পর্ব ও মহাপর্ব
সাধু বেনেডিক্ট বাদে উপরোল্লিখিত অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি রোমীয় সাধারণ পঞ্জিকায় পর্ব ও মহাপর্ব বলে চিহ্নিত।
২৫ জানুয়ারী - সাধু পলের বিশ্বাস জাগরণ
আমি যিশু, যাঁকে তুমি নির্যাতন করছ। এরপর শৌলকে যুদার বাড়িতে চালনা করা হল (প্রেরিত ৯:৬-১১)। |
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশু খ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে ঈশ্বর, প্রেরিতদূত সাধু পলের বাণীপ্রচারে তুমি সারা জগৎকে আলোকিত করেছ।
আশীর্বাদ কর: আজ যাঁর খ্রিষ্টবিশ্বাস গ্রহণের কথা স্মরণ করি,
তাঁর আদর্শ অনুকরণে তোমার অধিকতর নিকটে অগ্রসর হয়ে
আমরা যেন জগতের সামনে তোমার সত্যের সাক্ষী হতে পারি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশু খ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (২২:৩-১৬)
সেসময়ে পল জনতাকে বললেন, ‘আমি ইহুদী, কিলিকিয়া প্রদেশের তার্সসে আমার জন্ম, কিন্তু এই নগরীতেই মানুষ হয়েছি; গামালিয়েলের পায়ের কাছে বসে আমি পিতৃবিধানের সূক্ষ্মতম নিয়ম অনুসারেই শিক্ষা পেয়েছি; ঈশ্বরের প্রতি আমারও গভীর আগ্রহ ছিল, যেমন আপনাদের সকলের আজ রয়েছে। আমি প্রাণনাশ পর্যন্তই এই পথ নির্যাতন করতাম, পুরুষ-মহিলাদের বেঁধে কারাগারে তুলে দিতাম। এবিষয়ে স্বয়ং মহাযাজক ও সমস্ত প্রবীণবর্গও আমার সাক্ষী। তাঁদের কাছ থেকে ভাইদের জন্য পত্র নিয়ে আমি দামাস্কে যাত্রা করছিলাম, যারা সেখানে ছিল, দণ্ডিত হবার জন্য তাদেরও যেন বেঁধে যেরুশালেমে নিয়ে আসতে পারি।
তখন এমনটি ঘটল যে, যেতে যেতে আমি দামাস্কের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছি, এমন সময় হঠাৎ দুপুর বারোটায় আকাশ থেকে একটা তীব্র আলো আমার চারদিকে জ্বলতে লাগল। আমি মাটিতে পড়ে গেলাম, এবং শুনতে পেলাম, এক কণ্ঠস্বর আমাকে বলছে, শৌল, শৌল, কেন আমাকে নির্যাতন করছ? আমি উত্তর দিলাম, প্রভু, আপনি কে? তিনি আমাকে বললেন, আমি নাজারেথীয় যিশু, যাঁকে তুমি নির্যাতন করছ। আমার সঙ্গীরা সেই আলো দেখতে পেল বটে, অথচ যে কণ্ঠস্বর আমার সঙ্গে কথা বলছিল, তা তারা শুনতে পেল না। পরে আমি বললাম, প্রভু, আমি কী করব? প্রভু আমাকে বললেন, ওঠ, দামাস্কে যাও; আর তোমাকে কী করতে হবে বলে নিরূপিত আছে, সেই সমস্ত তোমাকে বলা হবে। আর যেহেতু সেই আলোর তেজে আমি আর কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না, সেজন্য আমার সঙ্গীরা আমাকে হাত ধরে চালিত করতে করতেই আমি দামাস্কে এসে পৌঁছলাম।
আনানিয়াস নামে কোন একজন লোক, যিনি ভক্তপ্রাণ বিধান-পরায়ণ ও সেখানকার অধিবাসী সকল ইহুদী যাঁর সুখ্যাতি করত, তিনি আমার কাছে এসে পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ভাই শৌল, দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাও! আর সেই ক্ষণেই আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলাম। পরে তিনি বললেন, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর তাঁর ইচ্ছা জানবার জন্য এবং সেই ধর্মাত্মাকে দেখবার ও তাঁর মুখের কণ্ঠস্বর শুনবার জন্য আগে থেকে তোমাকে নিযুক্ত করেছেন; কারণ তুমি যা দেখতে ও শুনতে পেয়েছ, সকল মানুষের কাছে সেই সমস্ত বিষয়ে তোমাকে তাঁর সাক্ষী হতে হবে। আর এখন তুমি কেন দেরি করছ? ওঠ, তাঁর নাম করে বাপ্তিস্ম গ্রহণ কর ও তোমার সমস্ত পাপ ধুয়ে ফেল।’
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ১১৭
ধুয়ো: তোমরা বিশ্বজগতে বেরিয়ে পড়,
সুসমাচার প্রচার কর।
প্রভুর প্রশংসা কর, সকল দেশ,
তাঁর মহিমাকীর্তন কর, সকল জাতি।
দৃঢ়ই যে আমাদের প্রতি তাঁর কৃপা,
প্রভুর বিশ্বস্ততা চিরস্থায়ী। [ধুয়ো]
৬। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমিই তোমাদের বেছে নিয়েছি
—একথা বলছেন প্রভু—
যেন তোমরা গিয়ে ফলশালী হও,
তোমাদের ফলও যেন স্থায়ী হয়।
❖ আল্লেলুইয়া।
৭। সুসমাচার
✚ মার্ক-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (১৬:১৫-১৮)
[সেসময়ে সেই এগারোজনকে দেখা দিয়ে] যিশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা বিশ্বজগতে বেরিয়ে পড়, সমস্ত সৃষ্টির কাছে সুসমাচার প্রচার কর।
যে বিশ্বাস করবে ও বাপ্তিস্ম গ্রহণ করবে, সে পরিত্রাণ পাবে; যে বিশ্বাস করবে না, তাকে বিচারাধীন করা হবে: যারা বিশ্বাস করবে, তাদের পাশেপাশে এই চিহ্নগুলো থাকবে: তারা আমার নামে অপদূত তাড়াবে, নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে, হাতে করে সাপ তুলবে, ও মারাত্মক বিষ খেলেও তাদের কোন ক্ষতি হবে না; তারা পীড়িতদের উপর হাত রাখবে আর তারা সুস্থ হবে।’
✦ প্রভুর বাণী।
৮। উপদেশ
নিসার বিশপ সাধু গ্রেগরির পত্রাবলি
এসো, একথা স্বীকার করি যে, আপন শিষ্যদের কাছে ভালবাসার রহস্য সম্প্রদান করায় খ্রিষ্ট যে শিক্ষা তাঁদের দিয়েছেন, তা হল স্থিতমূল ও পরিত্রাণদায়ী বিশ্বাসের শিকড় ও ভিত্তিমূল; এ কথাও বিশ্বাস করি যে, পরম্পরাগত শিক্ষার চেয়ে উৎকৃষ্ট, শক্তিদায়ী ও সুনিশ্চিত বলতে কিছু নেই। প্রভুর শিক্ষা এ: তোমরা যাও, সকল জাতিকে আমার শিষ্য কর; পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা-নামের উদ্দেশে তাদের বাপ্তিস্ম দাও (মথি ২৮:১৯)।
যারা মৃত্যু থেকে অনন্ত জীবনের উদ্দেশে নবজন্ম নিয়েছে ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তেমন অনুগ্রহলাভের যোগ্য হয়ে উঠেছে, যেহেতু তারা পবিত্র ত্রিত্বেরই দানের ফলে জীবনদায়ী শক্তির সহভাগী হয়ে ওঠে, সেজন্য পরিত্রাণদায়ী বাপ্তিস্মে ত্রিত্বের একটা নাম মাত্রও উচ্চারিত না হলে অনুগ্রহটি পূর্ণাঙ্গ নয়; কেননা নবজন্ম-রহস্য পবিত্র আত্মায় ছাড়া কেবল পিতা ও পুত্রে সাধিত নয়; একই প্রকারে পুত্রের নাম উচ্চারণ না করলে কেবল পিতা ও পবিত্র আত্মার নামে পূর্ণাঙ্গ ঐশজীবন-দায়ী বাপ্তিস্ম কার্যকর নয়; আবার আত্মাকে বাতিল করলে কেবল পিতা ও পুত্রে আমাদের পুনরুত্থানের অনুগ্রহ সাধিত নয়। এজন্য যে তিন ব্যক্তিত্ব এ নাম দ্বারা নিজেদের জ্ঞাত করেছেন, আমরা আমাদের আত্মা ত্রাণ করার সমস্ত প্রত্যাশা ও প্রত্যয় সেই তিন ব্যক্তিত্বেই রাখি; এবং আমাদের প্রভু যিশু খ্রিষ্টের সেই পিতায় বিশ্বাস করি যিনি জীবনের উৎস, পিতার সেই একমাত্র পুত্রে বিশ্বাস করি যিনি—প্রেরিতদূতের কথা অনুসারে—হলেন জীবন-প্রণেতা (প্রেনিত ৩:৫), ও সেই পবিত্র আত্মায় বিশ্বাস করি যাঁর বিষয়ে প্রভু বলেন, আত্মাই জীবনদায়ী (যোহন ৬:৬৩)।
আর যেমনটি বলেছি, যেহেতু মৃত্যু থেকে মুক্ত এই আমাদের কাছে পবিত্র বাপ্তিস্মে পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মায় বিশ্বাস দ্বারাই অমরতার অনুগ্রহ দান করা হয়, সেজন্য এই বিশেষ কারণ দ্বারা উদ্দীপিত হয়ে আমরা একথা সমর্থন করি যে, হীন কিবা সৃষ্ট কিবা পিতার ঐশমর্যাদার অযোগ্য প্রকার কোন কিছুই পবিত্র ত্রিত্বকে আরোপণীয় নয়; এর কারণ হল এ যে, পবিত্র ত্রিত্বে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে যে জীবন প্রাপ্য, আমাদের সেই জীবন একটিমাত্র; আর তেমন জীবন বিশ্বজগতের ঈশ্বর থেকেই ঠিক যেন এক উৎস থেকেই নির্গত হয়ে ও পুত্রের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে পবিত্র আত্মায় সিদ্ধি লাভ করে।
তেমন স্পষ্ট নিশ্চয়তায় দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত হয়ে ও দেওয়া আদেশ অনুসারেই আমরা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করি, ও যেভাবে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছি সেভাবে বিশ্বাসও করি, ও যেভাবে বিশ্বাস করি সেভাবে উপলব্ধিও করি; যার ফলে বাপ্তিস্ম, বিশ্বাস ও আমাদের উপলব্ধি পূর্ণ ঐক্য অনুসারেই পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মায় বিরাজিত।
৯। অর্থদান
১০। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশু খ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১১। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১২। ধ্যান-গীতি: সাম ১২৬
ধুয়ো: সেই ঈশ্বরের পুত্রের প্রতি বিশ্বাসেই আমি জীবন যাপন করি,
যিনি আমাকে ভালবেসেছেন ও আমার জন্য নিজেকে বিসর্জন দিয়েছেন।
প্রভু যখন সিয়োনের বন্দিদের ফিরিয়ে আনলেন,
আমরা তখন যেন স্বপ্নই দেখি!
তখন আমাদের মুখ হাসিতে মুখর,
আমাদের জিহ্বা আনন্দচিৎকারে পূর্ণ। [ধুয়ো]
তখন বিজাতিদের মধ্যে একথা চলত,
‘তাদের জন্য কী মহা মহা কাজ না করেছেন প্রভু!’
আমাদের জন্য মহা মহা কাজ সাধন করেছেন প্রভু,
আমরা আনন্দিত। [ধুয়ো]
আমাদের বন্দিদের ফিরিয়ে আন, প্রভু,
তাদের ফিরিয়ে আন নেগেব প্রান্তরে খরস্রোতের মত।
যে অশ্রুর মধ্যে বীজ বোনে,
সানন্দে চিৎকার করতে করতেই সে ফসল সংগ্রহ করবে। [ধুয়ো]
সে যায়, কাঁদতে কাঁদতে সে চলে যায়,
সঙ্গে নিয়ে যায় বপনের বীজ;
সে আসে, সানন্দে চিৎকার করতে করতেই সে ফিরে আসে,
সঙ্গে নিয়ে আসে ফসলের আঁটি। [ধুয়ো]
১৩। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, আমাদের পরমেশ্বর, যে সাক্রামেন্ত আমরা গ্রহণ করেছি,
তা আমাদের অন্তরে সেই ভক্তির উদ্দীপনা জ্বালিয়ে তুলুক,
যে উদ্দীপনায় জ্বলে উঠে প্রেরিতদূত সাধু পল
সকল মণ্ডলীর কল্যাণ সাধনের ভার আপন করে নিলেন।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৪। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
২ ফেব্রুয়ারী - মন্দিরে প্রভুকে উপস্থাপন
আমার চোখ দেখেছে তোমার সেই পরিত্রাণ যা তুমি প্রস্তুত করেছ সকল জাতির সামনে: ঐশপ্রকাশে বিজাতীয়দের উদ্বুদ্ধ করার আলো ও তোমার আপন জনগণ ইস্রায়েলের গৌরব (লুক ২:২৯-৩২)। |
মোমবাতি আশীর্বাদ ও শোভাযাত্রা
১।ঘরের বাইরে উপযুক্ত স্থানে সকলে সম্মিলিত হয়। হাতে থাকবে মোমবাতি, কিন্তু তা জ্বালানো নয়।
২। বাতিগুলো জ্বালানোর সময় নিচের ধুয়ো গাওয়া হয়।
ধুয়ো: দেখ, আমাদের প্রভু মহাপরাক্রমে আসবেন;২। বাতিগুলো জ্বালানোর সময় নিচের ধুয়ো গাওয়া হয়।
আপন দাসদের চোখ আলোকিত করবেন। আল্লেলুইয়া।
৩। তারপর অনতুষ্ঠাতা বলেন:
‘পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে’। এরপর তিনি নিচের কথা ব্যবহার করতে পারেন:
প্রিয়জনেরা,চল্লিশ দিন আগে আমরা সানন্দে প্রভুর জন্মোৎসব পালন করেছিলাম।
আজ সেই শুভদিন,
যে দিনে মারীয়া ও যোসেফ যিশুকে মন্দিরে উপস্থাপন করেছিলেন।
আপাত দৃষ্টিতে তিনি বিধান পূরণ করছিলেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে
তাঁর আপন বিশ্বাসী জনগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসছিলেন।
পবিত্র আত্মায় উদ্দীপিত হয়ে সেই ধন্য প্রাচীন ব্যক্তি শিমেয়োন ও আন্না
মন্দিরে এসে সেই একই আত্মা দ্বারা আলোকিত হয়ে
প্রভুকে চিনতে পেরেছিলেন
ও মহা উল্লাসে উল্লসিত হয়ে তাঁকে স্বীকারও করেছিলেন।
তাই এসো, পবিত্র আত্মা দ্বারা একত্রে সম্মিলিত হয়ে
আমরাও খ্রিষ্টকে বরণ করার জন্য ঈশ্বরের গৃহ অভিমুখে এগিয়ে চলি।
আমরা রুটি-ছেঁড়ার ক্ষণেই তাঁকে পাব ও চিনতে পারব যতদিন না তিনি
আপন গৌরবে প্রকাশ্যে আসেন।
৪। এরপর তিনি বাতিগুলো আশীর্বাদ করেন; প্রসারিত বাহুতে বলবেন:
হে ঈশ্বর, সকল আলোর একমাত্র উৎস তুমি!তুমিই আজ ধার্মিক শিমেয়োনকে দেখিয়েছিলে সেই আলো
যা ঐশপ্রকাশে বিজাতীয়দের উদ্বুদ্ধ করার জন্য নিরূপিত।
তোমার জনগণের বিনীত প্রার্থনা গ্রহণ কর:
তোমার নাম বন্দনার জন্য যে বাতি আমরা বহন করতে উৎসুক,
প্রসন্ন হয়ে, তোমার আশীর্বাদে তা পবিত্র কর,
যেন তোমার পুণ্য পথে চলে
আমরা অনির্বাণ অলো-রাজ্যে গিয়ে পৌঁছতে পারি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
৫। এবং নিচের বাণী বলতে বলতে শোভাযাত্রা শুরু হয়:
এসো, চলি প্রভুকে শান্তিতে বরণ করতে।৬। সকলের হাতে জ্বালানো বাতি থাকবে। শোভাযাত্রা এগোতে এগোতে নিচে দেওয়া ধুয়ো গাওয়া হয়।
ধুয়ো: ঐশপ্রকাশে বিজাতীয়দের উদ্বুদ্ধ করার আলো,ও তোমার আপন জনগণ ইস্রায়েলের গৌরব।
হে মহাপ্রভু, তোমার কথামত
এখন তোমার এই দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও। [ধুয়ো]
কারণ আমার চোখ দেখেছে তোমার সেই পরিত্রাণ
যা তুমি প্রস্তুত করেছ সকল জাতির সামনে। [ধুয়ো]
৭। শোভাযাত্রা ঘরে প্রবেশ করলে জয় পরমেশ্বর গাওয়া হয়।
৮। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর, বিনীত কণ্ঠে তোমাকে অনুনয় করি:
তোমার একমাত্র পুত্রকে যেমন এইদিনে আমাদের মানবস্বরূপ নিয়েই
মন্দিরে উপস্থাপন করা হয়েছিল, তেমনি আমরাও যেন তোমার অনুগ্রহগুণে
শোধিত অন্তরে তোমার সাক্ষাতে উপস্থাপিত হতে পারি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশু খ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৯। প্রথম পাঠ
নবী মালাখির পুস্তক থেকে পাঠ (৩:১-৪)
প্রভু পরমেশ্বর একথা বলছেন: দেখ! আমি আমার দূত প্রেরণ করব, তিনি আমার সম্মুখে পথ প্রস্তুত করবেন। তখন সেই যে প্রভুকে তোমরা অন্বেষণ করছ, তিনি হঠাৎ আপন মন্দিরে আসবেন; সেই যে সন্ধির দূতকে তোমরা আকাঙ্ক্ষা করছ, দেখ! তিনি আসছেন—একথা বলছেন সেনাবাহিনীর প্রভু।
কিন্তু তাঁর আগমনের দিন কে সহ্য করতে পারবে? তিনি দেখা দিলে কে দাঁড়াতে পারবে? কারণ তিনি ধাতুশোধকের আগুনের মত, রজকের ক্ষারের মত।
তিনি নিখাদ করতে ও শোধন করতে আসন নেবেন: তিনি লেবি-সন্তানদের পরিশুদ্ধ করবেন, এবং সোনা ও রুপোর মত তাদের বিশুদ্ধ করবেন, যেন তারা প্রভুর উদ্দেশে ধর্মিষ্ঠতার সঙ্গেই অর্ঘ্য নিবেদন করতে পারে। তখন যুদার ও যেরুশালেমের অর্ঘ্য প্রভুর গ্রহণীয় হবে, যেমনটি পুরাকালে, প্রাচীনকালের বছরগুলিতে ছিল।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
১০। সামসঙ্গীত ২৪
ধুয়ো: সেনাবাহিনীর প্রভু,
তিনিই গৌরবের রাজা।
হে তোরণ, উত্তোলন কর শির! উত্তোলিত হও, সনাতন সিংহদ্বার!
প্রবেশ করুন গৌরবের রাজা।
কে এই গৌরবের রাজা?
শক্তিমান পরাক্রমী প্রভু, যুদ্ধে পরাক্রমী প্রভু। [ধুয়ো]
হে তোরণ, উত্তোলন কর শির! উত্তোলিত হও, সনাতন সিংহদ্বার!
প্রবেশ করুন গৌরবের রাজা।
এই গৌরবের রাজা, তিনি কে?
সেনাবাহিনীর প্রভু, তিনিই গৌরবের রাজা। [ধুয়ো]
১১। দ্বিতীয় পাঠ
(এই পাঠ তখনই মাত্র পড়া হয় যখন পর্বটা রবিবারে পড়ে)
হিব্রুদের কাছে পত্র থেকে পাঠ (২:১৪-১৮)
প্রিয়জনেরা, যেহেতু সেই সন্তানেরা সকলে একই রক্তমাংসের অধিকারী, সেহেতু যিশু নিজেও সেই রক্তমাংসের সহভাগী হলেন, যেন মৃত্যুর উপরে যার কর্তৃত্ব, মৃত্যুর মধ্য দিয়েই তিনি তাকে, অর্থাৎ সেই দিয়াবলকে শক্তিহীন করতে পারেন, এবং যারা মৃত্যুর ভয়ে সারা জীবন দাসত্বের অধীন ছিল, তাদের তিনি যেন উদ্ধার করতে পারেন।
আসলে তিনি তো স্বর্গদূতদের আপন করে নিচ্ছেন না, আব্রাহামের বংশকেই নিচ্ছেন। এজন্যই তাঁকে সব দিক দিয়ে নিজের ভাইদের মত হতে হয়েছে, যেন জনগণের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার উদ্দেশ্যে তিনি ঈশ্বর-সংক্রান্ত সমস্ত ব্যাপারে দয়াবান ও বিশ্বাসযোগ্য এক মহাযাজক হয়ে উঠতে পারেন।
বাস্তবিক তিনি নিজে পরীক্ষিত হয়েছেন ও দুঃখকষ্ট ভোগ করেছেন বিধায়ই, যারা এখন পরীক্ষিত, তাদের তিনি সাহায্য করতে সক্ষম।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
১২। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমার চোখ দেখেছে
তোমার পরিত্রাণ:
ঐশপ্রকাশে বিজাতীয়দের উদ্বুদ্ধ করার আলো
ও তোমার আপন জনগণ ইস্রায়েলের গৌরব।
❖ আল্লেলুইয়া।
১৩। সুসমাচার
✚ লুক-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (২:২২-৩২)
যখন মোশির বিধান অনুসারে তাঁদের শুচীকরণ-কাল পূর্ণ হল, তখন যিশুর পিতা-মাতা তাঁকে যেরুশালেমে নিয়ে গেলেন যেন প্রভুর সামনে তাঁকে হাজির করেন,—যেমনটি প্রভুর বিধানে লেখা আছে, প্রথমজাত প্রত্যেক পুত্রসন্তানকে প্রভুর উদ্দেশে পবিত্রীকৃত করা হবে;—আর যেন প্রভুর বিধানের নির্দেশমত একজোড়া ঘুঘু কিংবা দু’টো পায়রার ছানা বলিরূপে উৎসর্গ করেন।
সেসময়ে যেরুশালেমে শিমেয়োন নামে একজন ছিলেন, যিনি ধার্মিক ও ভক্তপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন; তিনি ইস্রায়েলের সান্ত্বনার প্রতীক্ষায় থাকতেন, ও পবিত্র আত্মা তাঁর উপরে ছিলেন। পবিত্র আত্মা তাঁকে একথা জানিয়েছিলেন যে, প্রভুর সেই খ্রিষ্টকে না দেখা পর্যন্ত তিনি মৃত্যু দেখবেন না।
সেই আত্মার আবেশে তিনি মন্দিরে এলেন, এবং যিশুর পিতামাতা যখন বিধানের নিয়ম-বিধি সম্পাদন করার জন্য শিশুটিকে ভিতরে নিয়ে আসছিলেন, তখন তিনি তাঁকে কোলে নিলেন, ও ঈশ্বরের স্তুতিবাদ করে বলে উঠলেন:
‘হে মহাপ্রভু, তোমার কথামত
এখন তোমার এই দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও;
কারণ আমার চোখ দেখেছে তোমার সেই পরিত্রাণ
যা তুমি প্রস্তুত করেছ সকল জাতির সামনে:
ঐশপ্রকাশে বিজাতীয়দের উদ্বুদ্ধ করার আলো
ও তোমার আপন জনগণ ইস্রায়েলের গৌরব।’
✦ প্রভুর বাণী।
১৪। উপদেশ
বিশপ সাধু সফ্রনিওসের উপদেশ
আমরা সকলে যারা প্রভুর সাক্ষাৎ-রহস্য আন্তর ভক্তি ভরে উদ্যাপন ও পূজা করি, এসো, আমরা সবাই গভীর আগ্রহের সঙ্গে একমন একপ্রাণ হয়ে এগিয়ে যাই। কেউই যেন বসে না থাকে, যেন নিজ মশাল বরণ করতে অসম্মত না হয়; বরং এসো, মোমবাতিগুলির দীপ্তি আরও দীপ্তিময় করে তুলি: সেগুলিতে রয়েছে তাঁরই দিব্য বিভার প্রতীক, যিনি এগিয়ে আসছেন, যিনি সনাতন আলোর ধারায় অন্ধকারময় ছায়া নিঃশেষ করে সবকিছু উজ্জ্বল করে তুলছেন। তাছাড়া আমাদের এ বাতিগুলো নির্দেশ করুক আমাদের আত্মার সেই দীপ্তিময়তা যার প্রভায় আমাদের খ্রিষ্টকে বরণ করতে যেতে হবে। যেমন ঈশ্বরজননী সেই অক্ষুণ্ণ কুমারী সত্যকার আলোকে কোলে বহন করেছিলেন ও মৃত্যু-শায়িত সমস্ত মানবের কাছে কাছে গিয়েছিলেন, তেমনি সেই আলোতে আলোকিত হয়ে ও সকলের সামনে উজ্জ্বল সেই আলো হাতে ধরে, সত্যকার আলো যিনি, তাঁর দিকে আমাদেরও ছুটে যেতে হবে।
আলো জগতে এল ও জগৎগ্রাসী অন্ধকার নিঃশেষ ক’রে জগৎকে আলোকিত করে দিল। যিনি ঊর্ধ্ব থেকে উদীয়মান, তিনি আমাদের দেখতে এলেন; যারা অন্ধকারে শুয়ে ছিল, তিনি তাদের উপর আলো বিকিরণ করলেন। এজন্যই এখন আমাদেরও মশাল হাতে করে চলতে হবে, বাতি নিয়ে ছুটতে হবে। তাতে আমরা দেখাতে পারব যে আমাদের উপর আলোর উদ্ভাস হল, ও আমরা যার দূত, সেই দিব্য আলোর প্রতীক হয়ে উঠব। এটি আজকের দিনের মর্মসত্যের অর্থ।
যে সত্যকার আলো এ জগতে আগত প্রত্যেক মানুষকে উদ্ভাসিত করে, সেই আলো তো এসেছে। তবে ভাই, এসো, আমরা সকলে তা দ্বারা আলোকিত ও উদ্ভাসিত হই। কেউই যেন এ বিভা থেকে বঞ্চিত না হয়ে পড়ে, জেদি মানুষেরই মত কেউই যেন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে না থাকে। সকলেই বরং এসো, উদ্ভাসিত ও আলোকিত হয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে চলি। এসো, প্রাচীন শিমেয়োনের সঙ্গে আমরাও পুলকিত অন্তরে সেই উজ্জ্বল সনাতন আলো গ্রহণ করি। যিনি সত্যকার আলো প্রেরণ করে সমস্ত অন্ধকার নিঃশেষ করে আমাদের সকলকে আলোময় করে তুলেছেন, এসো, আমরা সেই আলোর পিতার উদ্দেশে স্তুতিগান জাগিয়ে তুলি। কেননা যে ঐশপরিত্রাণ সকল জাতির সামনে প্রস্তুত ছিল ও নব-ইস্রায়েল রূপে এই আমাদেরই গৌরবের জন্য প্রকাশিত হয়েছিল, তাঁর দয়ায় আমরাও তা দেখতে পেয়েছি, যার ফলে যেমন শিমেয়োন খ্রিষ্টকে দেখে বর্তমান জীবনের বন্ধন থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন, তেমনি আমরাও সেই প্রাচীন অন্ধকারময় অপরাধ থেকে মুক্তি পেয়েছি। বেথলেহেম থেকে আগত খ্রিষ্টকে বিশ্বাসেরই আলিঙ্গনে আলিঙ্গন করায় আমরাও বিজাতি অবস্থা থেকে ঈশ্বরেরই আপন জাতি হলাম—কেননা তিনিই পিতা ঈশ্বরের পরিত্রাণ। আমরা চোখ দিয়ে মাংসধারী ঈশ্বরকে দেখতে পেয়েছি, আর ঠিক যেহেতু আমাদের মাঝে উপস্থিত ঈশ্বরকে দেখতে পেয়েছি ও আত্মারই হাত দিয়ে তাঁকে বরণ করেছি, সেহেতুই আমরা নব-ইস্রায়েল বলে অভিহিত। আমরা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি শ্রদ্ধা করি; এখন থেকে তা ভুলে যাওয়া আর সম্ভব হবে না।
১৫। অর্থদান
১৬। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশু খ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৭। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৮। ধ্যান-গীতি: সাম ৩৪
ধুয়ো: আমার চোখ দেখেছে তোমার সেই পরিত্রাণ
যা তুমি প্রস্তুত করেছ সকল জাতির সামনে।
সর্বদাই আমি প্রভুকে বলব ধন্য,
নিয়তই আমার মুখে তাঁর প্রশংসাবাদ।
প্রভুতে গর্ব করে আমার প্রাণ,
শুনুক, আনন্দ করুক বিনম্র সকল। [ধুয়ো]
আমার সঙ্গে প্রভুর মহিমাকীর্তন কর,
এসো, আমরা একসঙ্গে তাঁর নাম বন্দনা করি।
প্রভুর অন্বেষণ করেছি, তিনি আমাকে সাড়া দিলেন,
যত ভয়-শঙ্কা থেকে আমাকে উদ্ধার করলেন। [ধুয়ো]
তাঁর দিকে চেয়ে দেখ, তোমরা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,
লজ্জায় ঢেকে যাবে না কো তোমাদের মুখ।
এই দীনহীন ডাকে, প্রভু শোনেন,
তার সকল সঙ্কট থেকে তাকে পরিত্রাণ করেন। [ধুয়ো]
প্রভুর দূত প্রভুভীরুদের চারপাশে শিবির বসান,
তাদের নিস্তার করেন।
আস্বাদন কর, দেখ প্রভু কত মঙ্গলময়,
সুখী সেই মানুষ, যে তাঁর আশ্রিতজন। [ধুয়ো]
১৯। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, এ পবিত্র খাদ্য গ্রহণের ফলে
আমাদের অন্তরে তোমার অনুগ্রহ সার্থক করে তোল।
তুমি শিমেয়োনের প্রত্যাশা পূরণ করায়
তিনি যেমন খ্রিষ্টকে কোলে বরণ না করা পর্যন্ত মৃত্যুকে দেখেননি,
তেমনি আমরা যেন প্রভুকে বরণ করার জন্য এগিয়ে যেতে যেতে
অনন্ত জীবন পেতে পারি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
২০। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
২২ ফোব্রুয়ারী - সাধু পিতরের ধর্মাসন
তুমি পিতর, আর এই শৈলের উপরে আমি আমার মণ্ডলী গেঁথে তুলব, আর পাতালের দ্বার তার উপরে জয়ী হবে না (মথি ১৬:১৮)। |
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশু খ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, অনুনয় করি: যখন তুমি
প্রৈরিতিক বিশ্বাস স্বীকারোক্তি-শৈলের উপরে আমাদের দৃঢ়মূল করেছ,
তখন তোমার আশীর্বাদে আমরা যেন কোন ঝড়ঝঞ্ঝা দ্বারা আলোড়িত না হই।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশু খ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদূত সাধু পিতরের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (৫:১-৪)