সাধু বেনেডিক্ট মঠের ওয়েব-সাইট - মহেশ্বরপাশা - খুলনা - বাংলাদেশ
এখানে বাইবেল, উপাসনা ও অন্যান্য ধর্মীয় বিষয়ে নানা সহায়িকা উপস্থাপিত যা উপকারে আসতে পারে।
আশা রাখি, সময় সময় নতুন নতুন বিষয় যোগ দিতে পারব। ধন্যবাদ।


• পুরাতন নিয়মের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড (শেষ সংস্করণ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)।
লেখাটার আলোচ্য বিষয় তিনটে: ১। পুরাতন নিয়মের হিব্রু ও গ্রীক পাঠ্যদ্বয়; ২। খ্রিষ্টীয় বাইবেলের পুস্তকগুলোর কানুন অনুযায়ী তালিকা; ৩। আজকালের অবস্থা।

• নূতন নিয়মের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড
লেখাটার আলোচ্য বিষয় মূলত দু’টো: ১। সুসমাচার; ২। প্রেরিতদূত পলের পত্রাবলি।

• জুবিলী বাইবেলের ঐশতাত্ত্বিক শব্দকোষ পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড

• জুবিলী বাইবেলে ব্যক্তিদের নামসূচী পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড (শেষ সংস্করণ ২ মার্চ ২০২৩)।

• বাইবেলের কালানুক্রমিক ঘটনাসূচী পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড (শেষ সংস্করণ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)।

• বাংলা বাইবেলে ব্যবহৃত হিব্রু ও আরামীয় নানা শব্দ পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড (শেষ সংস্করণ ১০ জানুয়ারী ২০২৩)।
আব্বা, আমেন, আল্লেলুইয়া, ইম্মানুয়েল ইত্যাদি হিব্রু ও আরামীয় শব্দগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা।

• পুরাতন নিয়মে মাসের নাম পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড (শেষ সংস্করণ ২১ আগষ্ট ২০২৩)।

• প্রভু যিশু সংক্রান্ত পর্ব ও মহাপর্ব পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড (শেষ সংস্করণ ২১ মার্চ ২০২৩)।
প্রভুর জন্মোৎসব (২৫শে ডিসেম্বর), প্রভুর আত্মপ্রকাশ (৬ই জানুয়ারী), পাস্কাপর্ব, মন্দিরে প্রভুকে উপস্থাপন (২রা ফেব্রুয়ারী), প্রভুর আগমন সংবাদ (২৫শে মার্চ), প্রভুর রূপান্তর (৬ই আগষ্ট) ও পবিত্র ক্রুশ উত্তোলন (১৪ই সেপ্টেম্বর) এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা।

বাংলা অক্ষরে গ্রীক মূলভাষায় প্রভুর প্রার্থনা পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড অথবা অডিও-ভিডিও ডাউনলোড
স্কুল-কলেজের নানা অনুষ্ঠান সাধারণত কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ ও প্রভুর প্রার্থনা পাঠ দিয়ে শুরু হয়। মুসলমান ও হিন্দু ছাত্রছাত্রী নিজ নিজ পাঠ্য মূলভাষায় আবৃত্তি করার পর সেটার সরলার্থও প্রদান করে, কিন্তু খ্রিষ্টিয়ান যারা তারা কেবল বাংলা, এমনকি সময় সময় ইংগ্রেজি ভাষাই ব্যবহার করে থাকে। আপনিও বাংলায় সরলার্থ দেবার আগে প্রভুর প্রার্থনাটা গ্রীক মূলভাষায় আবৃত্তি করতে পারেন।

বাংলা অক্ষরে গ্রীক মূলভাষায় ক্রুশের চিহ্ন পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড অথবা অডিও-ভিডিও ডাউনলোড
ক্রুশের চিহ্ন সম্পর্কে ফাইলে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া রয়েছে। তবু মনে রাখা উচিত যে, প্রাহরিক উপাসনায় দিনের প্রথম প্রহরের শুরুতে ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল দিয়ে এষ্ঠে তিনবার ক্রুশচিহ্ন আঁকতে আঁকতে তিনবার বলি “হে প্রভু, খুলে দাও আমার ওষ্ঠাধর, আর আমার মুখ প্রচার করবে তোমার প্রশংসাবাদ” (সাম ৫১:১৭); অন্যান্য প্রহরের শুরুতে (ও রজারীমালার শুরুতে) ক্রুশের চিহ্ন করার সময়ে “পিতা ও পুত্র …” না বলে বরং বলি “দোহাই পরমেশ্বর, আমাকে কর উদ্ধার, আমার সহায়তায় শীঘ্রই এসো, প্রভু” (সাম ৭০:২), এবং ধর্মীয় সম্মেলনের শুরুতে ক্রুশের চিহ্ন করতে করতে বলি “আমাদের সহায়তা সেই প্রভুর নামে, আকাশ ও পৃথিবীর নির্মাতা যিনি” (সাম ১২৪:৮)।
আরও, সুসমাচার পাঠের প্রারম্ভে (উদাহরণ স্বরূপ, “সাধু লুক রচিত সুসমাচার থেকে পাঠ” বলতে বলতে) আমরা হয় সেই পাতায় ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল দিয়ে ক্রুশের চিহ্ন আঁকি, না হয় ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল দিয়ে কপালে, ওষ্ঠে ও বুকে ক্রুশচিহ্ন আঁকি ও পাঠ শেষে পাতাটা চুম্বর করে চাপা গলায় বলতে পারি “সুসমাচারের উক্তি দ্বারা আমাদের সমস্ত অপরাধ বিলীন হোক”। উপরন্তু মা মারীয়ার গীতিকা (লুক, ১:৪৮-৫৫), জাখারিয়ার গীতিকা (লুক ১:৬৮-৭৯), ও শিমেয়োনের গীতিকা (লুক ২:২৯-৩২) শুরু করতে করতে ক্রুশের চিহ্ন করার প্রাচীন ঐতিহ্য পালন করি।

বাংলা অক্ষরে Τρισάγιον - ত্রিসাগিওন পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড অথবা অডিও-ভিডিও ডাউনলোড
“Τρισάγιον” (ত্রিসাগিওন অর্থাৎ “ত্রি-পবিত্র”) হলো গ্রীক ভাষায় একটা প্রাচীন সঙ্গীত। কথিত আছে, ২৪শে সেপ্টেম্বর ৪৪৭ সালে কনস্তান্তিনোপলিস শহর (আজকালের তুরস্কস্থ ইস্তাম্বুল শহর) তীব্র ভূমিকম্পে কম্পান্বিত হলে সম্রাট ২য় থেওদোসিওস, শহরের পাট্রিয়ার্খ সাধু প্রক্লোস ও খ্রিষ্টভক্তগণ একত্রে “Ἁγία Σοφία” (আগিয়া সফিয়া - পবিত্র প্রজ্ঞা) নামক মহাগির্জায় সম্মিলিত হয়ে ঈশ্বরের সহায়তা প্রার্থনা করতে করতে একটি শিশু অলৌকিক ভাবে উচ্চতে উত্তোলিত হয়; তাতে সবাই বলে ওঠে ‘Κύριε, ἐλέησον’ (কিরিয়ে এলেইসোন - প্রভু, দয়া কর); তাতে শিশুটি নিচে নেমে এসে উচ্চকণ্ঠে জনগণকে “পবিত্র পরমেশ্বর, পবিত্র শক্তিশালী, পবিত্র অমর” বলে প্রার্থনা করতে আহ্বান করে; এবং তা‑ই বলে সে প্রাণত্যাগ করে। ঘটনাটা জনশ্রুতি মাত্র হলেও তবু ‘ত্রিসাগিওন’ সঙ্গীতটা খাল্‌কেদোন শহরে অনুষ্ঠিত মহাসভায় (৪৫১ খ্রিষ্টাব্দে) বাস্তবেই পরিবেশিত হয়, তাতে অনুমান করা যায় যে, সঙ্গীতটা মহাসভার আগেও অন্যান্য মণ্ডলীগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছিল। “আগিওস” তথা “পবিত্র” শব্দটা সঙ্গীতে তিন বার উচ্চারিত, সেইভাবে যেভাবে ইশাইয়ার দর্শন অনুসারে (৬ অধ্যায় ৩ পদের প্রথমাংশ দ্রঃ) সেরাফগণ “পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র” গান করছিলেন। আজকালেও সঙ্গীতটা যথেষ্ট প্রচলিত (আমাদের এই সুর ছাড়া ইউটিউব-এ সুন্দর নানা ‘Trisagion’ সঙ্গীত পাওয়া যেতে পারে) ও যেকোন সময় পরিবেশন করা যেতে পারে, যেমন শোভাযাত্রা বা অন্যান্য ধর্মানুষ্ঠানের সময়ে। সাধারণত সঙ্গীতটা দু’টো ভাষায় পরিবেশিত তথা সঙ্গীতের গ্রীক মূলভাষায় ও সেই ভাষায় যা প্রতিটি দেশের উপাসক মণ্ডলীর জাতীয় ভাষা; তবু কেবল জাতীয় ভাষায়ও গান করা যেতে পারে।
Τρισάγιον - ত্রিসাগিওন (বিকল্প): পাঠ্য শো অথবা পাঠ্য ডাউনলোড অথবা অডিও-ভিডিও ডাউনলোড
কালক্রমে ‘ত্রিসাগিওন’ সঙ্গীতটা রোম মণ্ডলীর উপাসনা-গ্রন্থে স্থান পায়; বাস্তবাকই সঙ্গীতটা পুণ্য শুক্রবারে, বিকেলবেলায়, ক্রুশ-চুম্বনের সময়ে পরিবেশন করা হয়। কিন্তু সঙ্গীতের সাজানোটা একটু অন্যরকম।

• খ্রিষ্টমণ্ডলীর পিতৃগণ সম্পর্কে
‘খ্রিষ্টমণ্ডলীর পিতৃগণ’ বলতে আমাদের কী বুঝতে হয়? তাঁরা ছিলেন সেই খ্রিষ্টিয়ান প্রাচীন ঐশতত্ত্ববিদ যাঁদের লেখা খ্রিষ্টধর্মের তত্ত্বের ভিত্তিস্বরূপ বলে পরিগণিত। তাঁরা ১ম শতাব্দী থেকে মোটামুটি ৮ম শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত জীবনযাপন করেছিলেন। বাস্তবিকই শেষ ব্যক্তিত্ব হলেন দামাস্কের সাধু জন যিনি ৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান।
১। পিতৃগণের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ও প্রাধান্যের অধিকারী হলেন তাঁরা যাঁরা প্রৈরিতিক পিতৃগণ বলে অভিহিত, যেহেতু প্রভুর প্রেরিতগণের শিষ্য হওয়ায় তাঁরা তাঁদের প্রকৃত শিক্ষা সম্প্রদান করেছেন।
২। এঁনাদের পরে তাঁদের লেখা গুরুত্বপূর্ণ যাঁরা খ্রিষ্টধর্মের পক্ষসমর্থক বলে অভিহিত। এঁনারা ছিলেন প্রৈরিতিক পিতৃগণের প্রত্যক্ষ শিষ্য বা তাঁরা যাঁরা পক্ষসমর্থকদের প্রচারে খ্রিষ্টতত্ত্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছিলেন; যেমন ২য় শতাব্দীর সাধু ইউস্তিনুস, সাধু ইরেনেউস, তের্তুল্লিয়ানুস ইত্যাদি লেখকগণ।
৩। খ্রিষ্টতত্ত্ব গবেষণা ও বিকাশ ক্ষেত্রে পরবর্তী শতাব্দীগুলোর লেখকগণ প্রৈরিতিক পিতৃগণখ্রিষ্টধর্মের পক্ষসমর্থকগণ দ্বারা উপকৃত হয়েছিলেন, যেমন আলেক্সান্দ্রিয়ার বিশপ সাধু আথানাসিউস, যেরুশালেমের বিশপ সাধু সিরিল, মিলানের বিশপ সাধু আম্ব্রোজ, হিপ্পোর বিশপ সাধু আগস্তিন ইত্যাদি নাম করা ঐশতত্ত্ববিদ।
তাই, যেমন পশ্চিমা দর্শনবিদ্যা অধ্যয়ন ক্ষেত্রে প্লেটো, এরিস্টটল ইত্যাদি প্রাচীন দার্শনিকদের লেখা অপরিহার্য, তেমনি খ্রিষ্টতত্ত্ব অধ্যয়ন ক্ষেত্রেও প্রৈরিতিক পিতৃগণ থেকে শুরু করে অন্যান্য পিতৃগণের লেখা ধারাবাহিক ভাবে অধ্যয়ন করা বাঞ্ছনীয়। তবেই আমাদের খ্রিষ্টতত্ত্ব-জ্ঞান ভিত্তিছাড়া না হয়ে বরং হবে মজবুত ও নির্ভরযোগ্য।