনে আমাদের পুষ্টি সাধন কর,
সেই একই সাক্রামেন্ত গুণে আমাদের অনন্ত জীবনেরও সহভাগী করে তোল।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]    


৯ম রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
    - আমেন।

আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
    - আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।

এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
    - তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
    - আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
    - আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
    - খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
    - প্রভু, দয়া কর।

২। জয় পরমেশ্বর।

৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে ঈশ্বর, সঙ্কল্প বাস্তবায়নে তোমার দূরদৃষ্টি কখনও ব্যর্থ হয় না। মিনতি জানাই:
ক্ষতিকর যত কিছু দূরে রাখ, মঙ্গলকর সমস্ত কিছু আমাদের মঞ্জুর কর।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।

৪। প্রথম পাঠ
দ্বিতীয় বিবরণ থেকে পাঠ (১১:১৮,২৬-২৮,৩২)

মোশি জনগণকে উদ্দেশ করে একথা বললেন, ‘তোমরা আমার এই সকল বাণী তোমাদের হৃদয়ে ও প্রাণে গেঁথে রাখবে, তা চিহ্নরূপে তোমাদের হাতে বেঁধে রাখবে, তা তোমাদের চোখ দু’টোর মাঝখানে ভূষণস্বরূপে থাকবে।
দেখ, আজ আমি একটা আশীর্বাদ ও একটা অভিশাপ তোমাদের সামনে রাখলাম। আজ আমি তোমাদের যে সকল আজ্ঞা জানিয়ে দিলাম, তোমাদের পরমেশ্বর প্রভুর সেই সকল আজ্ঞা যদি মেনে চল, তবে সেই আশীর্বাদের পাত্র হবে। আর যদি তোমাদের পরমেশ্বর প্রভুর আজ্ঞা মেনে না চল, এবং আমি আজ এই যে পথে তোমাদের চলতে বললাম, সেই পথ ছেড়ে যদি বিদেশী এমন কোন দেবতারই অনুগামী হও যাদের বিষয়ে তোমরা কিছুই জান না, তবে সেই অভিশাপের পাত্র হবে।
আমি আজ তোমাদের সামনে যে সকল বিধি ও নিয়মনীতি রাখলাম, তা তোমরা সযত্নেই পালন করবে।’
ঈশ্বরের বাণী।

৫। সামসঙ্গীত ৩১
ধুয়ো:
হও আমার জন্য
একটি শৈলাশ্রয়, প্রভু।

প্রভু, তোমাতেই নিয়েছি আশ্রয়,
আমাকে যেন কখনও লজ্জা না পেতে হয়।
তোমার ধর্মময়তায় আমাকে রেহাই দাও।
কান দাও, শীঘ্রই আমাকে উদ্ধার কর।   [ধুয়ো]

হও তুমি আমার জন্য একটি শৈলাশ্রয়,
আমার পরিত্রাণের জন্য একটি দৃঢ় গিরিদুর্গ।
তুমিই তো আমার শৈল, আমার গিরিদুর্গ,
তোমার নামের দোহাই আমাকে চালনা কর, দেখাও পথ।   [ধুয়ো]

তোমার দাসের উপর শ্রীমুখ উজ্জ্বল করে তোল,
তোমার কৃপায় ত্রাণ কর আমায়।
শক্ত হও, অন্তর দৃঢ় করে তোল তোমরা,
তোমরা সকলে, যারা প্রভুর প্রত্যাশায় আছ।   [ধুয়ো]

৬। দ্বিতীয় পাঠ
রোমীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের পত্র থেকে পাঠ (৩:২১-২৫ক,২৮)

প্রিয়জনেরা, বিধানের ভূমিকা বাদে ঈশ্বরের দেওয়া ধর্মময়তা প্রকাশিত হয়েছে, আর সেই বিষয়ে বিধান ও নবীদের সাক্ষ্যও রয়েছে: ঈশ্বরের দেওয়া এই ধর্মময়তা যিশুখ্রিষ্টে স্থাপিত বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তাদের সকলেরই জন্য, যারা বিশ্বাস করে; আর কোন প্রভেদ নেই: যেহেতু সকলেই পাপ করেছে, সকলেই ঈশ্বরের গৌরব থেকে বঞ্চিত, কিন্তু তাঁরই অনুগ্রহে বিনামূল্যে সকলকে ধর্মময় বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে খ্রিষ্টযিশুর সাধিত মুক্তিকর্ম দ্বারা। তাঁর সেই রক্তদানে তাঁকেই ঈশ্বর বিশ্বাসগুণে প্রায়শ্চিত্তের স্থানস্বরূপ তুলে ধরেছেন।
কেননা আমাদের বিবেচনায় বিধানের আদিষ্ট কর্ম ছাড়া বিশ্বাস দ্বারাই মানুষকে ধর্মময় বলে সাব্যস্ত করা হয়।
ঈশ্বরের বাণী।

৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমি হলাম আঙুরলতা—একথা বলছেন প্রভু,
তোমরা হলে শাখা,
যে আমাতে থাকে আর আমি যার অন্তরে থাকি,
সে-ই প্রচুর ফলে ফলশালী হয়।
আল্লেলুইয়া।

৮। সুসমাচার
মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৭:২১-২৭)

একদিন যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন, ‘যারা আমাকে “প্রভু, প্রভু” বলে, তারা সকলে যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে এমন নয়, কিন্তু আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা যে পালন করে, সে-ই প্রবেশ করবে।
সেইদিন অনেকে আমাকে বলবে, “প্রভু, প্রভু, আপনার নামে আমরা কি ভাববাণী দিইনি? আপনার নামে কি অপদূত তাড়াইনি? আপনার নামে কি বহু পরাক্রম-কর্ম সাধন করিনি?” তখন আমি তাদের স্পষ্ট বলব: আমি কখনও তোমাদের জানিনি। হে জঘন্য কর্মের সাধক, আমা থেকে দূর হও।
অতএব যে কেউ আমার এই সকল বাণী শুনে তা পালন করে, সে তেমন এক বুদ্ধিমান লোকের মত, যে শৈলের উপরে নিজের ঘর গাঁথল। বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, বাতাস বইল ও সেই ঘরে আঘাত হানল, তবু তা পড়ল না, কারণ তার ভিত শৈলের উপরেই স্থাপিত ছিল।
কিন্তু যে কেউ আমার এই সকল বাণী শুনে তা পালন করে না, সে তেমন এক নির্বোধ লোকের মত, যে বালুর উপরে নিজের ঘর গাঁথল। বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, বাতাস বইল ও সেই ঘরে আঘাত হানল, আর তা পড়েই গেল—তার পতন কেমন সাংঘাতিক!’
প্রভুর বাণী।

৯। উপদেশ
বিশপ লাতিন এপিফানিউস-লিখিত ‘সুসমাচার ব্যাখ্যা’

যেহেতু প্রতিটি ভাল গাছে ভাল ফল ধরে, কিন্তু মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে (মথি ১৭:২০), সেজন্য ফল থেকেই গাছের পরিচয় পাওয়া যায়। আমরা ভাল গাছ হলে, অর্থাৎ ন্যায়বান, ধর্মপ্রাণ ও দয়াবান মানুষ হলে তবে আমাদের ন্যায় ও পবিত্রতার ফল উৎপাদন করতে হবে; অন্যথা আমরা মন্দ গাছ হলে, অর্থাৎ ধর্মহীন, প্রবঞ্চক, লোভী ও পাপী মানুষ হলে, তবে ঐশবিচারের দিনে আমাদের সেই দুধারী খড়্গ দ্বারা উচ্ছেদ করা হবে ও অনন্ত আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। সেই দিন ভাল ও মন্দ মানুষের সেই বিচ্ছেদ ঘটবে, যার কথা আজকের সুসমাচারে বর্ণিত: যে কেউ আমার এই সকল বাণী শুনে তা পালন করে, সে তেমন এক বুদ্ধিমান লোকের মত, যে শৈলের উপরে নিজের ঘর গাঁথল। বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, বাতাস বইল ও সেই ঘরে আঘাত হানল, তবু তা পড়ল না, কারণ তার ভিত শৈলের উপরেই স্থাপিত ছিল (মথি ৭:২৪-২৫)। এজন্য যিনি আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত অটল, ও কর্মবিরতি দ্বারা নয় বরং পরিশ্রম দ্বারাই আমাদের চিরকালের মত পরিত্রাণপ্রাপ্ত বলে দেখতে চান, তিনি সমস্ত সুখ-বাণী ও অসংখ্য আদেশের পরিশেষে উপসংহার স্বরূপ এ উপমা-কাহিনী উপস্থাপন করলেন, শেষ পর্যন্ত যে নিষ্ঠাবান থাকবে, সে যেন পরিত্রাণ পায়।
পাথরের উপরে নির্মিত সেই ঘর যা প্রতিকূল কোন ঝড়ঝঞ্জাও টলাতে পারেনি, তার মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের দৃঢ় খ্রিষ্টবিশ্বাস দেখাতে চাইলেন যা শয়তানের কোন প্রলোভন দ্বারা আলোড়িত হতে পারে না, বরং আত্মিক অস্ত্র দ্বারা শত্রুকে প্রতিরোধ করে আমরা তাকে পরাভূত করে জয়মালা লাভ করতে যোগ্য হয়ে উঠব। সুতরাং ঘরটা হল পবিত্র মণ্ডলী বা আমাদের বিশ্বাস যা শৈলের উপরে স্থাপিত, যেমনটি প্রভু নিজে ধন্য প্রেরিতদূত পিতরকে বলেছিলেন, তুমি পিতর, আর এই শৈলের উপরে আমি আমার মণ্ডলী গেঁথে তুলব, আর পাতালের দ্বার তার উপরে জয়ী হবে না (মথি ১৬:১৮)। সুতরাং, আমার প্রিয়জনেরা, যতদিন নির্মাণকাল চলছে, এসো, ততদিন আমাদের বিশ্বাস খ্রিষ্টে স্থাপন করি ও অন্তরটা পুণ্যকর্মে পরিপূর্ণ করি, যেন ঝড় অর্থাৎ সেই গোপন শত্রু এসে আমাদের ধ্বংস না করতে পারে, বরং তার নিজেরই সর্বনাশ ঘটে। এখনও শত্রু আমাদের সঙ্গে আছে, সে আমাদের বুকেই লুকিয়ে রয়েছে, যেমনটি প্রেরিতদূত বলেন, তোমাদের শত্রু সেই শয়তান গর্জমান সিংহের মত এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সন্ধান করছে কাকে গ্রাস করবে (১ পি ৫:৮)। অতএব, আমার প্রিয়জনেরা, সমৃদ্ধির সময়ে যে সুবুদ্ধির সঙ্গে দৃঢ়ভাবে ঘর বাঁধবে, প্রতিকূলতার সময়ে সে অধিক শক্তিশালী শুধু নয়, প্রশংসনীয়ও হয়ে উঠবে, কারণ নিজের যোগ্যতা দেখানোর পর সে সেই জীবনমুকুট পাবে যা তাদেরই কাছে প্রতিশ্রুত যারা তাঁকে ভালবাসে (যাকোব ১:১২)। সুতরাং, প্রিয়জনেরা, সজাগ থাকা, আগ্রহের সঙ্গে ব্যস্ত থাকা ও পরিশ্রম করা একান্ত প্রয়োজন, যেন খ্রিষ্টের সহায়তায় প্রতিকূল সবকিছু অতিক্রম করতে পারি ও শাশ্বত মঙ্গলদান লাভ করতে পারি।

১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।

১১। অর্থদান

১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।

অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।

হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)

১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;
কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।

১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ১১
ধুয়ো:
তুমি আমাকে সাড়া দেবে বলে তোমাকে ডাকি, ঈশ্বর,
কান দাও, আমার কথা শোন।

আমি প্রভুতেই নিয়েছি আশ্রয়;
কী করে তোমরা আমাকে বল:
‘হে পাখি, পালিয়ে যাও
তোমার পর্বতের দিকে?’   [ধুয়ো]

প্রভু তাঁর পবিত্র মন্দিরে বিরাজিত,
প্রভু তাঁর স্বর্গীয় সিংহাসনে সমাসীন।
তাঁর চোখ লক্ষ রাখে,
তাঁর দৃষ্টি আদমসন্তানদের পরীক্ষা করে।   [ধুয়ো]

ধার্মিক কি দুর্জন সকলকেই প্রভু পরীক্ষা করেন,
কিন্তু যারা হিংসা ভালবাসে, তাঁর প্রাণ তাদের ঘৃণা করে;
কারণ প্রভু ধর্মময়, তিনি ধর্মময়তা ভালবাসেন,
ন্যায়নিষ্ঠ মানুষই পাবে তাঁর শ্রীমুখের দর্শন।   [ধুয়ো]

১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, তোমার পুত্রের দেহরক্ত দানে যাদের পুষ্ট কর,
তোমার পবিত্র আত্মার প্রেরণা গুণেই এই আমাদের চালনা কর,
যেন শুধু মুখে ও কথায় নয় বরং কাজে কর্মে তোমার নাম স্বীকার ক’রে
আমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য হয়ে উঠি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।

১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।

অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।

[সূচী]