সাধারণকাল
![]() • পরমপবিত্র ত্রিত্ব পঞ্চাশত্তমীর পরবর্তী রবিবারে পালিত হয়। • খ্রিষ্টের পরমপবিত্র দেহরক্ত পরমপবিত্র ত্রিত্বের পরবর্তী রবিবারে পালিত হয়। • পরমারাধ্য যিশুহৃদয় পঞ্চাশত্তমীর পরবর্তী দ্বিতীয় রবিবারের পরবর্তী শুক্রবারে পালিত হয়। • বিশ্বরাজ আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্ট সাধারণকালের শেষ রবিবারে পালিত হয়। |
রবিবার: ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩
সাধারণকালের মহাপর্বচতুষ্টয়: ত্রিত্ব | খ্রিষ্টের দেহরক্ত | যিশুহৃদয় | খ্রিষ্টরাজা
পরমপবিত্র ত্রিত্ব
![]() (সাধু বেনেডিক্ট মঠ - উপাসনালয়) |
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে পিতা ঈশ্বর,
তুমি সত্যের ঐশবাণীকে ও পবিত্রতাদানকারী আত্মাকে এজগতে প্রেরণ ক’রে
মানবজাতির কাছে তোমার ঈশ্বরত্বের অপরূপ রহস্য ব্যক্ত করেছ।
অনুনয় করি: সত্য বিশ্বাস স্বীকৃতিতে আমরা যেন
সনাতন ত্রিত্বের গৌরব ঘোষণা করি
ও মহিমময় প্রতাপশালী ঐক্যকে আরাধনা করি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
যাত্রাপুস্তক থেকে পাঠ (৩৪:৪খ-৬,৮-৯)
সেসময়ে মোশি প্রভুর আজ্ঞামত সকালে উঠে সিনাই পর্বতের উপরে গেলেন, তাঁর হাতে ছিল সেই পাথরফলক দু’টো।
তখন প্রভু মেঘে নেমে এসে সেইখানে তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে ‘প্রভু’ নাম ঘোষণা করলেন। প্রভু তাঁর সামনে দিয়ে যেতে যেতে ঘোষণা করলেন: ‘প্রভু, প্রভু, স্নেহশীল, দয়াবান ঈশ্বর; ক্রোধে ধীর, কৃপা ও বিশ্বস্ততায় ধনবান।’
মোশি সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে মাথা নত করে প্রণিপাত করলেন; বললেন, ‘প্রভু, আমি যদি সত্যিই তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, দোহাই তোমার, প্রভু, আমাদের মাঝখানে থেকে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে চল। হ্যাঁ, এরা তো কঠিনমনা এক জাতি; কিন্তু তুমি আমাদের শঠতা ও পাপ ক্ষমা কর: আমাদের তোমার আপন উত্তরাধিকার-রূপে গ্রহণ কর।’
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত দানিয়েল ৩
ধুয়ো: স্তবস্তুতি ও গৌরবের যোগ্য তুমি চিরকাল।
ধন্য তুমি, প্রভু, আমাদের পিতৃপুরুষদের পরমেশ্বর। [ধুয়ো]
ধন্য তোমার গৌরবময় পবিত্র নাম। [ধুয়ো]
ধন্য তুমি তোমার গৌরবময় পবিত্র মন্দির-মাঝে। [ধুয়ো]
ধন্য তুমি তোমার রাজাসনে। [ধুয়ো]
ধন্য তুমি, খেরুব বাহনে আসীন হয়ে তুমি যে সাগরতল তলিয়ে দেখ। [ধুয়ো]
ধন্য তুমি আকাশমণ্ডলের গগনতলে। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের দ্বিতীয় পত্র থেকে পাঠ (১৩:১১-১৩)
ভাই-বোনেরা, আনন্দ কর; পরমসিদ্ধিই হোক তোমাদের লক্ষ্য, পরস্পরের অন্তরে সৎসাহস যোগাও, একমন হও, শান্তিতে থাক; তাহলে ভালবাসা ও শান্তিবিধাতা ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন।
পবিত্র চুম্বনে পরস্পরকে প্রীতি-শুভেচ্ছা জানাও। সকল পবিত্রজন তোমাদের প্রীতি-শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ, ঈশ্বরের ভালবাসা, ও পবিত্র আত্মার সহভাগিতা তোমাদের সকলের সঙ্গে থাকুক।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার গৌরব হোক,
যিনি আছেন, যিনি ছিলেন, যিনি আসছেন।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৩:১৬-১৮)
একদিন যিশু নিকোদেমকে বললেন, ‘ঈশ্বর জগৎকে এতই ভালবেসেছেন যে, তাঁর একমাত্র পুত্রকে দান করেছেন, তাঁর প্রতি যে কেউ বিশ্বাস রাখে, তার যেন বিনাশ না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পেতে পারে।
কেননা ঈশ্বর জগৎকে বিচার করার জন্য তাঁর পুত্রকে জগতে প্রেরণ করেননি, কিন্তু এজন্য, জগৎ যেন তাঁর দ্বারা পরিত্রাণ পেতে পারে।
তাঁর প্রতি যে বিশ্বাসী, তার বিচার হয় না; কিন্তু যে অবিশ্বাসী, তার বিচার হয়েই গেছে, যেহেতু ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের নামে বিশ্বাস করেনি।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
নিসার বিশপ সাধু গ্রেগরির পত্রাবলি
যারা মৃত্যু থেকে অনন্ত জীবনের উদ্দেশে নবজন্ম নিয়েছে ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তেমন অনুগ্রহ লাভের যোগ্য হয়ে উঠেছে, যেহেতু তারা পবিত্র ত্রিত্বেরই দানের ফলে জীবনদায়ী শক্তির সহভাগী হয়ে ওঠে, সেজন্য পরিত্রাণদায়ী বাপ্তিস্মে ত্রিত্বের একটা নাম মাত্রও উচ্চারিত না হলে অনুগ্রহটি পূর্ণাঙ্গ নয়; কেননা নবজন্ম-রহস্য পবিত্র আত্মায় ছাড়া কেবল পিতা ও পুত্রে সাধিত নয়; একই প্রকারে পুত্রের নাম উচ্চারণ না করলে কেবল পিতা ও পবিত্র আত্মার নামে পূর্ণাঙ্গ ঐশজীবন-দায়ী বাপ্তিস্ম কার্যকর নয়; আবার আত্মাকে বাতিল করলে কেবল পিতা ও পুত্রে আমাদের পুনরুত্থানের অনুগ্রহ সাধিত নয়। এজন্য যে তিন ব্যক্তিত্ব এ নাম দ্বারা নিজেদের জ্ঞাত করেছেন, আমরা আমাদের আত্মা ত্রাণ করার সমস্ত প্রত্যাশা ও প্রত্যয় সেই তিন ব্যক্তিত্বেই রাখি; এবং আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের সেই পিতায় বিশ্বাস করি যিনি জীবনের উৎস, পিতার সেই একমাত্র পুত্রে বিশ্বাস করি যিনি—প্রেরিতদূতের কথা অনুসারে—হলেন জীবন-প্রণেতা, ও সেই পবিত্র আত্মায় বিশ্বাস করি যাঁর বিষয়ে প্রভু বলেন, আত্মাই জীবনদায়ী (যোহন ৬:৬৩)।
আর যেমনটি বলেছি, যেহেতু মৃত্যু থেকে মুক্ত এই আমাদের কাছে পবিত্র বাপ্তিস্মে পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মায় বিশ্বাস দ্বারাই অমরত্বের অনুগ্রহ দান করা হয়, সেজন্য এই বিশেষ কারণ দ্বারা উদ্দীপিত হয়ে আমরা একথা সমর্থন করি যে, হীন কিবা সৃষ্ট কিবা পিতার ঐশমর্যাদার অযোগ্য প্রকার কোন কিছুই পবিত্র ত্রিত্বকে আরোপণীয় নয়; এর কারণ হল এ যে, পবিত্র ত্রিত্বে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে যে জীবন প্রাপ্য, আমাদের সেই জীবন একটিমাত্র; আর তেমন জীবন বিশ্বজগতের ঈশ্বর থেকেই ঠিক যেন এক উৎস থেকেই নির্গত হয়ে ও পুত্রের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে পবিত্র আত্মায় সিদ্ধি লাভ করে।
তেমন স্পষ্ট নিশ্চয়তায় স্থিতমূল হয়ে ও দেওয়া আদেশ অনুসারেই আমরা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করি, ও যেভাবে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছি সেভাবে বিশ্বাসও করি, ও যেভাবে বিশ্বাস করি সেভাবে উপলব্ধিও করি; যার ফলে বাপ্তিস্ম, বিশ্বাস ও আমাদের উপলব্ধি পূর্ণ ঐক্য অনুসারেই পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মায় বিরাজিত।
সুতরাং যে সকল ভক্তজন এ সত্যের নিয়ম পালন ক’রে তিন ব্যক্তিত্বকে স্বীকার করে, ও প্রকৃত ভক্তি ও ধর্মভাবের সঙ্গে এক এক ব্যক্তিত্বকে নিজ নিজ গুণ অনুসারে জানে, ও বিশ্বাস করে যে, একটিমাত্র ঈশ্বরত্ব, একটিমাত্র মঙ্গলময়তা, একটিমাত্র আধিপত্য, একটিমাত্র অধিকার ও একটিমাত্র শক্তি রয়েছে; আবার, যে সকল ভক্তজন তেমন রাজত্বের পরাক্রম বাতিল করে না, বহু-ঈশ্বরবাদ সমর্থনেও ভ্রষ্ট হয় না, তিন ব্যক্তিত্বকে মিশ্রিতও করে না, পবিত্র ত্রিত্বকে আলাদা ও ভিন্ন প্রকার বস্তু দ্বারাও গঠন করে না, কিন্তু পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মায় নিজেদের পরিত্রাণের সমস্ত প্রত্যাশা রেখে বিশ্বাস-তত্ত্ব সরলভাবেই গ্রহণ করে, তারাই আমাদের সঙ্গে একমত, ও তাদের সঙ্গে প্রভুর সহভাগিতা লাভ করতে আমরা প্রার্থনা করি।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ২৩
ধুয়ো: ঈশ্বর আমাদের হৃদয়ে তাঁর পুত্রের আত্মাকে প্রেরণ করেছেন,
যিনি ডাকতে থাকেন, ‘আব্বা, পিতা!’
প্রভুতে আনন্দধ্বনি তোল, ধার্মিকজন সকল,
ন্যায়নিষ্ঠদের মুখেই প্রশংসাগান সমীচীন।
সেতারের সুরে প্রভুকে জানাও ধন্যবাদ,
দশতন্ত্রী বীণা বাজিয়ে তাঁর উদ্দেশে কর স্তবগান। [ধুয়ো]
ন্যায়সঙ্গতই তো প্রভুর বাণী,
বিশ্বস্ততায় সাধিত তাঁর প্রতিটি কাজ।
তিনি ধর্মময়তা ও ন্যায় ভালবাসেন;
পৃথিবী প্রভুর কৃপায় পরিপূর্ণ। [ধুয়ো]
প্রভুর বাণীতেই গড়ে উঠল আকাশমণ্ডল,
তাঁর মুখের ফুৎকারেই তার যত বাহিনীর আবির্ভাব।
তিনি যেন চর্মপুটেই সংগ্রহ করেন সাগরের জল,
ভাণ্ডারে রাখেন অতলের জল। [ধুয়ো]
প্রভুকে ভয় করুক সমগ্র পৃথিবী,
তাঁকে শ্রদ্ধা করুক সকল জগদ্বাসী।
কারণ তিনি কথা বলতেই সবই আবির্ভূত হয়,
তিনি আজ্ঞা দিতেই সবই উপস্থিত হয়। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, আমাদের পরমেশ্বর, এই সাক্রামেন্ত গ্রহণের ফলে,
এবং তুমি যে তিন ব্যক্তিত্বে এক ঈশ্বর তাও স্বীকারের ফলে
আমরা যেন দেহমনে তোমার পরিত্রাণ লাভ করতে পারি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
খ্রিষ্টের পরমপবিত্র দেহরক্ত
![]() যিশু তাদের বললেন, আমিই সেই জীবনময় রুটি, যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে: যদি কেউ এই রুটি খায়, তবে সে অনন্তকাল জীবিত থাকবে, আর আমি যে রুটি দান করব, তা আমার নিজের মাংস, জগতের জীবনের জন্য। (যোহন ৬:৫১) |
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে খ্রিষ্ট ঈশ্বর, তুমি এক অপূর্ব সাক্রামেন্তের আড়ালে
আমাদের কাছে তোমার যন্ত্রণাভোগের স্মারক চিহ্ন রেখে গেছ।
আশীর্বাদ কর: তোমার দেহরক্তের পবিত্র মহারহস্যের প্রতি
আমরা যেন এমন শ্রদ্ধা জানাই,
যাতে তোমার মুক্তিকর্মের শুভফল উত্তরোত্তর উপলব্ধি করতে পারি।
পবিত্র আত্মার ঐক্যে পিতা ঈশ্বরের সঙ্গে
তুমি ঈশ্বররূপে জীবিত আছ ও রাজত্ব কর যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
দ্বিতীয় বিবরণ থেকে পাঠ (৮:২-৩,১৪খ-১৬ক)
একদিন মোশি জনগণকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘সেই দীর্ঘ যাত্রাপথের কথাই স্মরণ কর, যে পথ দিয়ে তোমার পরমেশ্বর প্রভু তোমাকে নমিত করার জন্য, তোমাকে পরীক্ষা করার জন্য, এবং তোমার অন্তঃস্থলে কি কি আছে ও তুমি তাঁর আজ্ঞা পালন করবে কিনা তা জানবার জন্য এই চল্লিশ বছর ধরে তোমাকে চালনা করেছেন।
হ্যাঁ, তিনি তোমাকে নমিত করলেন, তোমাকে ক্ষুধার জ্বালা ভোগ করালেন, পরে তোমাকে সেই মান্নায় পরিপুষ্ট করলেন, যা তোমার অজানা ছিল, তোমার পিতৃপুরুষদেরও অজানা ছিল, যেন তিনি তোমাকে বোঝাতে পারেন যে, মানুষ কেবল রুটিতে বাঁচে না, কিন্তু প্রভুর মুখ থেকে যা কিছু নির্গত হয়, তাতেই মানুষ বাঁচে।
তুমি তোমার পরমেশ্বর সেই প্রভুকে ভুলে যাবে না, যিনি মিশর দেশ থেকে, দাসত্ব-অবস্থা থেকেই তোমাকে বের করে এনেছেন, যিনি সেই ভয়ঙ্কর ও বিরাট মরুপ্রান্তরের মধ্য দিয়ে, জ্বালাদায়ী বিষাক্ত সাপ ও বিছেতে ভরা জলহীন মরুভূমির মধ্য দিয়ে তোমাকে চালনা করলেন এবং অধিক কঠিন পাথরময় শৈল থেকে তোমার জন্য জল বের করলেন, যিনি তোমার পিতৃপুরুষদের কাছে অজানা সেই মান্না দিয়ে মরুপ্রান্তরে তোমাকে পরিপুষ্ট করলেন।’
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ১৪৭
ধুয়ো: যেরুশালেম!
প্রভুর মহিমাকীর্তন কর।
যেরুশালেম! প্রভুর মহিমাকীর্তন কর;
সিয়োন! তোমার পরমেশ্বরের প্রশংসা কর,
তিনি যে সুদৃঢ় করেন তোমার নগরদ্বারের অর্গল,
তোমার সন্তানদের আশিসধন্য করেন তোমার অন্তঃস্থলে। [ধুয়ো]
তোমার চতুঃসীমানায় শান্তি স্থাপন করেন,
সেরা গমের ফসলে তোমাকে পরিতৃপ্ত করেন।
তিনি এ পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন তাঁর বচন,
তাঁর বাণী দ্রুত বেগে ছুটে যায়। [ধুয়ো]
তিনি তাঁর আপন বাণী ঘোষণা করেন যাকোবের কাছে,
তাঁর সমস্ত বিধি ও সুবিচার ইস্রায়েলের কাছে।
অন্যান্য দেশের জন্য তাই করলেন, এমন নয়,
অন্য কেউ জানতে পারেনি তাঁর সমস্ত সুবিচার। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (১০:১৬-১৭)
প্রিয়জনেরা, সেই যে স্তুতিবাদের পানপাত্র, যা নিয়ে আমরা ‘ধন্য’ স্তুতিবাদ উচ্চারণ করি, তা কি খ্রিষ্টের রক্তে সহভাগিতা নয়? আর সেই যে রুটি, যা আমরা ছিঁড়ে টুকরো করি, তা কি খ্রিষ্টের দেহে সহভাগিতা নয়?
অতএব, যখন একরুটি, তখন অনেকে হয়েও আমরা একদেহ, কারণ আমরা সকলেই সেই একরুটির অংশভাগী।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। গীতিগাথা
এই দেখ! স্বর্গদূতদের খাদ্য,
যা পথিক আমাদের জন্য জীবন-পাথেয়;
সন্তানদেরই প্রকৃত খাদ্য,
যা পশুদের দেওয়ার নয়।
তা ছিল নানা চিহ্নে পূর্বঘোষিত:
ইসহাকে বলীকৃত,
পাস্কা-মেষশিশুতে প্রদর্শিত,
সেই মান্না-খাদ্যে পূর্বপুরুষদের কাছে নিবেদিত।
হে উত্তম পালক, হে প্রকৃত রুটি যিশু,
আমাদের প্রতি সদয় হও;
আমাদের পালন কর, আমাদের রক্ষা কর,
জীবিতের দেশে একদিন আমাদের দেখাও তোমার সকল মঙ্গলদান।
তুমি যে সবই জান, তুমি যে সবই পার,
তুমি যে খাদ্যরূপে নিজেকে দান করে মর্তবাসী এই আমাদের পরিতৃপ্ত কর,
তোমার নিখিল সাধুসাধ্বীর সাহচর্যে
তোমার এই ভাইবোনদের স্বর্গীয় ভোজে চালনা কর।
৮। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমিই সেই জীবনময় রুটি, যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে—প্রভুর উক্তি;
যদি কেউ এই রুটি খায়, তবে সে অনন্তকাল জীবিত থাকবে।
❖ আল্লেলুইয়া।
৯। সুসমাচার
✚ যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (৬:৫১-৫৮)
একদিন যিশু সমবেত লোকদের উদ্দেশ করে বললেন, ‘আমিই সেই জীবনময় রুটি, যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে: যদি কেউ এই রুটি খায়, তবে সে অনন্তকাল জীবিত থাকবে, আর আমি যে রুটি দান করব, তা আমার নিজের মাংস—জগতের জীবনের জন্য!’
এতে ইহুদীরা নিজেদের মধ্যে তর্ক করতে লাগল; তারা বলছিল, ‘লোকটা কী করে তার নিজের মাংসটা আমাদের খেতে দিতে পারে?’
যিশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি সত্যি বলছি, তোমরা যদি মানবপুত্রের মাংস না খাও ও তাঁর রক্ত পান না কর, তবে তোমাদের অন্তরে কোন জীবন নেই। যে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে, সে অনন্ত জীবন পেয়ে গেছে, আর আমি শেষ দিনে তাকে পুনরুত্থিত করব; কারণ আমার মাংস প্রকৃত খাদ্য ও আমার রক্ত প্রকৃত পানীয়।
যে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে, সে আমাতে বসবাস করে আর আমি তার অন্তরে বসবাস করি। যেভাবে জীবনময় পিতা আমাকে প্রেরণ করেছেন, আর আমি পিতারই জন্য জীবিত, সেইভাবে যে আমাকে খায়, সে আমার জন্যই জীবিত থাকবে। এটিই সেই রুটি, যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে—পিতৃপুরুষেরা যা খেয়েছিলেন, এই রুটি সেই রুটির মত নয়, তাঁরা তো মারা গেছেন; যে কেউ এই রুটি খায়, সে অনন্তকাল জীবিত থাকবে।’
✦ প্রভুর বাণী।
১০। উপদেশ
বিশপ সাধু আগস্তিনের উপদেশ
ঈশ্বরের যজ্ঞবেদির উপরে তোমরা যা দেখতে পাচ্ছ, তা একটা রুটি ও একটা পানপাত্র। একথা তোমাদের নিজেদের চোখও সমর্থন করে, কিন্তু তোমাদের বিশ্বাস তোমাদের উদ্বুদ্ধ করে যাতে সেই রুটিতে খ্রিষ্টের দেহ ও সেই আঙুররসে খ্রিষ্টের রক্ত দেখ। ব্যাপারটা স্বল্প কথায় ব্যক্ত, কারণ সরল বিশ্বাসের পক্ষে একথা যথেষ্টই বটে, কিন্তু তবু বিশ্বাসও উদ্বুদ্ধ হতে ইচ্ছুক। আসলে তোমরা আমাকে বলতে পার: তুমি আমাদের একথা বিশ্বাস করতে শিখিয়েছ, এবার তা ব্যাখ্যা কর, যাতে তা উপলব্ধিও করতে পারি। বাস্তবিকই কারও কারও মনে এ চিন্তার উদয় হতে পারে: আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্ট কার কাছ থেকে দেহ গ্রহণ করলেন তা আমরা জানি, কুমারী মারীয়া থেকেই গ্রহণ করলেন। শিশুকালে তিনি দুধ খেলেন, পালিত হলেন, যৌবনকাল পর্যন্ত বেড়ে উঠলেন, ক্রুশে প্রাণত্যাগ করলেন, তাঁকে ক্রুশ থেকে নামানো হল ও সমাধি দেওয়া হল, ও তৃতীয় দিনে তিনি পুনরুত্থান করলেন; এবং যেদিন তিনি ইচ্ছা করলেন সেদিন সশরীরে স্বর্গে আরোহণ করলেন; সেখান থেকে তিনি জীবিত ও মৃতদের বিচার করতে আসবেন, আর এখন তিনি পিতার ডান পাশে সমাসীন: তবে এ রুটি কেমন করে তাঁর দেহ হতে পারে? আর এই পানপাত্রে কেমন করে তাঁর রক্ত থাকতে পারে?
এজন্যই, ভাইবোনেরা, এ বিষয়গুলো সাক্রামেন্ত বলে অভিহিত, কারণ এগুলোতে যা দেখতে পাই এবং আমরা যা বুঝি, তা তা থেকে ভিন্ন। আমরা যা দেখি, আকারে তা জড়পদার্থ, কিন্তু যা উপলব্ধি করি, তা আত্মিক ফলের অধিকারী।
তুমি যদি খ্রিষ্টের দেহ উপলব্ধি করতে ইচ্ছা কর, তাহলে শোন প্রেরিতদূত নিজ ভক্তদের কী বলেন: তোমরা নিজেরাই খ্রিষ্টের দেহ ও এক একজন নিজ নিজ ভূমিকা অনুসারে তাঁর অঙ্গগুলো (১ করি ১২:২৭)। ফলত তোমরা নিজেরাই যখন খ্রিষ্টের দেহ ও তাঁর অঙ্গগুলো, তখন তোমাদের নিজেদের রহস্যই প্রভুর ভোজনপাটের উপরে রাখা হয়, ও তোমাদের নিজেদের পবিত্র রহস্যকেই তোমরা গ্রহণ কর। তোমরা নিজেরাই যা, তার কাছে তোমরা উত্তরে বল ‘আমেন,’ আর তাই বলে ব্যাপারটা স্বাক্ষরিত কর। আসলে তুমি শোন: ‘খ্রিষ্টের দেহ,’ ও উত্তরে বল, ‘আমেন।’ সুতরাং তোমার ‘আমেন’ যেন সত্য হয়, সত্যিকারেই খ্রিষ্টের দেহ হও!
তবে খ্রিষ্টের দেহ সেই রুটিতে কেন? এক্ষেত্রে আমরা নিজেদের কথা উপস্থাপন করব না, বরং স্বয়ং প্রেরিতদূতের কথাই শুনি যিনি এ সাক্রামেন্ত সম্বন্ধে বলেন: যখন একরুটি, তখন আমরা অনেক হয়েও একদেহ (১ করি ১০:১৭)। একথা উপলব্ধি করে আনন্দ কর: ঐক্য, সত্য, ভক্তি, ভালবাসা! ‘একরুটি’: কেইবা এ একরুটি? যখন একরুটি, তখন আমরা অনেক হয়েও একদেহ। একথা ভাব যে, রুটি গমের একটামাত্র দানা দিয়ে তৈরী নয়, বহু দানা দিয়েই তৈরী। ফলে তোমরা যা দেখ, তা-ই হও; আর তোমরা যা হও, তা-ই গ্রহণ কর! রুটির বিষয়ে কথা ব’লে প্রেরিতদূত নিজেই একথা বলেছেন। এখন পানপাত্র সম্বন্ধে আমাদের কী উপলব্ধি করা উচিত, প্রেরিতদূত এবিষয়ে কোন কথা না বললেও তা ইতিমধ্যে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন; কেননা যেমন রুটির দৃশ্য আকার পেতে হলে গমের বহু দানা একপিণ্ড হবার জন্য একত্র করা হয় যাতে শাস্ত্র ভক্তদের সম্বন্ধে যা বলে তথা, তারা একহৃদয় একাত্মা ছিল (প্রেরিত ৪:৩২), তা বাস্তবায়িত হতে পারে, আঙুররসের বেলায়ও তেমনি ঘটে। ভাইবোনেরা, একটু চিন্তা কর, আঙুররস কোথা থেকে পাওয়া যায়? বহুদানা মিলে আঙুরফলের একটা ছড়া হয়, কিন্তু দানাগুলোর রস ঐক্যেই একীভূত হয়।
এভাবে নিজ বেদির উপরে আমাদের শান্তি ও ঐক্যের রহস্য পবিত্রীকৃত করায় প্রভু আমাদের মুদ্রাঙ্কিত করেছেন, তিনি চেয়েছেন আমরা তাঁরই হব। যে কেউ ঐক্য-রহস্য গ্রহণ করে ও শান্তির বন্ধন রক্ষা করে না, সে নিজের পরিত্রাণের জন্য নয়, আত্মদণ্ডের জন্যই রহস্যটি গ্রহণ করে।
১১। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১২। অর্থদান
১৩। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৪। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৫। ধ্যান-গীতি: সাম ২৩
ধুয়ো: প্রভু একথা বলছেন:
যে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে,
সে আমাতে বসবাস করে
আর আমি তার অন্তরে বসবাস করি। আল্লেলুইয়া।
প্রভু আমার পালক;
অভাব নেই তো আমার;
আমায় তিনি শুইয়ে রাখেন নবীন ঘাসের চারণমাঠে,
আমায় নিয়ে যান শান্ত জলের কূলে;
তিনি সঞ্জীবিত করেন আমার প্রাণ,
তাঁর নামের খাতিরে আমায় চালনা করেন ধর্মপথে।
মৃত্যু-ছায়ার উপত্যকাও যদি পেরিয়ে যাই,
আমি কোন অনিষ্টের ভয় করি না, তুমি যে আমার সঙ্গে আছ।
তোমার যষ্টি, তোমার পাচনি আমাকে সান্ত্বনা দেয়।
আমার সম্মুখে তুমি সাজাও ভোজনপাট আমার শত্রুদের সামনে;
আমার মাথা তুমি তৈলসিক্ত কর;
আমার পানপাত্র উচ্ছলিত।
মঙ্গল ও কৃপাই হবে আমার সহচর
আমার জীবনের সমস্ত দিন ধরে,
আমি প্রভুর গৃহে ফিরব,
চিরদিনের মত।
১৬। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে খ্রিষ্ট প্রভু, তোমার অমূল্য দেহরক্ত গ্রহণে যে ঐশজীবনের আস্বাদ পেলাম, তোমার আশীর্বাদে যেন চিরকালের মতই
সেই ঐশজীবনের পূর্ণতা ভোগ করতে পারি।
তুমি ঈশ্বররূপে জীবিত আছ ও রাজত্ব কর যুগে যুগান্তরে
সকলে: আমেন।
১৭। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
পরমারাধ্য যিশুহৃদয়
![]() যা মানুষের প্রতি তাঁর ভালবাসার চিহ্ন। |
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আমাদের মিনতিতে সাড়া দিয়ে আশীর্বাদ কর:
আমরা যারা তোমার প্রিয় পুত্রের হৃদয়-মাহাত্ম্য বন্দনা ক’রে
আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসার শুভদান-সকল স্মরণ করি,
সেই আমরা যেন
স্বর্গীয় মঙ্গলদানের সেই উৎস থেকে উচ্ছ্বসিত অনুগ্রহধারায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
দ্বিতীয় বিবরণ থেকে পাঠ (৭:৬-১১)
একদিন মোশি জনগণকে উদ্দেশ করে বললেন: ‘তুমি তোমার পরমেশ্বর প্রভুর উদ্দেশে পবিত্রীকৃতই এক জাতি: পৃথিবীর বুকে যত জাতি রয়েছে, তাদের মধ্য থেকে তোমার পরমেশ্বর প্রভু তাঁর নিজস্ব অধিকার হবার জন্য তোমাকেই বেছে নিয়েছেন।
সকল জাতির চেয়ে তোমরা সংখ্যায় বড়, এজন্যই যে প্রভু তোমাদের প্রতি আসক্ত হয়েছেন ও তোমাদের বেছে নিয়েছেন, তা নয়—প্রকৃতপক্ষে সকল জাতির মধ্যে তোমরা সংখ্যায় ছোট— বরং প্রভু তোমাদের ভালবাসেন এবং তোমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে যে শপথ করেছেন তা তিনি রক্ষা করেন বলেই প্রভু শক্ত হাতে তোমাদের বের করে এনেছেন এবং দাসত্ব-অবস্থা থেকে, সেই মিশর-রাজ ফারাওর হাত থেকে তোমাদের পক্ষে মুক্তিকর্ম সাধন করেছেন।
সুতরাং জেনে রেখ: তোমার পরমেশ্বর প্রভু যিনি, তিনিই পরমেশ্বর; তিনি বিশ্বস্ত ঈশ্বর; যারা তাঁকে ভালবাসে, যারা তাঁর আজ্ঞা পালন করে, সহস্র পুরুষ ধরেই তিনি তাদের সঙ্গে আপন সন্ধি ও কৃপা রক্ষা করেন। কিন্তু যারা তাঁকে ঘৃণা করে, তাদের, সেই ব্যক্তিদেরই সংহার করায় তাদের প্রতিফল দেন; যে কেউ তাঁকে ঘৃণা করে, দেরি না করেই তিনি তাকে, সেই ব্যক্তিকেই প্রতিফল দেন।
তাই আমি আজ তোমার জন্য যে সমস্ত আজ্ঞা, বিধি ও বিধান জারি করছি, তুমি সেই সমস্ত সযত্নে পালন করবে।’
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ১০৩
ধুয়ো: প্রভুর কৃপা অনাদিকাল থেকে চিরকালস্থায়ী তাদেরই প্রতি,
তাঁকে ভয় করে যারা।
প্রাণ আমার, প্রভুকে বল ধন্য;
আমার অন্তরে যা কিছু আছে, ধন্য কর তাঁর পবিত্র নাম।
প্রাণ আমার, প্রভুকে বল ধন্য;
ভুলে যেয়ো না তাঁর সমস্ত উপকার: [ধুয়ো]
তিনিই তো তোমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করেন,
তোমার সমস্ত রোগ-ব্যাধি নিরাময় করেন,
গহ্বর থেকে মুক্ত করেন তোমার জীবন,
তোমাকে কৃপা ও স্নেহে করেন মুকুট-ভূষিত। [ধুয়ো]
সকল অত্যাচারিতের প্রতি
ধর্মময়তা ও ন্যায়ই প্রভুর আচরণ।
তিনি মোশিকে জানালেন তাঁর পথসকল,
ইস্রায়েল সন্তানদের কাছে তাঁর কর্মকীর্তি। [ধুয়ো]
প্রভু স্নেহশীল, দয়াবান,
ক্রোধে ধীর, কৃপায় ধনবান।
আমাদের প্রতি তাঁর আচরণ আমাদের পাপরাশির অনুপাতে নয়,
আমাদের প্রতি তাঁর প্রতিদান আমাদের যত অপরাধের অনুপাতে নয়। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
প্রেরিতদূত সাধু যোহনের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (৪:৭-১৬)
প্রিয়জনেরা, এসো, আমরা পরস্পরকে ভালবাসি,
কারণ ভালবাসা ঈশ্বর থেকে উদ্গত,
এবং যে কেউ ভালবাসে,
সে ঈশ্বর থেকে জনিত আর ঈশ্বরজ্ঞান লাভ করে।
যে ভালবাসে না, সে ঈশ্বরকে জানল না, কারণ ঈশ্বর ভালবাসা।
এতেই আমাদের প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসা প্রকাশিত হয়েছে:
ঈশ্বর তাঁর একমাত্র পুত্রকে জগতে প্রেরণ করেছেন
তাঁর দ্বারাই আমরা যেন জীবন পাই।
আর এতেই ভালবাসার অর্থ:
আমরা যে ঈশ্বরকে ভালবেসেছিলাম এমন নয়,
কিন্তু তিনি আমাদের ভালবাসলেন
এবং আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত হতে নিজ পুত্রকে প্রেরণ করলেন।
প্রিয়জনেরা, ঈশ্বর যখন এমনইভাবে আমাদের ভালবেসেছেন,
তখন আমাদেরও পরস্পরকে ভালবাসা উচিত।
ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি;
আমরা যদি ঈশ্বরকে ভালবাসি,
তাহলে ঈশ্বর আমাদের অন্তরে রয়েছেন
এবং তাঁর ভালবাসা আমাদের অন্তরে সিদ্ধি লাভ করে।
এতেই আমরা জানি যে,
আমরা তাঁর মধ্যে রয়েছি আর তিনিও আমাদের অন্তরে রয়েছেন,
কারণ তিনি তাঁর আত্মাকে আমাদের দান করেছেন।
আর আমরা দেখেছি আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,
পিতা পুত্রকে জগতের ত্রাণকর্তারূপে প্রেরণ করেছিলেন।
যে কেউ স্বীকার করে, ‘যিশু ঈশ্বরের পুত্র’,
ঈশ্বর তার অন্তরে বসবাস করেন, সেও ঈশ্বরে বসবাস করে।
আর আমরাই সেই ভালবাসা জেনেছি ও বিশ্বাস করেছি,
—আমাদের প্রতি ঈশ্বরের যে ভালবাসা।
ঈশ্বর ভালবাসা; ভালবাসায় যার আবাস,
সে ঈশ্বরে বসবাস করে ও ঈশ্বর তার অন্তরে বসবাস করেন।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমার জোয়াল কাঁধে তুলে নাও—একথা বলছেন প্রভু;
আমার কাছ থেকে শিখে নাও, কারণ আমি কোমল ও নম্রহৃদয়।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (১১:২৫-৩০)
একদিন যিশু বলে উঠলেন, ‘হে পিতা, হে স্বর্গমর্তের প্রভু, আমি তোমাকে ধন্য বলি, কারণ তুমি প্রজ্ঞাবান ও বুদ্ধিমানদের কাছে এই সকল বিষয় গুপ্ত রেখে শিশুদেরই কাছে তা প্রকাশ করেছ; হ্যাঁ, পিতা, তোমার প্রসন্নতায় তুমি তা-ই নিরূপণ করলে। পিতা আমার হাতে সবই তুলে দিয়েছেন, এবং পিতা ছাড়া আর কেউই পুত্রকে জানে না, পিতাকেও কেউ জানে না সেই পুত্র ছাড়া ও তারাই ছাড়া, যাদের কাছে পুত্র নিজেই তাঁকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন।
তোমরা, পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত যারা, সকলে আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব। আমার জোয়াল কাঁধে তুলে নাও, ও আমার কাছ থেকে শিখে নাও, কারণ আমি কোমল ও নম্রহৃদয়; আর তোমরা নিজ নিজ প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাবে; হ্যাঁ, আমার জোয়াল সুবহ, ও আমার বোঝা লঘুভার।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
বিশপ সাধু বনাভেন্তুরার ‘রচনাবলি’
হে বিমুক্ত মানুষ, ভেবে দেখ, যিনি তোমার জন্য ক্রুশে ঝুলছেন, যাঁর মৃত্যু মৃতদের সঞ্জীবিত করে, যাঁর প্রয়াণের জন্য স্বর্গমর্ত শোকার্ত ও কঠিন পাথরও বিদীর্ণ হয়, তিনি কেমন মহত্ত্ব ও স্বরূপের অধিকারী! উপরন্তু, ক্রুশে নিদ্রিত সেই খ্রিষ্টের পাশ থেকে যাতে মণ্ডলী গড়া হয়, এবং যাঁকে তারা বিদ্ধ করেছিল তাঁরই দিকে তারা চেয়ে থাকবে (যোহন ১৯:৩৭), শাস্ত্রের এবাণী যেন পূর্ণতা লাভ করে, ঈশ্বরের ব্যবস্থা এমনটিও হতে দিল যে, সৈন্যদের একজন সেই পবিত্র বুক বিঁধিয়ে দিয়ে খুলে দেবে, যেন জলের সঙ্গে রক্ত নির্গত হওয়ায় আমাদের পরিত্রাণের সেই মূল্য পাতিত হয় যা তেমন উৎস থেকে, অর্থাৎ খ্রিষ্টের হৃদয়ের গুপ্তস্থান থেকে নির্গত হয়ে মণ্ডলীর সাক্রামেন্তগুলোকে জীবনদায়ী শক্তি দান করে, ও যারা ইতিমধ্যে খ্রিষ্টে জীবিত, তাদের এমন জীবনময় পানীয়ের উৎস দান করে, যা অনন্ত জীবনের উদ্দেশে প্রবাহিত (যোহন ৪:১৪)।
অতএব, হে খ্রিষ্টের প্রেমিকা আত্মা, ওঠ! সেই কপোতের মত হও যা গভীর গিরিসঙ্কটের দেওয়ালের ফাটলে ফাটলে বাসা বাঁধে (যেরে ৪৮:২৮); যেমন চড়ুই পাখি খুঁজে পায় বাসা (সাম ৮৪:৪ দ্রঃ), তেমনি তুমি ওইখানে নিত্যই জেগে থাক; দোয়েলের মত তুমি পবিত্র প্রেমের শাবকদের ওইখানে লুকিয়ে রাখ, ওইখানে মুখ দাও, যাতে পরিত্রাতার উৎসধারা থেকে জল তুলে আনতে পার (ইশা ১২:১৩ দ্রঃ)। কেননা ওইখানে তো পরমদেশের মাঝখান থেকে বহির্গত সেই জলের উৎস রয়েছে যা আলাদা আলাদা হয়ে চতুর্মুখী হল (আদি ১:১০ দ্রঃ) ও ভক্তদের হৃদয়ে প্রবাহিত হয়ে সমগ্র পৃথিবীকে উর্বর ও জলসিক্ত করে।
হে ঈশ্বরভক্ত প্রাণ, তুমি যেই হও না কেন, জীবনের ও আলোর তেমন উৎসের দিকে গভীর আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ধাবিত হও, ও হৃদয়ের আন্তরিক শক্তিতে তাঁর দিকে চিৎকার করে বল: হে পরাৎপর ঈশ্বরের অবর্ণনীয় সৌন্দর্যকান্তি, হে সনাতন আলোর স্বচ্ছ বিভা! তুমি সমস্ত জীবনের জীবনদায়ী জীবন, সমস্ত আলোর আলোদানকারী আলো, তুমি সেই জ্যোতি যা প্রথম উষালগ্ন থেকেই তোমার ঈশ্বরত্বের সিংহাসনের সামনে উজ্জ্বল সেই বহুবিধ জ্যোতিষ্ক সনাতন জ্যোতি দানে নিত্যই উজ্জ্বল করে রাখ!
হে সনাতন, অগম্য, প্রভাময় ও মধুর উৎস-প্রবাহ যা সকল মরণশীলদের চোখে লুক্কায়িত, তোমার গভীরতা অতলান্ত, তোমার উচ্চতা অচূড়াময়, তোমার দৈর্ঘ্য প্রান্তহীন, তোমার পবিত্রতা অবিচল।
তোমা থেকেই সেই নদী নির্গত যা ঈশ্বরের নগরী আনন্দিত করে তোলে (সাম ৪৬:৫), যাতে উৎসব-মুখর ভিড়ের মাঝে হর্ষধ্বনি তুলে, ধন্যবাদগীতি গেয়ে (সাম ৪২:৫) আমরা তোমার উদ্দেশে স্তুতিগান গাইতে পারি, এবং আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতার সাক্ষ্যদানে দেখাতে পারি যে, তোমাতেই জীবনের উৎস, তোমার আলোতেই আমরা দেখি আলো (সাম ৩৬:১০)।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ৩৪
ধুয়ো: সৈন্যদের একজন তাঁর বুকের পাশটিতে বর্শা বিঁধিয়ে দিল
আর তখনই নিঃসৃত হল রক্ত আর জল।
সর্বদাই আমি প্রভুকে বলব ধন্য,
নিয়তই আমার মুখে তাঁর প্রশংসাবাদ।
প্রভুতে গর্ব করে আমার প্রাণ,
শুনুক, আনন্দ করুক বিনম্র সকল।
আমার সঙ্গে প্রভুর মহিমাকীর্তন কর,
এসো, আমরা একসঙ্গে তাঁর নাম বন্দনা করি।
প্রভুর অন্বেষণ করেছি, তিনি আমাকে সাড়া দিলেন,
যত ভয়-শঙ্কা থেকে আমাকে উদ্ধার করলেন।
তাঁর দিকে চেয়ে দেখ, তোমরা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,
লজ্জায় ঢেকে যাবে না কো তোমাদের মুখ।
এই দীনহীন ডাকে, প্রভু শোনেন,
তার সকল সঙ্কট থেকে তাকে পরিত্রাণ করেন।
প্রভুর দূত প্রভুভীরুদের চারপাশে শিবির বসান,
তাদের নিস্তার করেন।
আস্বাদন কর, দেখ প্রভু কত মঙ্গলময়,
সুখী সেই মানুষ, যে তাঁর আশ্রিতজন। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু,
ভালবাসার এ সাক্রামেন্ত আমাদের সকলকে পবিত্র ভক্তিতে উদ্দীপিত করুক,
তোমার পুত্রের প্রতি সর্বদাই আকর্ষিত হয়ে
আমরা যেন ভাইবোনদের মধ্যে তাঁকে চিনতে পারি।
তিনি জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
বিশ্বরাজ আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্ট
![]() যাঁর রাজদণ্ড হলো ক্রুশ, যিনি আত্মবলিদান করে রাজত্ব করেন। |
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর, বিশ্বরাজ তোমার সেই প্রিয় পুত্রেই
তুমি সমস্ত কিছু নবপ্রতিষ্ঠিত করতে ইচ্ছা করেছ।
প্রসন্ন হয়ে আশীর্বাদ কর: দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে
নিখিল সৃষ্টি যেন তোমার ঐশমহিমার সেবায় রত হয়ে
তোমার অবিরত গুণকীর্তন করতে পারে।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
নবী এজেকিয়েলের পুস্তক থেকে পাঠ (৩৪:১১-১২,১৫-১৭)
প্রভু পরমেশ্বর একথা বলছেন: দেখ, আমি নিজেই আমার মেষপাল খোঁজ করব, তার উপর দৃষ্টি রাখব। বিক্ষিপ্ত পালের মধ্যে থাকার সময়ে পালক যেমন মেষগুলির উপর দৃষ্টি রাখে, তেমনি আমি আমার মেষগুলির উপর দৃষ্টি রাখব। মেঘাচ্ছন্ন ও অন্ধকারময় দিনে তারা যেখানে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছিল, সেই সমস্ত জায়গা থেকে আমি তাদের উদ্ধার করব।
আমি নিজেই আমার মেষগুলিকে চরাব, আমি নিজেই তাদের শুইয়ে রাখব—প্রভু পরমেশ্বরের উক্তি। যে মেষ পথহারা আমি তাকে খোঁজ করব, যেটা পথভ্রষ্ট তাকে ফিরিয়ে আনব, যেটা ক্ষত-বিক্ষত তার ক্ষতস্থান বেঁধে দেব, যেটা দুর্বল তাকে বলবান করব, যেটা হৃষ্টপুষ্ট ও বলবান তাকে প্রতিপালন করব। আমি ন্যায়ের সঙ্গেই তাদের চরাব।
আর তোমাদের বিষয়ে, হে আমার মেষপাল, প্রভু পরমেশ্বর একথা বলছেন: দেখ, আমি মেষ ও মেষের মধ্যে, আবার ভেড়া ও ছাগের মধ্যে বিচার করব।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ২৩
ধুয়ো: প্রভু আমার পালক;
অভাব নেই তো আমার।
প্রভু আমার পালক;
অভাব নেই তো আমার।
আমায় তিনি শুইয়ে রাখেন নবীন ঘাসের চারণমাঠে,
আমায় নিয়ে যান শান্ত জলের কূলে; [ধুয়ো]
তিনি সঞ্জীবিত করেন আমার প্রাণ,
তাঁর নামের খাতিরে আমায় চালনা করেন ধর্মপথে।
আমার সম্মুখে তুমি সাজাও ভোজনপাট আমার শত্রুদের সামনে;
আমার মাথা তুমি তৈলসিক্ত কর; আমার পানপাত্র উচ্ছলিত। [ধুয়ো]
মঙ্গল ও কৃপাই হবে আমার সহচর
আমার জীবনের সমস্ত দিন ধরে,
আমি প্রভুর গৃহে বাস করব
চিরদিনের মত! [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (১৫:২০-২৬,২৮)
প্রিয়জনেরা, খ্রিষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থান করেছেন—নিদ্রাগতদের প্রথমফসল রূপে। কেননা যেহেতু মানুষের মধ্য দিয়ে মৃত্যু, সেহেতু মানুষের মধ্য দিয়েও মৃতদের পুনরুত্থান—আদমে যেমন সকলে মৃত্যুভোগ করে, খ্রিষ্টেই তেমনি সকলে সঞ্জীবিত হবে—অবশ্য যার যেমন স্থান, সেই অনুসারে: সকলের আগে সেই খ্রিষ্ট, প্রথমফসল যিনি, তারপর, খ্রিষ্টের পুনরাগমনের সময়ে, তারা, যারা তাঁরই। এরপর সমাপ্তি আসবে; তখন তিনি সমস্ত আধিপত্য ও সমস্ত কর্তৃত্ব ও পরাক্রম বিলুপ্ত করে দেওয়ার পর পিতা ঈশ্বরের হাতে রাজ্য সঁপে দেবেন।
কেননা যতদিন না তিনি সমস্ত শত্রুকে তাঁর পদতলে এনে রাখেন, ততদিন তাঁকে রাজত্ব করতে হবে। সর্বশেষ শত্রু যে মৃত্যু, সেও বিলুপ্ত হবে। আর সবকিছু তাঁর বশীভূত করা হওয়ার পর স্বয়ং পুত্রকেও তাঁর বশীভূত করা হবে, যিনি সবকিছু তাঁর বশে রেখেছেন; যেন ঈশ্বর সবই হন সবকিছুর মধ্যে।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
যিনি প্রভুর নামে আসছেন, তিনি ধন্য!
ধন্য আমাদের পিতা দাউদের আসন্ন রাজ্য!
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (২৫:৩১-৪৬)
একদিন যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন, ‘মানবপুত্র যখন তাঁর সকল দূতকে সঙ্গে করে নিজের গৌরবে আসবেন, তখন তিনি নিজের গৌরবময় সিংহাসনে আসন নেবেন। তাঁর সামনে সকল জাতিকে জড় করা হবে; আর তিনি তাদের একজন থেকে অন্যজনকে পৃথক পৃথক করে দেবেন, যেমন মেষপালক ছাগ থেকে মেষদের পৃথক করে দেয়; পরে তিনি মেষগুলোকে নিজের ডান পাশে ও ছাগগুলোকে বাঁ পাশে রাখবেন।
তখন রাজা নিজের ডান পাশের লোকদের বলবেন, এসো, আমার পিতার আশীর্বাদের পাত্র যে তোমরা, জগৎপত্তনের সময় থেকে যে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তা উত্তরাধিকাররূপে গ্রহণ কর। কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম আর তোমরা আমাকে খেতে দিয়েছিলে; তৃষ্ণার্ত ছিলাম আর আমাকে জল দিয়েছিলে; প্রবাসী ছিলাম আর আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলে; বস্ত্রহীন ছিলাম আর আমাকে পোশাক পরিয়েছিলে; পীড়িত ছিলাম আর আমার সেবাযত্ন করেছিলে; কারারুদ্ধ ছিলাম আর আমাকে দেখতে এসেছিলে।
তখন ধার্মিকেরা উত্তরে তাঁকে বলবে: প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, বা তৃষ্ণার্ত দেখে জল দিয়েছিলাম? কবেই বা আপনাকে প্রবাসী দেখে আশ্রয় দিয়েছিলাম, বা বস্ত্রহীন দেখে পোশাক পরিয়েছিলাম? কবেই বা আপনাকে পীড়িত বা কারারুদ্ধ দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম? উত্তরে রাজা তাদের বলবেন, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এই ক্ষুদ্রতম ভাইদের একজনেরও প্রতি যা কিছু করেছ, তা আমারই প্রতি করেছ।
পরে তিনি বাঁ পাশের লোকদেরও বলবেন, আমার কাছ থেকে দূর হও, অভিশাপের পাত্র যে তোমরা! দিয়াবলের ও তার দূতদের জন্য যে অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে যাও। কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, আর তোমরা আমাকে খেতে দাওনি; তৃষ্ণার্ত ছিলাম আর আমাকে জল দাওনি; প্রবাসী ছিলাম আর আমাকে আশ্রয় দাওনি; বস্ত্রহীন ছিলাম আর আমাকে পোশাক পরাওনি; পীড়িত ও কারারুদ্ধ ছিলাম আর আমাকে দেখতে আসনি।
তখন তারাও উত্তরে বলবে, প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত বা তৃষ্ণার্ত বা প্রবাসী বা বস্ত্রহীন বা পীড়িত বা কারারুদ্ধ দেখে আপনার সেবাযত্ন করিনি? তখন তিনি উত্তরে তাদের বলবেন, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা এই ক্ষুদ্রতম মানুষদের একজনেরও প্রতি যা কিছু করনি, তা আমারই প্রতি করনি।
আর এরা অনন্ত দণ্ডে চলে যাবে, কিন্তু ধার্মিকেরা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করবে।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
যোহন-রচিত সুসমাচারে আলেক্সান্দ্রিয়ার বিশপ সাধু সিরিলের ব্যাখ্যা
মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থান করার পর যিশু আমাদের স্বরূপকে তার আদি অবস্থায় ফিরিয়ে এনে ও ক্ষয়শীলতা থেকে মানুষকে মুক্ত করে স্বর্গস্থ পিতা ঈশ্বরের কাছে প্রথমফসল স্বরূপ হয়ে আরোহণ করলেন—তিনিই যে তাঁর প্রথম মন্দির! কিন্তু অল্পকাল পরে তিনি আবার নেমে আসবেন, ও স্বর্গদূতদের সঙ্গে তাঁর পিতার গৌরবে পুনরায় আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন যাতে ভাল মন্দ সকলকেই সেই ভয়ঙ্কর বিচারে আহ্বান করেন। কেননা প্রতিটি প্রাণীকে বিচারমঞ্চে দাঁড়াতে হবে, এবং প্রভু প্রত্যেককে যার যার জীবনের কর্মফল অনুসারে প্রতিদান দেবেন: যারা তাঁর বাঁ পাশে থাকবে, অর্থাৎ যারা জগতের বস্তু অপব্যবহার করেছে, তাদের তিনি বলবেন: আমার কাছ থেকে দূর হও, অভিশাপের পাত্র যে তোমরা! শয়তানের ও তার দূতদের জন্য যে অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে যাও (মথি ২৫:৪১); কিন্তু যারা তাঁর ডান পাশে থাকবে, অর্থাৎ পবিত্রজন ও ধার্মিকদের তিনি বলবেন, এসো, আমার পিতার আশীর্বাদের পাত্র যে তোমরা, জগৎ-পত্তনের সময় থেকে যে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তা উত্তরাধিকাররূপে গ্রহণ কর (মথি ২৫:৩৪)। তারা স্বর্গীয় মঙ্গলদান অসীম আনন্দের সঙ্গে ভোগ করে খ্রিষ্টের সঙ্গে বাস করবে ও রাজত্ব করবে—পুনরুত্থানে তাঁর অনুরূপ হয়ে উঠে ও প্রাচীন ক্ষয়শীলতার ফাঁদ থেকে মুক্ত হয়ে তারা চিরকাল ধরে নিত্যজীবনময় প্রভুর সঙ্গে এমন জীবন যাপন করবে, যা অবর্ণনীয় ও চিরস্থায়ী।
যারা সৎ ও পুণ্য জীবন যাপন করেছে, তারা যে খ্রিষ্টের অনির্বচনীয় সৌন্দর্যে চোখ নিবদ্ধ রেখে তাঁর সঙ্গে নিরন্তর জীবিত থাকবে, একথা প্রেরিতদূত দ্বারা ঘোষিত: মহাদূতের কণ্ঠের সঙ্কেতে ও ঈশ্বরের তুরিধ্বনিতে প্রভু নিজেই স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন, এবং খ্রিষ্টে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তারাই প্রথমে পুনরুত্থান করবে; পরে, তখনও জীবিত আছি এই আমরা, তখনও বেঁচে আছি এই আমরা, এই আমাদেরও বায়ুলোকে প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য তাদের সঙ্গে মেঘলোকে কেড়ে নেওয়া হবে; আর এইভাবে চিরকালের মত প্রভুর সঙ্গে থাকব (১ থে ৪:১৬-১৭)।
আর যারা দেহলালসা দমন করতে চেষ্টা করেছে, তাদের উদ্দেশ করে তিনি এ কথাও বলেন: তোমাদের তো মৃত্যুই হয়েছে, আর তোমাদের জীবন খ্রিষ্টের সঙ্গে ঈশ্বরে নিহিত হয়ে আছে। কিন্তু খ্রিষ্ট যখন আবির্ভূত হবেন—তিনিই তো তোমাদের জীবন—তখন তোমরাও তাঁর সঙ্গে গৌরবে আবির্ভূত হবে (কল ৩:৩-৪)।
সুসমাচারের এ বচনের গভীর তাৎপর্য স্বল্প কথায় ব্যক্ত করতে গিয়ে আমরা একথা বলব: যারা সংসারের শঠতা ভালবাসে, তারা পাতালে নিক্ষিপ্ত হবে, ও খ্রিষ্টের শ্রীমুখ থেকে দূরে থাকবে; কিন্তু যারা সদ্গুণ ভালবাসে ও পবিত্র আত্মার মুদ্রাঙ্কন অক্ষুণ্ণ রাখবে, তারা তাঁর সঙ্গে বাস করবে ও তাঁর সৌন্দর্যে চোখ নিবদ্ধ রেখে তাঁর সঙ্গে জীবনযাপন করবে: স্বয়ং প্রভুই হবেন তোমার চিরন্তন আলো, তোমার পরমেশ্বরই তোমার কান্তি (ইশা ৬০:১৯)।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ২৯
ধুয়ো: প্রভু রাজারূপে চিরসমাসীন।
প্রভু তাঁর আপন জাতিকে ধন্য করবেন শান্তিদানে।
প্রভুতে আরোপ কর তোমরা, হে ঈশ্বরের সন্তান,
প্রভুতে আরোপ কর গৌরব ও শক্তি।
প্রভুতে আরোপ কর তাঁর নামের গৌরব,
তাঁর পবিত্রতার আবির্ভাবে প্রভুর সম্মুখে কর প্রণিপাত। [ধুয়ো]
প্রভুর কণ্ঠস্বর এরসগাছ ভেঙে ফেলে,
প্রভু লেবাননের এরসগাছ ভেঙে ফেলেন।
তাঁর কণ্ঠস্বরে লেবানন লাফিয়ে ওঠে বাছুরের মত,
সিরিয়োন মহিষশাবকের মত। [ধুয়ো]
প্রভু জলপ্লাবনের উপরে সমাসীন,
প্রভু রাজারূপে চিরসমাসীন।
প্রভু তাঁর আপন জাতিকে শক্তি দেন,
প্রভু তাঁর আপন জাতিকে ধন্য করেন শান্তিদানে। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, অমরত্বদানকারী খাদ্য গ্রহণ করে আমরা তোমাকে অনুনয় করি:
আমরা যেমন বিশ্বরাজ খ্রিষ্টের আজ্ঞা পালনে গর্ববোধ করি,
তেমনি যেন তোমার স্বর্গীয় রাজ্যে
তাঁর সঙ্গে চিরকালের মত বাস করতে পারি।
তিনি জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]