পাস্কাকাল

প্রভু যিশুর পুনরুত্থান (সাধু বেনেডিক্ট মঠ - উপাসনালয়)
অনুষ্ঠানসমূহ: পাস্কা-নিশিজাগরণী | পাস্কা-রবিবার | ২য় রবিবার | ৩য় রবিবার | ৪র্থ রবিবার | ৫ম রবিবার | ৬ষ্ঠ রবিবার | স্বর্গারোহণ | ৭ম রবিবার | পঞ্চাশত্তমী
৩য় পাস্কা-রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে ঈশ্বর, আশীর্বাদ কর,
প্রাণে নবায়িত হয়েছে বলে তোমার ভক্তরা নিত্যই আনন্দিত হোক।
ঐশপুত্রত্বের গৌরব ফিরে পেয়ে তারা যেমন আজ উল্লসিত, তেমনি
নিশ্চিত আশা নিয়ে তারা যেন পুনরুত্থানের দিনের আনন্দের প্রতীক্ষায় থাকে।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (২:১৪,২২-২৮)
[পঞ্চাশত্তমী পর্বের দিনে] পিতর সেই এগারোজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে জোর গলায় একথা বললেন: ‘ইস্রায়েলের মানুষেরা, এই সমস্ত কথা শোন: নাজারেথীয় যিশু, যিনি ঈশ্বর দ্বারা তোমাদের কাছে এমন পরাক্রম-কর্ম, অলৌকিক লক্ষণ ও চিহ্নকর্ম দ্বারাই প্রমাণসিদ্ধ মানুষ ছিলেন, যা—তোমরা নিজেরাই যেমনটি জান—ঈশ্বর নিজে তাঁরই দ্বারা তোমাদের মধ্যে সাধন করেছেন, সেই যিশুকে ঈশ্বরের নিরূপিত পরিকল্পনা ও পূর্বজ্ঞান অনুসারে তোমাদের হাতে তুলে দেওয়া হলে পর তোমরা তাঁকে ধর্মহীনদের হাত দ্বারা ক্রুশবিদ্ধ করিয়ে হত্যা করেছ।
কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যু-যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে পুনরুত্থিত করেছেন, কারণ মৃত্যু যে তাঁকে নিজের বশ্যতায় ধরে রাখবে, তা সম্ভব ছিল না; বস্তুত দাউদ তাঁর সম্বন্ধে বলেন:
আমার সামনে প্রভুকে অনুক্ষণ রাখলাম,
কারণ তিনি আমার ডান পাশে থাকেন
আমি যেন বিচলিত না হই।
তাই আমার অন্তর আনন্দ করল,
আমার জিহ্বা মেতে উঠল;
আমার দেহও প্রত্যাশায় বিশ্রাম পাবে,
তুমি যে আমার প্রাণ বিসর্জন দেবে না পাতালের হাতে,
তোমার পুণ্যজনকেও তুমি অবক্ষয় দেখতে দেবে না।
তুমি আমাকে জানিয়ে দিয়েছ জীবনের পথ,
তোমার শ্রীমুখ দ্বারা আমাকে আনন্দে পূর্ণ করবে।
ভাইয়েরা, সেই কুলপতি দাউদ সম্বন্ধে আমি তোমাদের মুক্তকণ্ঠে বলতে পারি যে, তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তাঁকে সমাধিও দেওয়া হয়েছে, এবং তাঁর সমাধিমন্দির আজও পর্যন্ত আমাদের মাঝে রয়েছে। কিন্তু, যেহেতু তিনি নবী ছিলেন, এবং জানতেন যে, ঈশ্বর তাঁর ঔরসের এক ফল তাঁর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করবেন বলে দিব্যি দিয়ে তাঁর কাছে শপথ করেছিলেন, সেজন্য খ্রিষ্টের পুনরুত্থান আগে থেকে দেখে তিনি সেবিষয়ে একথা বলেছিলেন যে, তাঁকে পাতালে বিসর্জনও দেওয়া হয়নি, তাঁর মাংসও অবক্ষয় দেখেনি।
এই যিশুকেই ঈশ্বর পুনরুত্থিত করেছেন, আর আমরা সকলেই তার সাক্ষী। অতএব ঈশ্বরের ডান হাত দ্বারা উত্তোলিত হয়ে তিনি পিতার কাছ থেকে সেই প্রতিশ্রুত পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ করে তাঁকে বর্ষণ করেছেন, যেমনটি তোমরা আজ দেখতে ও শুনতে পাচ্ছ।’
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ১৬
ধুয়ো: তুমি আমাকে জানিয়ে দিয়েছ, প্রভু,
জীবনের পথ।
আমাকে রক্ষা কর গো ঈশ্বর, তোমাতেই নিয়েছি আশ্রয়।
প্রভুকে বলেছি, ‘প্রভু, তুমিই আমার মঙ্গল।’
প্রভুই আমার স্বত্বাংশ, আমার পানপাত্র,
তোমার হাতেই আমার নিয়তির ভার। [ধুয়ো]
প্রভুকে ধন্য বলব, তিনি যে আমাকে মন্ত্রণা দেন,
রাত্রিতেও আমাকে উদ্বুদ্ধ করে আমার অন্তর।
আমার সামনে প্রভুকে অনুক্ষণ রাখি,
তিনি আমার ডান পাশে বলে আমি টলব না। [ধুয়ো]
তাই আমার অন্তর আনন্দ করে, মেতে ওঠে আমার প্রাণ,
আমার দেহও ভরসাভরে করে বিশ্রাম,
তুমি যে আমাকে বিসর্জন দেবে না পাতালের হাতে,
না, তোমার ভক্তজনকে তুমি সেই গহ্বর দেখতে দেবে না। [ধুয়ো]
তুমি আমাকে জানিয়ে দেবে জীবনের পথ,
তোমার সম্মুখেই আনন্দের পূর্ণতা,
তোমার ডান পাশেই
চিরন্তন সুখ। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
প্রেরিতদূত সাধু পিতরের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (১:১৭-২১)
প্রিয়জনেরা, যিনি কোন পক্ষপাতিত্ব না করে প্রত্যেকের কর্ম অনুযায়ী বিচার করেন, তাঁকে যখন পিতা বলে ডাক, তখন তোমরা যতদিন এ জগতে প্রবাসী হয়ে থাক, ততদিন সভয়েই জীবনযাপন কর, একথা জেনে যে, তোমাদের সেই পিতৃপরম্পরাগত অসার জীবনধারণের হাত থেকে তোমাদের তো রুপো বা সোনার মত ক্ষয়শীল কিছুর মূল্যে নয়, বরং নিষ্কলঙ্ক ও নির্দোষ মেষশাবক-স্বরূপ সেই খ্রিষ্টেরই মূল্যবান রক্তমূল্যে মুক্ত করা হয়েছে।
তিনি জগৎপত্তনের আগেই চিহ্নিত হয়েছিলেন, কিন্তু এই অন্তিমকালে তোমাদের জন্য আবির্ভূত হয়েছেন! তাঁর দ্বারা তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছ যিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত ক’রে তাঁকে গৌরব দান করেছেন, যেন তোমাদের বিশ্বাস ও আশা ঈশ্বরেই থাকে।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
প্রভু যিশু, আমাদের কাছে শাস্ত্রের অর্থ বুঝিয়ে দাও;
তুমি কথা বললে আমাদের হৃদয় জ্বলে জ্বলে ওঠে।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ লুক-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (২৪:১৩-৩৫)
আর দেখ, সেই একই দিনে [সপ্তাহের প্রথম দিনে] শিষ্যদের মধ্যে দু’জন এম্মাউস নামে একটা গ্রামের দিকে পথে চলছিলেন—গ্রামটা যেরুশালেম থেকে প্রায় বারো কিলোমিটার দূরে। যা কিছু ঘটেছিল, তাঁরা তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তাঁরা আলাপ-আলোচনা করছিলেন, সেসময়ে যিশু নিজেই এগিয়ে এসে তাঁদের সঙ্গে পথ চলতে লাগলেন; কিন্তু তাঁকে চিনতে তাঁদের চোখ বাধা পাচ্ছিল।
তিনি তাঁদের বললেন, ‘চলতে চলতে তোমরা নিজেদের মধ্যে যা যা বলাবলি করছ, সেই সমস্ত কথার বিষয়টা কী?’ তাঁরা বিষণ্ণ মুখে দাঁড়িয়ে রইলেন; পরে ক্লেওপাস নামে তাঁদের একজন উত্তরে তাঁকে বললেন, ‘আপনি কি যেরুশালেমে একাই প্রবাসী যে, এই কয়েক দিনে যা যা ঘটেছে তা জানেন না?’
তিনি তাঁদের বললেন, ‘কী ঘটেছে?’ তাঁরা তাঁকে বললেন, ‘সেইসব কিছু, যা নাজারেথের সেই যিশুকে নিয়ে ঘটেছে, ঈশ্বরের ও সমস্ত জনগণের সামনে যিনি কাজে ও কথায় পরাক্রমী নবী ছিলেন! আর কীভাবেই না প্রধান যাজকেরা ও আমাদের সমাজনেতারা তাঁকে প্রাণদণ্ড দেবার জন্য তুলে দিলেন ও ক্রুশবিদ্ধ করালেন! আমরা আশা করছিলাম যে, তিনিই সেই ব্যক্তি, যিনি ইস্রায়েলের মুক্তিকর্ম সাধন করবেন। সর্বোপরি, আজ তিন দিন হল এসব ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দলের কয়েকজন স্ত্রীলোক আবার আমাদের স্তম্ভিত করল: সকালবেলায় তারা তাঁর সমাধিগুহায় গিয়েছিল, কিন্তু তাঁর দেহ না পেয়ে ফিরে এসে বলল, এমন স্বর্গদূতদেরও তারা দর্শন পেয়েছে যাঁরা বলেন, তিনি জীবিত আছেন। আমাদের কয়েকজন সঙ্গীও সমাধিগুহায় গিয়ে, সেই স্ত্রীলোকেরা যেমন বলেছিল, তেমনি দেখতে পেল, কিন্তু তাঁকে দেখতে পায়নি।’
তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘কেমন নির্বোধ! নবীরা যা কিছু বলেছিলেন, সেই সমস্ত কথা বিশ্বাস করায় তোমরা অন্তরে কেমন ধীর! এ কি অবধারিত ছিল না যে, আপন গৌরবে প্রবেশ করার আগে খ্রিষ্টকে এই সমস্ত যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে?’
তখন মোশি ও সকল নবী থেকে শুরু করে তিনি সমস্ত শাস্ত্রে তাঁর নিজের বিষয়ে যে সকল কথা আছে, তার অর্থ তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন।
তাঁরা যেখানে যাচ্ছিলেন, সেই গ্রামের কাছে যখন এসে পৌঁছলেন, তখন তিনি আরও অধিক এগিয়ে যাবার ভান করলেন। কিন্তু তাঁরা জোর দিয়ে বলতে লাগলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকুন; সন্ধ্যা হয়ে আসছে, বেলা প্রায় গেছে।’ তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবার জন্য ভিতরে গেলেন।
পরে, যখন তিনি তাঁদের সঙ্গে ভোজে বসে ছিলেন, তখন রুটি নিয়ে ‘ধন্য’ স্তুতিবাদ উচ্চারণ করলেন, এবং তা ছিঁড়ে তাঁদের দিলেন। তখন তাঁদের চোখ খুলে গেল আর তাঁরা তাঁকে চিনলেন, তিনি কিন্তু তাঁদের সামনে থেকে মিলিয়ে গেলেন। তাঁরা একে অন্যকে বললেন, ‘পথে তিনি যখন আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, যখন আমাদের কাছে শাস্ত্রের অর্থ বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের বুকে হৃদয় কি জ্বলে জ্বলে উঠছিল না?’
সেই ক্ষণেই উঠে তাঁরা যেরুশালেমে ফিরে গেলেন; সেখানে দেখতে পেলেন, সেই এগারোজন ও তাঁদের সঙ্গীরা সমবেত আছেন। তাঁরা বললেন, ‘হ্যাঁ, সত্যি, প্রভু পুনরুত্থান করেছেন, ও শিমোনকে দেখা দিয়েছেন।’ পরে সেই দু’জন, পথে যা ঘটেছিল ও কেমন করে রুটি-ছেঁড়ায়ই তাঁরা তাঁকে চিনতে পেরেছিলেন, এই সমস্ত কথা শোনাতে লাগলেন।
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
বিশপ সাধু আগস্তিনের উপদেশ
এ দিনগুলিতে সুসমাচারের চারজন রচয়িতা অনুসারে প্রভুর পুনরুত্থানের বিবরণী পাঠ করা হয়; সুতরাং সব চারজনেরই বিবরণী পাঠ করা দরকার, কেননা এক একজন সবকিছু বলেননি, বরং একজন যা বলেননি তা আর একজন বলেছেন; একপ্রকারে এক একজন আর একজনের জন্য স্থান দিয়েছেন যাতে সকলেই প্রয়োজন হতে পারেন।
যে দু’জন শিষ্য বারোজনের দলের ছিলেন না, তাঁদের বিষয়ে রচয়িতা মার্ক সংক্ষেপে লিখেছেন যা লুক বিস্তারিত ভাবেই বর্ণনা করেছেন। তাঁরা ছিলেন সেই শিষ্য যাঁরা পথে চলতে চলতে প্রভু তাঁদের কাছে দেখা দিয়ে তাঁদের সঙ্গে চলেছিলেন। মার্ক কেবল বলেন, তিনি তাঁদের কাছে দেখা দিলেন যাঁরা পথ চলছিলেন; রচয়িতা লুক তাছাড়া এ বর্ণনাও দিয়েছেন, তিনি কী কী বলেছিলেন, তাঁরা কী কী উত্তর দিয়েছিলেন, তিনি তাঁদের সঙ্গে কত দূরে পথ চলেছিলেন আর তিনি রুটি ছিঁড়তেই তাঁরা কীভাবে তাঁকে চিনতে পেরেছিলেন। তবে ভ্রাতৃগণ, আমরা কেন বর্ণনাটা ব্যাখ্যা করি? কেননা আমরা পুনরুত্থিত সেই খ্রিষ্ট প্রভুর বিশ্বাসে নিজেদের স্থিতমূল করতে চাই। যখন সুসমাচার শুনেছিলাম, তখনও আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, আর আজ বিশ্বাসী হয়েই আমরা এ গির্জায় ঢুকেছি; তথাপি আমি জানি না, যার স্মৃতি পুনঃপুনঃ পালন করি আমরা সেকথা কেন আনন্দের সঙ্গেই শুনি। কি করেই বা আমাদের হৃদয় আনন্দ করবে না, যখন মনে করি, পথ চলতে চলতে যাঁদের কাছে প্রভু দেখা দিয়েছিলেন আমরা তাঁদের চেয়ে ভাল? কেননা যা তাঁরা তখনও বিশ্বাস করছিলেন না, আমরা তা বিশ্বাসই করি। তাঁরা আশা হারিয়েছিলেন; আমরা কিন্তু সন্দেহ করি না, এমনকি যা ছিল তাঁদের সন্দেহের বস্তু, ঠিক তাই আমরা সন্দেহ করি না।
প্রভু ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন বিধায় তাঁরা আশা হারিয়েছিলেন; তা তাঁদের কথায় তখনই স্পষ্ট প্রকাশ পেয়েছিল যখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে যা যা বলাবলি করছ, সেই সমস্ত কথার বিষয়টা কী? আর তোমরা অবসন্ন কেন? তাঁরা উত্তরে বলেছিলেন, আপনি কি যেরুশালেমে একাই প্রবাসী যে, এই কয়েক দিনে যা যা ঘটেছে তা জানেন না? সবকিছু জানা সত্ত্বেও তিনি নিজের বিষয়ে প্রশ্ন রাখছিলেন, কেননা তিনি তাঁদের সঙ্গে নিজের কথার সহভাগিতা করতে চাচ্ছিলেন। তখন তাঁরা বলেছিলেন, সেইসব কিছু, যা নাজারেথের সেই যিশুকে নিয়ে ঘটেছে, ঈশ্বরের ও সকল লোকের সামনে যিনি কাজে ও কথায় পরাক্রমী নবী ছিলেন! আর কীভাবেই না প্রধান যাজকেরা ও আমাদের সমাজনেতারা তাঁকে প্রাণদণ্ড দেবার জন্য তুলে দিলেন ও ক্রুশবিদ্ধ করালেন! আমরা আশা করছিলাম যে… (লুক ২৪:১৭, ১৮-২১)।
তোমরা আশা করছিলে: এখন কি আর আশা কর না? এটা কি শিষ্যরূপে তোমাদের সমস্ত দৃঢ়তা? ক্রুশে সেই দস্যু তোমাদের চেয়ে বেশ আগেই রয়েছে! তোমরা তাঁকেই ভুলে গেছ যিনি তোমাদের শিক্ষা দিতেন, আর সেই দস্যু তাঁকেই চিনতে পারল যিনি ক্রুশে ঝুলানো। আমরা আশা করছিলাম। তোমরা কীবা আশা করছিলে? আশা করছিলাম, তিনিই ইস্রায়েলের মুক্তিকর্ম সাধন করবেন (লুক ২৪:২১)। তোমরা যা আশা করছিলে আর তিনি ক্রুশবিদ্ধ হলে তোমরা যা হারিয়েছ, সেই দস্যু তা চিনতে পেরেছে। কেননা সে প্রভুকে বলেছিল, যিশু, তুমি যখন তোমার রাজ্যে প্রবেশ করবে, তখন আমার কথা মনে রেখ। এজন্যই তিনি ছিলেন ইস্রায়েলের মুক্তিসাধক। সেই ক্রুশ ছিল শিক্ষালয়: এখানেই গুরু দস্যুকে শিক্ষা দিলেন; যে কাষ্ঠে তিনি ঝুলানো তা হয়ে উঠল আসন যা থেকে গুরু শিক্ষা দিলেন। কিন্তু যিনি তোমাদের কাছে ফিরে গেলেন, তিনি তোমাদের আশা পুনর্জাগরিত করুন। আর তাই ঘটল। তবু প্রিয়জনেরা, স্মরণে রাখ, যাঁদের চোখ এতই আচ্ছন্ন ছিল যে তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন না, প্রভু যিশু রুটি-ছেঁড়ার সময়েই তাঁদের কাছে নিজেকে চিনিয়ে দিতে চাইলেন। আমি যা বলছি, ভক্তরা তা বোঝে: তাঁরা রুটি-ছেঁড়ার সময়েই প্রভুকে চিনতে পারলেন। কেননা সমস্ত রুটি নয়, বরং যে রুটি খ্রিষ্টের আশীর্বাদ পায়, সেই রুটিই খ্রিষ্টের দেহ হয়ে ওঠে।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ২৩
ধুয়ো: যিশু রুটি ছিঁড়লেই
শিষ্যেরা তাঁকে চিনতে পারলেন। আল্লেলুইয়া।
দেখ, ভাইদের একত্রে বাস করা
কতই না ভাল, কতই না সুন্দর!
যেমন মাথায় সেই উৎকৃষ্ট তেল যা দাড়ি বেয়ে, আরোনের দাড়ি বেয়ে ঝরে পড়ে,
ঝরে পড়ে তাঁর পোশাকের গলবন্ধনীর উপর,
তেমনি সেই হার্মোনের শিশির,
যা ঝরে পড়ে সিয়োনের চূড়ায় চূড়ায়।
সেইখানে তো প্রভু জারি করেছেন আশীর্বাদ,
চিরকালীন জীবনদান। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, তোমার জনগণের প্রতি সদয় দৃষ্টিপাত করে আশীর্বাদ কর:
তোমার কৃপায় যাদের তুমি দিব্য রহস্যময় অন্ন দ্বারা নবায়িত করেছ,
তোমার সহায়তায় তারা যেন
একদিন অক্ষয় পুনরুত্থানের গৌরবে গৌরবান্বিত হতে পারে।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
৪র্থ পাস্কা-রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর,
স্বর্গীয় আনন্দের সহভাগিতার দিকে আমাদের চালনা কর,
যেন তোমার দুর্বল মেষপাল সেখানে পৌঁছতে পারে
যেখানে সেই বলবান পালক আগে গিয়ে তাদের অপেক্ষায় আছেন।
পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে তিনি ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন
ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (২:১৪ক,৩৬-৪১)
[পঞ্চাশত্তমী পর্বের দিনে] পিতর সেই এগারোজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে জোর গলায় একথা বললেন: ‘সমগ্র ইস্রায়েলকুল নিশ্চিত হয়ে একথা জানুক যে, ঈশ্বর যাঁকে প্রভু ও খ্রিষ্ট করে তুলেছেন, তিনি হলেন সেই যিশু যাঁকে তোমরা ক্রুশে দিয়েছিলে।’ তেমন কথা শুনে তাদের হৃদয় কেমন যেন বিদ্ধই হল, এবং পিতরকে ও অন্য প্রেরিতদূতদের বলল, ‘ভাইয়েরা, আমাদের কী করা উচিত?’
পিতর তাদের বললেন, ‘মনপরিবর্তন কর, এবং তোমাদের পাপক্ষমার উদ্দেশে তোমরা প্রত্যেকে যিশুখ্রিষ্ট-নামের খাতিরে বাপ্তিস্ম গ্রহণ কর: তবেই সেই দান, সেই পবিত্র আত্মাকেই পাবে। কেননা এই প্রতিশ্রুতি তোমাদের জন্য, তোমাদের সন্তানদের জন্য, ও সেই সকলেরই জন্য দেওয়া যারা দূরে আছে—সেই সকলেরই জন্য আমাদের ঈশ্বর প্রভু যাদের ডেকে আনবেন।’
আরও বহু বহু যুক্তি দেখিয়ে তিনি তাদের উদ্দেশ করে কথা বললেন, এবং এই বলে তাদের সনির্বন্ধ আবেদন জানালেন: ‘এই প্রজন্মের কুটিল মানুষের হাত থেকে নিজেদের ত্রাণ কর।’ তখন যারা তাঁর কথা গ্রহণ করল, তাদের বাপ্তিস্ম দেওয়া হল।
সেদিন আনুমানিক তিন হাজার লোক তাঁদের সংখ্যায় যুক্ত হল।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ২৩
ধুয়ো: প্রভু আমার পালক;
অভাব নেই তো আমার।
প্রভু আমার পালক;
অভাব নেই তো আমার।
আমায় তিনি শুইয়ে রাখেন নবীন ঘাসের চারণমাঠে,
আমায় নিয়ে যান শান্ত জলের কূলে; [ধুয়ো]
তিনি সঞ্জীবিত করেন আমার প্রাণ,
তাঁর নামের খাতিরে আমায় চালনা করেন ধর্মপথে।
মৃত্যু-ছায়ার উপত্যকাও যদি পেরিয়ে যাই,
আমি কোন অনিষ্টের ভয় করি না, তুমি যে আমার সঙ্গে আছ। [ধুয়ো]
তোমার যষ্টি, তোমার পাচনি আমাকে সান্ত্বনা দেয়।
আমার সম্মুখে তুমি সাজাও ভোজনপাট আমার শত্রুদের সামনে;
আমার মাথা তুমি তৈলসিক্ত কর;
আমার পানপাত্র উচ্ছলিত। [ধুয়ো]
মঙ্গল ও কৃপাই হবে আমার সহচর
আমার জীবনের সমস্ত দিন ধরে,
আমি প্রভুর গৃহে বাস করব
চিরদিনের মত! [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
প্রেরিতদূত সাধু পিতরের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (২:২০খ-২৫)
প্রিয়জনেরা, সদাচরণ ক’রে সহিষ্ণুতার সঙ্গে যন্ত্রণা সহ্য করা, তা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অনুগ্রহ। আর আসলে তোমরা এই উদ্দেশ্যেই আহূত হয়েছ, কারণ খ্রিষ্টও তোমাদের জন্য যন্ত্রণা ভোগ ক’রে তোমাদের জন্য একটি আদর্শ রেখে গেছেন, তোমরা যেন তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ কর। তিনি কোন পাপ করেননি; তাঁর মুখেও কখনও পাওয়া যায়নি ছলনার কথা। অপমানিত হলে তিনি প্রত্যুত্তরে অপমান করতেন না; যন্ত্রণার সময়ে হুমকি দিতেন না, বরং ন্যায় অনুসারে বিচার করেন যিনি, তাঁরই হাতে তিনি নিজেকে সঁপে দিলেন।
তিনি নিজের দেহে আমাদের সমস্ত পাপ ক্রুশবৃক্ষের উপরে তুলে বহন করলেন, আমরা যেন পাপের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ধর্মময়তার উদ্দেশে জীবনযাপন করি।
তাঁরই ক্ষতগুণে তোমরা সুস্থ হয়ে উঠেছ। তোমরা মেষের মত পথভ্রষ্ট হয়েছিলে, কিন্তু এখন তোমাদের প্রাণের পালক ও অধ্যক্ষের কাছে ফিরে এসেছ।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমিই উত্তম মেষপালক—একথা বলছেন প্রভু;
যারা আমার নিজের মেষ, তাদের আমি জানি, তারাও আমাকে জানে।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (১০:১-১০)
একদিন যিশু বললেন: ‘আমি আপনাদের সত্যি সত্যি বলছি, দরজা দিয়ে মেষঘেরিতে না ঢুকে যে কেউ অন্য দিক দিয়ে বেয়ে ওঠে, সে তো চোর ও দস্যু; দরজা দিয়ে যে ঢোকে, সে-ই মেষগুলির পালক।
দারোয়ান তারই জন্য দরজা খুলে দেয়; মেষগুলি তার কণ্ঠস্বর শোনে, ও সে নিজের মেষগুলিকে এক একটা নাম ধরে ডাকে ও তাদের বাইরে নিয়ে যায়। নিজের সমস্ত মেষ বাইরে আনবার পর সে তাদের আগে আগে চলতে থাকে, আর মেষগুলি তার কণ্ঠ চেনে বিধায় তার পিছু পিছু চলে। অচেনা লোকের পিছনে তারা চলে না, বরং তার কাছ থেকে পালিয়ে যাবে, কারণ অচেনা লোকের কণ্ঠ তারা চেনে না।’
যিশু এই রূপকটা তাঁদেরই জন্য বলেছিলেন, কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারলেন না তিনি তাঁদের কী বলতে চাচ্ছিলেন।
তাই যিশু আবার তাঁদের বললেন, ‘আমি আপনাদের সত্যি সত্যি বলছি, আমিই মেষগুলির দরজা। আমার আগে যারা এসেছিল, তারা সকলে চোর ও দস্যু, কিন্তু মেষগুলি তাদের দিকে কান দেয়নি। আমিই দরজা: কেউ যদি আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে, সে পরিত্রাণ পাবে, সে ভিতরে যাবে আবার বাইরে আসবে এবং চারণভূমির সন্ধান পাবে।
চোর আসে কেবল চুরি, হত্যা ও ধ্বংস করার জন্য; আমি এসেছি তারা যেন জীবন পায় ও প্রচুর পরিমাণেই তা পায়।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
মহাপ্রাণ সাধু গ্রেগরি-লিখিত ‘সুসমাচারে উপদেশাবলি’
আমিই উত্তম মেষপালক। যারা আমার নিজের মেষ, তাদের আমি জানি, অর্থাৎ তাদের ভালবাসি, তারাও আমাকে জানে (যোহন ১০:১৪)। বা স্পষ্ট কথায়, যারা ভালবাসে, তারা পরের জন্য আত্মদান করে; কেননা সত্যকে ভালবাসার আগে সত্যকে জানাই আসে।
আমার প্রিয় ভাইবোনেরা, একটু ভেবে দেখ তোমরা তাঁর মেষ কিনা, ভেবে দেখ তাঁকে জান কিনা, ভেবে দেখ সত্যের আলো জান কিনা। বলতে চাই, বিশ্বাস নয়, ভালবাসার মধ্য দিয়েই তোমরা জান কিনা; বিশ্বাস-স্বীকারের মধ্য দিয়ে নয়, বাস্তব ভালবাসার মধ্য দিয়েই তাঁকে জান কিনা। যিনি এসব কথা বলেন, সেই সুসমাচার-রচয়িতা যোহন এবিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, যে বলে সে ঈশ্বরকে জানে, অথচ তাঁর আজ্ঞাগুলি পালন করে না, সে মিথ্যাবাদী (১ যোহন ২:৪)।
সেজন্য একথার পরপরেই প্রভু বলে চলেন, পিতা আমাকে জানেন আর আমি পিতাকে জানি, এবং মেষগুলির জন্য আমার প্রাণ বিসর্জন দিই (যোহন ১০:১৫)। তিনি আসলে বলতে চান, আমার মেষগুলির জন্য প্রাণ বিসর্জন দিই, এতেই প্রমাণিত যে আমি পিতাকে জানি ও পিতা আমাকে জানেন। অর্থাৎ, যে ভালবাসার খাতিরে আমি মেষগুলির জন্য মরতে যাচ্ছি, সে ভালবাসায় আমি দেখাই পিতার প্রতি আমার ভালবাসার মাত্রা।
মেষগুলির কথা আবার উত্থাপন করে তিনি বলেন, যে মেষগুলি আমার নিজের, তারাই আমার কণ্ঠে কান দেয়; তাদের আমি জানি আর তারা আমার অনুসরণ করে; এবং আমি তাদের অনন্ত জীবন দান করি (যোহন ১০:২৭-২৮)। এ মেষগুলির বিষয়ে তিনি কিঞ্চিৎ আগে বলেছিলেন, কেউ যদি আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে, সে পরিত্রাণ পাবে, সে ভিতরে যাবে আবার বাইরে আসবে এবং চারণভূমির সন্ধান পাবে (যোহন ১০:৯)। সে আসলে বিশ্বাসের ভিতরে যাবে আর বিশ্বাসের বাইরে এসে দর্শনেরই কাছে পৌঁছবে, বাহ্যিক বিশ্বাস ছেড়ে আন্তর-ধ্যানেই পৌঁছবে আর অবশেষে শাশ্বত ভোজেই চারণভূমির সন্ধান পাবে।
তাই তাঁর মেষগুলি চারণভূমির সন্ধান পায়, কেননা সরলহৃদয়ে যে তাঁর অনুসরণ করে, সে চিরসবুজ ঘাস খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়। চিরবসন্ত-তুল্য সেই পরমদেশের আত্মিক আনন্দ ছাড়া এ মেষগুলির চারণভূমি আর কীবা হতে পারে? কেননা মনোনীতদের চারণভূমি হল ঈশ্বরের স্বয়ং শ্রীমুখ: স্পষ্টভাবে তাঁকে দে’খে মন অবিরতই জীবনদায়ী খাদ্য খেয়ে পরিতৃপ্ত হবে।
অতএব প্রিয় ভাইবোনেরা, এসো, এ চারণভূমির অন্বেষণ করি যাতে তেমন সম্মানিত স্বর্গীয় নাগরিকদের পর্বোৎসবে আনন্দ করতে পারি। পর্বোৎসব নিজেই আমাদের আনন্দ করতে আমন্ত্রণ করে। তাই এসো, ভাইবোনেরা, অন্তর প্রজ্বলিত করি, বিশ্বাস্য বিষয়ে বিশ্বাস উত্তপ্ত হয়ে উঠুক, আমাদের সমস্ত আকাঙ্ক্ষা ঊর্ধ্বলোকের জন্য উদ্দীপিত হোক: এইভাবে যে ভালবাসে, সে যাত্রাপথে পা বাড়িয়েই দিয়েছে।
আন্তর পর্বোৎসবের আনন্দ থেকে যেন কোন প্রতিকূল ব্যাপার আমাদের সরিয়ে না দেয়, কেননা যদি একজন গন্তব্যস্থানে পৌঁছতে আকাঙ্ক্ষা করে, পথের কোন বাধা তার আকাঙ্ক্ষা পাল্টাতে পারে না। কোন অনুকূল ব্যাপারও যেন আমাদের মন না ভোলায়, কেননা যে যাত্রী যেতে যেতে সুন্দর সুন্দর মাঠ দেখতে গিয়ে গন্তব্যস্থানটা ভুলে যায়, সেই যাত্রী নির্বোধ।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ৮০
ধুয়ো: আপন মেষগুলির জন্য যিনি আপন প্রাণ বিসর্জন দিলেন
এবং আপন মেষপালের জন্য মৃত্যুবরণ করতে ইচ্ছা করলেন,
সেই উত্তম মেষপালক
পুনরুত্থান করেছেন। আল্লেলুইয়া।
হে ইস্রায়েলের পালক, কান পেতে শোন;
তুমি তো যোসেফকে মেষপালের মতই চালনা কর,
খেরুব বাহনে সমাসীন হয়ে
এফ্রাইম, বেঞ্জামিন ও মানাশের সামনে উদ্ভাসিত হও।
জাগাও তোমার পরাক্রম,
আমাদের ত্রাণ করতে এসো।
হে পরমেশ্বর, আমাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠিত কর,
শ্রীমুখ উজ্জ্বল করে তোল, তবেই আমরা পাব পরিত্রাণ।
হে সেনাবাহিনীর পরমেশ্বর, ফিরে এসো,
স্বর্গ থেকে চেয়ে দেখ, এ আঙুরলতাকে দেখতে এসো।
রক্ষা কর সেই চারাগাছ যা তোমার ডান হাত পুঁতেছে একদিন,
সেই পুত্রসন্তানকে যাকে নিজের জন্যই করেছ শক্তিশালী।
আর কখনও তোমাকে ছেড়ে আমরা চলে যাব না,
তুমি আমাদের সঞ্জীবিত করবে আর আমরা করব তোমার নাম।
হে প্রভু, সেনাবাহিনীর পরমেশ্বর, আমাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠিত কর,
শ্রীমুখ উজ্জ্বল করে তোল, তবেই আমরা পাব পরিত্রাণ। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে কৃপাময় পালক, তোমার পুত্রের অমূল্য রক্ত দ্বারা যাদের মুক্ত করেছ,
সেই মেষপালকে রক্ষা কর,
স্বর্গীয় শাশ্বত চারণভূমিতে তাদের চালনা কর।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
৫ম পাস্কা-রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর,
আমাদের অন্তরে পাস্কা-রহস্য নিয়তই সার্থক করে তোল:
পবিত্র বাপ্তিস্মে যাদের তুমি নবীভূত করতে প্রসন্ন হয়েছ,
তারা যেন তোমার যত্নশীল সহায়তায় অধিক ফলশালী হয়ে ওঠে
ও অনন্ত জীবনের আনন্দে উপনীত হতে পারে।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (৬:১-৭)
সেই দিনগুলিতে, যখন শিষ্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন স্থানীয় নয় এমন গ্রীকভাষী ইহুদীরা স্থানীয় হিব্রুদের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ তুলল, কারণ দৈনিক সাহায্যদানে তাদের বিধবাদের অবহেলা করা হচ্ছিল।
তখন সেই বারোজন সকল শিষ্যের একটা সভা ডেকে বললেন ‘খাদ্য-পরিবেশনে সেবার জন্য ঈশ্বরের বাণী অবহেলা করা আমাদের উচিত নয়। ভাই, তোমাদের মধ্য থেকে তোমরা এমন সাতজনকে দেখে নাও, যাদের সুনাম আছে, যারা ঐশআত্মা ও প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ ব্যক্তি। তাদেরই হাতে আমরা এই কাজের ভার তুলে দেব; আর আমরা প্রার্থনা-সভায় ও বাণী-সেবায় নিবিষ্ট থাকব।’
এই প্রস্তাব সমবেত সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হল, আর তারা এই কয়েকজনকে বেছে নিল: স্তেফান—ইনি ছিলেন বিশ্বাস ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ ব্যক্তি—এবং ফিলিপ, প্রখরস, নিকানোর, তিমন, পার্মেনাস ও আন্তিওখিয়ার নিকোলাস—ইনি ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তারা এঁদের প্রেরিতদূতদের সামনে হাজির করল ও প্রার্থনা করার পর তাঁদের উপরে হাত রাখল।
এদিকে ঈশ্বরের বাণী ছড়িয়ে পড়ছিল, এবং যেরুশালেমে শিষ্যদের সংখ্যা খুবই বৃদ্ধি পাচ্ছিল; যাজকবর্গের মধ্যেও অনেকে বিশ্বাসের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করলেন।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ৩৩
ধুয়ো: আমাদের উপর বিরাজ করুক তোমার কৃপা, প্রভু,
আমরা যে তোমার প্রত্যাশায় আছি।
প্রভুতে আনন্দধ্বনি তোল, ধার্মিকজন সকল,
ন্যায়নিষ্ঠদের মুখেই প্রশংসাগান সমীচীন।
সেতারের সুরে প্রভুকে জানাও ধন্যবাদ,
দশতন্ত্রী বীণা বাজিয়ে তাঁর উদ্দেশে কর স্তবগান। [ধুয়ো]
ন্যায়সঙ্গতই তো প্রভুর বাণী,
বিশ্বস্ততায় সাধিত তাঁর প্রতিটি কাজ।
তিনি ধর্মময়তা ও ন্যায় ভালবাসেন;
পৃথিবী প্রভুর কৃপায় পরিপূর্ণ। [ধুয়ো]
কিন্তু দেখ, প্রভুর চোখ নিবদ্ধ তাদেরই প্রতি,
যারা তাঁকে ভয় করে, যারা তাঁর কৃপার প্রত্যাশায় থাকে,
তিনি মৃত্যু থেকে তাদের প্রাণ উদ্ধার করবেন,
তাদের বাঁচিয়ে রাখবেন দুর্ভিক্ষের দিনে। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
প্রেরিতদূত সাধু পিতরের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (২:৪-৯)
প্রিয়জনেরা, মানুষের দৃষ্টিতে উপেক্ষিত, কিন্তু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে মনোনীত ও মহামূল্যবান জীবন্ত প্রস্তর সেই প্রভুর কাছে এগিয়ে এসে তোমরাও, জীবন্ত প্রস্তরেরই মত, এক পবিত্র যাজকত্বের উদ্দেশে এক আত্মিক গৃহরূপে নির্মিত হচ্ছ, যেন যিশুখ্রিষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য আত্মিক যজ্ঞ উৎসর্গ করতে পার। কেননা শাস্ত্রে আমরা একথা পড়তে পারি যে, দেখ, আমি সিয়োনে মনোনীত মহামূল্যবান একটা সংযোগপ্রস্তর স্থাপন করছি; যে কেউ তার উপর বিশ্বাস রাখে, সে আশাভ্রষ্ট হবে না।
তাই বিশ্বাসী যে তোমরা, সেই প্রস্তর তোমাদের মূল্যবান করে তোলে, কিন্তু যারা অবিশ্বাসী, তাদের পক্ষে যে প্রস্তরটি গৃহনির্মাতারা প্রত্যাখ্যান করল, তা হয়ে উঠেছে সংযোগপ্রস্তর, এমন প্রস্তর যাতে লোকে হোঁচট খাবে, ও এমন শৈল যা মানুষের পতন ঘটাবে।
সেই বাণীতে বিশ্বাস না রাখায় তারা হোঁচট খায়; এ ছিল তাদের জন্য পূর্বনিরূপিত দশা! কিন্তু তোমরা হলে এক মনোনীত বংশ, এক রাজকীয় যাজক-সমাজ, এক পবিত্র জনগণ, এমন এক জাতি যাকে ঈশ্বর নিজস্ব সম্পদ করেছেন যেন তাঁরই গুণকীর্তন করে যিনি অন্ধকার থেকে তাঁর অপরূপ আলোতে তোমাদের আহ্বান করেছেন।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমিই সেই পথ, সেই সত্য, সেই জীবন—একথা বলছেন প্রভু;
পিতার কাছে কেউই যেতে পারে না, যদি না সে আমার মধ্য দিয়ে যায়।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (১৪:১-১২)
সেসময়ে যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন: ‘তোমাদের হৃদয় যেন কম্পিত না হয়। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রাখ, আমার প্রতিও বিশ্বাস রাখ। আমার পিতার গৃহে অনেক বাসস্থান আছে; যদি না থাকত, তবে তোমাদের বলেই দিতাম; আমি তোমাদের জন্য স্থান প্রস্তুত করতে যাচ্ছি। আর চলে গিয়ে তোমাদের জন্য স্থান প্রস্তুত করার পর আমি আবার আসব এবং তোমাদের নিজের কাছে নিয়ে যাব, আমি যেখানে আছি, সেখানে তোমরাও যেন থাকতে পার। আমি যেখানে যাচ্ছি, তোমরা তো তার পথ জান।’
থোমাস তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন আমরা তা জানি না, তবে কেমন করে পথটা জানতে পারি?’ যিশু তাঁকে বললেন, ‘আমিই সেই পথ, সেই সত্য, সেই জীবন! পিতার কাছে কেউই যেতে পারে না, যদি না সে আমার মধ্য দিয়ে যায়। তোমরা যদি আমাকে জানতে, তাহলে আমার পিতাকেও জানতে। তোমরা তো তাঁকে এখন জান, দেখতেও পেয়েছ তাঁকে।’
ফিলিপ তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, পিতাকে আমাদের দেখিয়ে দিন, তাতে আমরা তুষ্ট হব।’ যিশু তাঁকে বললেন, ‘ফিলিপ, এতদিন আমি তোমাদের সঙ্গে আছি আর তুমি আমাকে জান না? যে আমাকে দেখেছে, সে পিতাকেও দেখেছে; কেমন করে তুমি বলছ, পিতাকে আমাদের দেখিয়ে দিন? তুমি কি বিশ্বাস কর না যে, আমি পিতাতে আছি আর পিতা আমাতে আছেন? আমি যে সমস্ত কথা তোমাদের বলি, নিজে থেকে তা বলি না, কিন্তু যিনি আমাতে আছেন, সেই পিতাই নিজের সমস্ত কাজ সাধন করেন।
তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর: আমি পিতাতে আছি আর পিতা আমাতে আছেন; অন্তত, এই সমস্ত কাজের খাতিরেই বিশ্বাস কর।
আমি তোমাদের সত্যি সত্যি বলছি, আমার প্রতি যে বিশ্বাস রাখে, আমি যে সমস্ত কাজ করি, তা সেও করবে, এবং তার চেয়ে মহত্তর কাজও করবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
বিশপ সাধু আম্ব্রোজ-লিখিত ‘শুভ মৃত্যু’
এসো, আমরা আমাদের মুক্তিসাধক সেই যিশুর কাছে নির্ভয়ে যাই; এসো, দৃঢ় অন্তর নিয়ে পুণ্যজনদের দলের দিকে, ন্যায়নিষ্ঠ-মণ্ডলীর দিকে যাই! হ্যাঁ, আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে যাব, আমাদের বিশ্বাসগুরুদের কাছে যাব; আর যদিও আমাদের কাজকর্ম নানা ত্রুটিতে চিহ্নিত, বিশ্বাস আমাদের সহায়তা করুক, প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হোক। প্রভু হবেন সকলের আলো; আর সেই সত্যকার আলো যা প্রতিটি মানুষকে আলোকিত করে সকলের উপরে উদ্ভাসিত হবে। আমরা সেখানে যাব, যেখানে প্রভু যিশু আপন সেবকদের জন্য গৃহ প্রস্তুত করেছেন, তিনি যেখানে আছেন আমরাও যেন সেখানে থাকতে পারি: তিনি তা-ই ইচ্ছা করলেন। শোন এ প্রসঙ্গে তিনি কী বলেন: আমার পিতার গৃহে অনেক বাসস্থান আছে। আর তাঁর ইচ্ছা কী? আমি আবার আসব এবং তোমাদের নিজের কাছে নিয়ে যাব, আমি যেখানে আছি, সেখানে তোমরাও যেন থাকতে পার (যোহন ১৪:২, ৩)। হয় তো আপত্তি করে তুমি বল, তিনি তখন কেবল আপন শিষ্যদেরই কাছে একথা বলছিলেন, কেবল তাঁদেরই কাছে থাকবার অনেক স্থান দানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলেন। তবে শুধু এগারো জনের জন্যই কি তিনি অনেক স্থান প্রস্তুত করছিলেন? তাহলে কি করেই বা তাঁর সেই কথা পূর্ণতা লাভ করবে, যা অনুসারে বহু জাতি সবদিক থেকে এসে ঈশ্বরের রাজ্যে ভোজে বসবে? যখন খ্রিষ্টের পক্ষে ইচ্ছা করা ও সাধন করা সমান কথা, তখন তাঁর ইচ্ছা যে পূর্ণ হবে, আমরা কি তা সন্দেহ করতে পারি? অবশেষে তিনি পথ ও স্থান নির্দেশ করেছেন: যে স্থানে আমি যাচ্ছি, তোমরা তার পথ জান (যোহন ১৪:৪)। স্থানটি পিতার কাছে, পথটি স্বয়ং খ্রিষ্ট, যেইভাবে তিনি নিজে বলেন, আমিই সেই পথ, সেই সত্য, সেই জীবন! পিতার কাছে কেউই যেতে পারে না, যদি না সে আমার মধ্য দিয়ে যায় (যোহন ১৪:৬)।
এসো, আমরা এ পথ ধরি, সত্য পালন করি, জীবনের অনুসরণ করি। তেমন পথ চালিত করে, তেমন সত্য সান্ত্বনা দেয়, তেমন জীবন আত্মদান করে। আর আমরা যেন তাঁর প্রকৃত ইচ্ছা জানতে পারি, উপদেশ শেষে তিনি একথাও বলেন, পিতা, যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, আমি চাই, আমি যেখানে আছি তারাও সেখানে থাকবে, যেন তারা আমার গৌরব দর্শন করতে পারে (যোহন ১৭:২৪)। পিতা: নামটা দু’বার উচ্চারণ করা মানে জোর দিয়ে বলা, যেমন, আব্রাহাম, আব্রাহাম (আদি ২২:১)। অন্যত্র আমরা পড়ি, আমি, আমিই তোমার অপরাধ মুছে দিই (ইশা ৪৩:২৫)। তিনি আগে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এখন যে তা যাচনা করেন, তা খুবই সুন্দর। আগে প্রতিশ্রুতি, পরে যাচনা, উল্টোভাবে নয়: এর অর্থ, যিনি প্রতিশ্রুতি দেন, তিনিই তো দানের অধিকারী, আপন ক্ষমতায় সচেতন: পিতার মঙ্গলময়তার ব্যাখ্যাতাই যেন তিনি সেই পিতার কাছে যাচনা করেন। তিনি আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যাতে তুমি তাঁর ক্ষমতা জানতে পার; তারপরে যাচনা করেছেন যাতে তোমার কাছে মঙ্গলময়তার কথা বোঝাতে পারেন। তিনি আগে যাচনা করেছেন, পরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তেমন নয়, যাতে কেউই না মনে করত, তিনি যা যাচনা করে পেয়েছিলেন তারই দানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলেন; বরং তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাই দান করছিলেন। তিনি যে যাচনা করেছেন, একথা তুমি যেন গুরুত্বহীন না মনে কর; কেননা এতে প্রকাশিত হয় পিতার ইচ্ছার সঙ্গে তাঁর মিলন—এ একতারই প্রমাণ, বাড়তি ক্ষমতার প্রমাণ নয়।
প্রভু যিশু, আমরা তোমার অনুসরণ করি; তুমি কিন্তু আমাদের ডাক, আমরা যেন সত্যিই তোমার অনুসরণ করতে পারি; কেননা তোমাকে ছাড়া কেউই আরোহণ করতে পারে না—তুমিই তো পথ, সত্য ও জীবন; তুমিই তো শক্তি, বিশ্বস্ততা ও পুরস্কার। পথ বলে তোমার আপনজনদের গ্রহণ কর; সত্য বলে তাদের সুস্থির কর; জীবন বলে তাদের সঞ্জীবিত কর!
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ১২১
ধুয়ো: আমিই সত্যকার আঙুরলতা, তোমরা হলে শাখা
—একথা বলছেন প্রভু;
যে আমাতে থাকে আর আমি যার অন্তরে থাকি,
সে-ই প্রচুর ফলে ফলশালী হয়। আল্লেলুইয়া।
আমি চোখ তুলি গিরিমালার দিকে,
আমার সাহায্য কোথা থেকে আসবে?
আমার সাহায্য সেই প্রভু থেকেই আসবে,
আকাশ ও পৃথিবীর নির্মাতা যিনি।
তিনি তোমার পা দেবেন না টলমল হতে,
ঘুমিয়ে পড়বেন না কো তোমার রক্ষক।
দেখ, ঘুমিয়ে পড়বেন না, হবেন না নিদ্রামগ্ন
ইস্রায়েলের রক্ষক।
প্রভুই তোমার রক্ষক, প্রভুই তোমার ছায়া,
তিনি তোমার ডান পাশে দাঁড়ান।
দিনমানের সূর্য কি রাত্রিবেলার চাঁদ,
কিছুই তোমায় আঘাত করবে না।
প্রভু যত অনিষ্ট থেকে তোমাকে রক্ষা করবেন,
রক্ষা করবেন তোমার প্রাণ।
প্রভু তোমার গমনাগমন রক্ষা করবেন
এখন থেকে চিরকাল ধরে। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, প্রসন্ন হয়ে তোমার জনগণের সহায় হও।
যখন তাদের স্বর্গীয় রহস্যময় অন্নে পরিপূর্ণ করেছ,
তখন প্রাচীন জীবনধারণ থেকে জীবনের নবীনতায়ই তাদের উপনীত কর।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
৬ষ্ঠ পাস্কা-রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তোমার আশীর্বাদে
আমরা যেন পুনরুত্থিত প্রভুর সম্মানার্থে উদ্যাপিত এ আনন্দঘন দিনগুলো
উজ্জ্বল ভক্তির সঙ্গে পালন করতে পারি;
স্মরণানুষ্ঠানে যা উদ্যাপন করি,
তা যেন কাজকর্মে সবসময় ধরে রাখতে পারি।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (৮:৫-৮,১৪-১৭)
সেই দিনগুলিতে, ফিলিপ সামারিয়ার এক শহরে গিয়ে লোকদের কাছে সেই খ্রিষ্টের কথা প্রচার করতে লাগলেন। লোকেরা ফিলিপের কথা শুনে ও তাঁর সাধিত চিহ্নকর্মগুলো দেখে একমন হয়ে তাঁর কথায় মনোযোগ দিত। কারণ অশুচি আত্মাগ্রস্ত অনেক লোক থেকে সেই সকল আত্মা জোর গলায় চিৎকার করে বের হচ্ছিল, এবং অনেক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও খোঁড়া মানুষ সুস্থ হচ্ছিল। তাতে সেই শহরে বড়ই আনন্দের সাড়া পড়ে গেল।
যেরুশালেমে প্রেরিতদূতেরা যখন শুনতে পেলেন যে, সামারিয়া ঈশ্বরের বাণী গ্রহণ করে নিয়েছে, তখন তাঁরা পিতর ও যোহনকে তাদের কাছে প্রেরণ করলেন। এসে তাঁরা তাদের জন্য প্রার্থনা করলেন যেন তারা পবিত্র আত্মাকে পায়; কেননা পবিত্র আত্মা তাদের কারও উপরে তখনও আসেননি; বাস্তবিকই কেবল প্রভু যিশু-নামের উদ্দেশেই তাদের বাপ্তিস্ম হয়েছিল।
তখন তাঁরা তাদের উপর হাত রাখলেন, আর তারা পবিত্র আত্মাকে পেল।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ৬৬
ধুয়ো: সমগ্র পৃথিবী,
পরমেশ্বরের উদ্দেশে জাগিয়ে তোল আনন্দচিৎকার।
সমগ্র পৃথিবী, পরমেশ্বরের উদ্দেশে জাগিয়ে তোল আনন্দচিৎকার,
তাঁর নামের গৌরবে স্তবগান কর,
তাঁকে অর্পণ কর গৌরবময় প্রশংসাগান।
পরমেশ্বরকে বল: ‘তোমার কর্মকীর্তি কত ভয়ঙ্কর!’ [ধুয়ো]
সমগ্র পৃথিবী তোমার উদ্দেশে প্রণত হোক,
তোমার উদ্দেশে স্তবগান করুক, করুক তোমার নামগান।
এসো তোমরা, দেখ পরমেশ্বরের যত কাজ,
আদমসন্তানদের জন্য তাঁর কর্মকীর্তি কেমন ভয়ঙ্কর! [ধুয়ো]
তিনি সাগর শুষ্ক ভূমিতে পরিণত করলেন,
পায়ে হেঁটেই পার হল তারা;
সেইখানে এসো, আমরা তাঁকে নিয়ে আনন্দ করি।
তিনি স্বপরাক্রমে শাসন করেন চিরকাল। [ধুয়ো]
এসো, শোন তোমরা সকলে, পরমেশ্বরকে ভয় কর যারা,
এসো, তোমাদের বলব আমার জন্য কী করেছেন তিনি।
ধন্য পরমেশ্বর! তিনি তো ফিরিয়ে দেননি প্রার্থনা আমার,
আমা থেকে ফিরিয়ে নেননি তিনি তাঁর কৃপা। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
প্রেরিতদূত সাধু পিতরের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (৩:১৫-১৮)
প্রিয়জনেরা, নিজেদের হৃদয়ে খ্রিষ্ট প্রভুকে পবিত্র বলে ঘোষণা কর; এবং যে কেউ তোমাদের অন্তরঙ্গ প্রত্যাশার কারণ জিজ্ঞাসা করে, তাকে উত্তর দিতে নিত্যই প্রস্তুত থাক।
তথাপি কোমলতা ও সম্ভ্রম বজায় রেখে ও সদ্বিবেকেই উত্তর দাও, যেন যারা তোমাদের খ্রিষ্টীয় সদাচরণের নিন্দা করে, তোমাদের নিন্দা করতে করতে তারা নিজেরাই লজ্জায় পড়ে।
কেননা, ঈশ্বর যদি এমনটি ইচ্ছা করেন, তবে অসদাচরণের জন্য দুঃখকষ্ট ভোগ করার চেয়ে সদাচরণের জন্য দুঃখকষ্ট ভোগ করাই শ্রেয়। খ্রিষ্ট নিজেও তো পাপের জন্য একবার, চিরকালের মত মরলেন—যিনি ধর্মময়, তিনি অধার্মিকদের জন্য মরলেন, যেন ঈশ্বরের কাছে তোমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন; মাংসে তিনি নিহত হয়েছিলেন, আত্মায় কিন্তু সঞ্জীবিত হয়ে উঠলেন।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
যদি কেউ আমাকে ভালবাসে—একথা বলছেন প্রভু,
তবে সে আমার বাণী মেনে চলবে,
আমার পিতা তাকে ভালবাসবেন,
এবং আমরা তার কাছে আসব।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (১৪:১৫-২১)
সেসময়ে যিশু তাঁর আপন শিষ্যদের বললেন, ‘তোমরা যদি আমাকে ভালবাস, তাহলে আমার আজ্ঞাগুলো পালন করবে। আর আমি পিতাকে অনুরোধ করব, এবং তিনি অপর একজন সহায়ক তোমাদের দেবেন, যেন সেই সহায়ক চিরকাল ধরে তোমাদের সঙ্গে থাকেন: সেই সত্যময় আত্মাকেই দেবেন, জগৎ যাঁকে গ্রহণ করতে পারে না, কারণ জগৎ তাঁকে দেখতে পায় না, জানেও না। তোমরা তাঁকে জান, কারণ তিনি তোমাদের কাছে কাছে থাকেন ও তোমাদের অন্তরে থাকবেন।
আমি তোমাদের অনাথ অবস্থায় রেখে যাব না; তোমাদের কাছে আসব। আর অল্পকাল, পরে জগৎ আমাকে আর দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমাকে দেখতে পাবে, কারণ আমি জীবিত আছি, তোমরাও জীবিত থাকবে। সেদিন তোমরা জানবে যে, আমি আমার পিতাতে আছি, এবং তোমরা আমাতে আছ আর আমি তোমাদের অন্তরে আছি।
আমার আজ্ঞাগুলো গ্রহণ করে নিয়ে যে তা পালন করে, সে-ই আমাকে ভালবাসে; আর যে আমাকে ভালবাসে, সে হবে আমার পিতার ভালবাসার পাত্র, আমিও তাকে ভালবাসব, এবং তার কাছে আত্মপ্রকাশ করব।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
যোহন-রচিত সুসমাচারে বিশপ সাধু জন খ্রিসোস্তমের উপদেশ
তোমরা যদি আমাকে ভালবাস, তাহলে আমার আজ্ঞাগুলো পালন করবে (যোহন ১৪:১৫)। আমি তোমাদের আজ্ঞা দিলাম তোমরা যেন পরস্পরকে ভালবাস ও একে অন্যের সঙ্গে সেভাবে ব্যবহার কর যেইভাবে আমি তোমাদের সঙ্গে ব্যবহার করেছি। এই তো ভালবাসা: আজ্ঞাগুলি পালন করা ও প্রেমিকের অধীনে থাকা। আমি পিতাকে অনুরোধ করব, এবং তিনি অপর একজন সান্ত্বনাদানকারী তোমাদের দেবেন (যোহন ১৪:১৬)। এগুলো এমন ব্যক্তির কথা যিনি দূরে যাবার উপক্রম করছেন। আর যেহেতু তাঁরা তখনও তাঁকে ভালভাবে জানতেন না, সেজন্য অনুমান করা যায়, তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁরা সম্ভবত তাঁর সাহচর্য, তাঁর বাণী, তাঁর শারীরিক উপস্থিতির খোঁজ করবেন, এমনকি তাঁর অনুপস্থিতির জন্য কিছুই তাঁদের সান্ত্বনা দিতে পারবে না। আর তিনি কী বলেন? আমি পিতাকে অনুরোধ করব, এবং তিনি অপর একজন সান্ত্বনাদানকারী তোমাদের দেবেন। তার মানে, পিতা আমার মত আর একজনকে দেবেন।
তিনি আপন আত্মবলিদানে তাঁদের পরিশুদ্ধ করলে পর তখনই পবিত্র আত্মা এসে পড়েন। কেন তাঁদের মধ্যে যিশু থাকতেই আত্মা নেমে আসেননি? তার কারণ, বলি তখনও উৎসর্গীকৃত হয়নি। তারপরেই, পাপ বিনষ্ট হয়ে গেলে তাঁরা বিপদের মধ্যে প্রেরিত হয়ে যখন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নেবেন, তখনই সেই সান্ত্বনাদানকারীর আগমন প্রয়োজন হবে। তবে কেনই বা পুনরুত্থানের পর পরেই আত্মা আসেননি? এজন্যই, তাঁরা যেন মহত্তর আকাঙ্ক্ষায় ও মহত্তর অনুগ্রহ নিয়ে তাঁকে গ্রহণ করেন।
কেননা খ্রিষ্ট যতদিন তাঁদের মধ্যে থেকেছিলেন, তাঁরা ততদিন অবসন্ন ছিলেন না; তিনি কিন্তু যখন চলে গেলেন, তাঁরা তখন একাকী ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মহা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গেই তাঁর অপেক্ষা করছিলেন।
তিনি যেন তোমাদের সঙ্গে থাকেন (যোহন ১৪:১৬), এর অর্থ হল: তোমাদের মৃত্যুর পরেও তিনি চলে যাবেন না। আর সান্ত্বনাদানকারীর কথা শুনে তাঁরা যেন তাঁকে স্বচক্ষেই দেখবার আশায় নতুন মাংসধারণের কথা না মনে করেন, তেমন ধারণা বাতিল করতে গিয়ে খ্রিষ্ট বলে চলেন, জগৎ তাঁকে গ্রহণ করতে পারে না, কারণ জগৎ তাঁকে দেখতে পায় না (যোহন ১৪:১৭)।
তিনি তোমাদের সঙ্গে আমার মত জীবনযাপন করবেন না, তিনি বরং তোমাদের আত্মায় বাস করবেন: এই তো সেই তোমাদের সঙ্গে থাকবেন কথাটির অর্থ। উপরন্তু তিনি তাঁকে সত্যের আত্মা বলে অভিহিত করেন, আর এইভাবে প্রাক্তন বিধানের দৃষ্টান্তের দিকে অঙুলি নির্দেশ করেন। তিনি যেন তোমাদের সঙ্গে থাকেন। এর অর্থ কী? তিনি নিজের বেলায় যা বলেছিলেন, ঠিক তাই: আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি (মথি ২৮:২০)। তাছাড়া কিন্তু আর একটা অর্থ রয়েছে: আমি যে যন্ত্রণা ভোগ করেছি, তিনি তা ভোগ করবেন না, দূরেও যাবেন না।
জগৎ তাঁকে গ্রহণ করতে পারে না, কারণ জগৎ তাঁকে দেখতে পায় না (যোহন ১৪:১৭)। এ কেমন কথা? তিনি কি অদৃশ্য বস্তুর মধ্যে একজন? মোটেই না। খ্রিষ্ট এখানে জ্ঞানের কথা নির্দেশ করেন; বস্তুতপক্ষে তিনি বলে চলেন, সে তাকে জানে না; সাধারণত সূক্ষ্ম জ্ঞানকে দর্শন বলে, কেননা আমাদের ইন্দ্রিয়গুলির মধ্যে দৃষ্টিশক্তিই সবচেয়ে তীক্ষ্ণ ইন্দ্রিয়। তিনি দুর্জনদের জগৎ ব’লে অভিহিত করেন ও তেমন মূল্যবান দান তাঁদের অর্পণ ক’রে তিনি শিষ্যদের সান্ত্বনা দেন। লক্ষ কর যিশু দানের শ্রেষ্ঠতা কতই না প্রশংসা করেন: তিনি বলেন, তিনি এমন অপরই একজন যিনি তাঁর চেয়ে ভিন্ন; আবার বলেন, তিনি তাঁদের একা ফেলে রাখবেন না; আবার, তিনি কেবল তাদেরই কাছে আসবেন যাদের কাছে তিনি এসেছিলেন। আর অবশেষে, তিনি তোমাদের অন্তরে থাকবেন।
তবু এভাবেও তিনি শিষ্যদের শোক দূর করতে পারলেন না। তাঁরা তাঁকে ও তাঁর সঙ্গ খোঁজ করে যাচ্ছিলেন। তাঁদের সাহায্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি তোমাদের অনাথ অবস্থায় রেখে যাব না, তোমাদের কাছে আবার আসব (যোহন ১৪:১৮)। ভয় করো না, আমি সবসময়ের মত তোমাদের ছেড়ে যাব বিধায় যে আর একজন সান্ত্বনাদানকারী পাঠাবার কথা বলেছি, তেমন নয়। তিনি তোমাদের মধ্যে থাকবেন, আমি তো একথা এমনভাবে বলিনি আমি যেন তোমাদের আর কখনও দেখতে পারব না! প্রকৃতপক্ষে আমি নিজেই তোমাদের কাছে আসব। আমি তোমাদের অনাথ অবস্থায় রেখে যাব না।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ১৩৩
ধুয়ো: প্রভু একথা বলছেন:
তোমরা যদি আমাকে ভালবাস, তাহলে আমার আজ্ঞাগুলো পালন করবে।
আমি পিতাকে অনুরোধ করব, এবং তিনি অপর একজন সহায়ক তোমাদের দেবেন,
যেন সেই সহায়ক চিরকাল ধরে তোমাদের সঙ্গে থাকেন। আল্লেলুইয়া।
দেখ, ভাইদের একত্রে বাস করা
কতই না ভাল, কতই না সুন্দর!
যেমন মাথায় সেই উৎকৃষ্ট তেল যা দাড়ি বেয়ে, আরোনের দাড়ি বেয়ে ঝরে পড়ে,
ঝরে পড়ে তাঁর পোশাকের গলবন্ধনীর উপর,
তেমনি সেই হার্মোনের শিশির,
যা ঝরে পড়ে সিয়োনের চূড়ায় চূড়ায়।
সেইখানে তো প্রভু জারি করেছেন আশীর্বাদ,
চিরকালীন জীবনদান। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর, তুমি খ্রিষ্টের পুনরুত্থান দ্বারা
মানবজাতিকে অনন্ত জীবনের উদ্দেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে থাক।
অনুনয় করি: আমাদের মাঝে এই পাস্কাভোজের ফল বৃদ্ধিশীল কর,
আমাদের অন্তরে সেই পরিত্রাণদায়ী খাদ্যের শক্তি সঞ্চার কর।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
প্রভুর স্বর্গারোহণ
![]() আর সাদা কাপড় পরা দু'জন দূত উপস্থিত সকলকে বলেন, তিনি আবার আসবেন। |
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আমাদের সকলকে পুণ্য আনন্দে আনন্দিত কর,
ধন্যবাদগীতিতে মুখরিত করে তোল,
কারণ তোমার পুত্র যিশুখ্রিষ্টের স্বর্গারোহণে আমরা নিজেরাও উন্নীত হচ্ছি,
এবং মাথা খ্রিষ্ট যেখানে সগৌরবে গিয়েছেন,
তাঁর দেহ এ আমরাও আশায় সেখানে যেতে আহূত।
পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে তিনি ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন
ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (১:১-১১)
থেওফিল, প্রথম পুস্তকে আমি সেই সকল বিষয়ে লিখেছিলাম, যা যিশু শুরু থেকে সেদিন পর্যন্তই সাধন করেছিলেন ও শিখিয়েছিলেন, যেদিন, পবিত্র আত্মার মধ্য দিয়ে যাঁদের তিনি বেছে নিয়েছিলেন, সেই প্রেরিতদূতদের নির্দেশ দেওয়ার পর তাঁকে ঊর্ধ্বে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
নিজের যন্ত্রণাভোগের পরে তিনি অনেক প্রমাণের মধ্য দিয়ে তাঁদের কাছে নিজেকে জীবিত বলে দেখিয়েছিলেন: চল্লিশদিন ধরে তাঁদের দেখা দিয়েছিলেন ও ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে নানা কথা বলেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ভোজে বসে তিনি আদেশ করেছিলেন, তাঁরা যেরুশালেম থেকে চলে না গিয়ে বরং যেন পিতার সেই প্রতিশ্রুতি-পূরণের অপেক্ষায় থাকেন, ‘যে প্রতিশ্রুতির কথা তোমরা আমার কাছ থেকে শুনেছ, তথা: যোহন জলে বাপ্তিস্ম দিলেন, কিন্তু অল্প দিনের মধ্যে পবিত্র আত্মায়ই তোমাদের বাপ্তিস্ম হবে।’
তাই তাঁরা একত্রে মিলিত হয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘প্রভু, আপনি কি এই সময়েই ইস্রায়েলের জন্য রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন?’ তিনি তাঁদের বললেন, ‘পিতা যে সকল কাল বা লগ্ন নিজেরই অধিকারের অধীনে রেখেছেন, তা তোমাদের জানবার নয়; কিন্তু তোমরা পরাক্রম লাভ করবে—সেই পবিত্র আত্মারই পরাক্রম, যিনি তোমাদের উপরে নেমে আসবেন; তখন যেরুশালেমে, সমস্ত যুদেয়া ও সামারিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্তসীমা পর্যন্ত তোমরা আমার সাক্ষী হবে।’
তিনি একথা বলার পর তাঁরা তাকিয়ে থাকতে থাকতেই তাঁকে ঊর্ধ্বে তোলা হল, এবং একটি মেঘ তাঁকে তাঁদের দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে গেল।
তিনি চলে যাচ্ছেন আর তাঁরা আকাশের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন, এমন সময় হঠাৎ সাদা পোশাক-পরা দু’জন পুরুষ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন; তাঁরা বললেন, ‘হে গালিলেয়ার মানুষ, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন? এই যে যিশুকে তোমাদের কাছ থেকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল, তাঁকে যেভাবে স্বর্গে যেতে দেখলে, তিনি সেভাবে আবার ফিরে আসবেন।’
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ৪৭
ধুয়ো: পরমেশ্বর আরোহণ করছেন জয়ধ্বনির মধ্যে,
প্রভু তূর্যনিনাদের মধ্যে।
সর্বজাতি, করতালি দাও,
আনন্দের কণ্ঠে পরমেশ্বরের উদ্দেশে জাগিয়ে তোল জয়ধ্বনি,
কারণ পরাৎপর প্রভু ভীতিপ্রদ,
সারা পৃথিবী জুড়ে তিনি মহান রাজা। [ধুয়ো]
পরমেশ্বর আরোহণ করছেন জয়ধ্বনির মধ্যে,
প্রভু তূর্যনিনাদের মধ্যে।
স্তবগান কর, পরমেশ্বরের স্তবগান কর,
স্তবগান কর, আমাদের রাজার উদ্দেশে স্তবগান কর। [ধুয়ো]
পরমেশ্বরই সারা পৃথিবীর রাজা,
তাই নৈপুণ্যের সঙ্গে স্তবগান কর।
পরমেশ্বর জাতি-বিজাতির উপর রাজত্ব করেন,
পরমেশ্বর তাঁর পবিত্র সিংহাসনে সমাসীন। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
এফেসীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের পত্র থেকে পাঠ (১:১৭-২৩)
প্রিয়জনেরা, আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের ঈশ্বর, সেই গৌরবের পিতা, তাঁকে গভীরতর ভাবে জানবার জন্য তোমাদের প্রজ্ঞা ও ঐশরহস্য-উপলব্ধির আত্মা দান করুন।
তিনি তোমাদের অন্তর্দৃষ্টি আলোকিত করে তুলুন যেন তোমরা উপলব্ধি করতে পার তাঁর আহ্বানের প্রত্যাশা কী, পবিত্রজনদের মাঝে তাঁর উত্তরাধিকারের গৌরব-ঐশ্বর্য কী, এবং বিশ্বাসী এই আমাদের প্রতি তাঁর পরাক্রমের সীমাহীন মহত্ত্ব কী—এই সমস্ত কিছু তাঁর সেই শক্তির পরাক্রান্ত কর্মক্ষমতা অনুসারে যা দ্বারা তিনি খ্রিষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত ক’রে স্বর্গলোকে আপন ডান পাশে আসন দিয়েছেন। তিনি তাঁকে সমস্ত আধিপত্য, কর্তৃত্ব, পরাক্রম ও প্রভুত্বের ঊর্ধ্বে—শুধু বর্তমানকালে নয়, ভাবীকালেও উল্লেখযোগ্য সমস্ত নামেরই ঊর্ধ্বে অধিষ্ঠিত করেছেন।
তিনি সমস্ত কিছু তাঁর পদতলে রেখেছেন এবং তাঁকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে, সেই মণ্ডলীর মাথায়, প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যে মণ্ডলী তাঁর দেহ, তাঁরই পরিপূর্ণতা যিনি সবকিছুতে সম্পূর্ণরূপে পরিপূর্ণ।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
তোমরা যাও, সকল জাতিকে আমার শিষ্য কর
—একথা বলছেন প্রভু;
দেখ, আমি প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি
—যুগান্ত পর্যন্ত।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ মথি-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (২৮:১৬-২০)
সেসময়ে সেই এগারোজন শিষ্য গালিলেয়ার দিকে, সেই পর্বতেরই দিকে রওনা হলেন, যে স্থান যিশু তাঁদের জন্য স্থির করেছিলেন।
তাঁকে দেখে তাঁরা তাঁর সামনে প্রণিপাত করলেন, কিন্তু কেউ কেউ সন্দেহ করছিলেন। যিশু কাছে এসে তাঁদের বললেন, ‘স্বর্গে ও মর্তে সমস্ত অধিকার আমাকে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা যাও, সকল জাতিকে আমার শিষ্য কর; পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা-নামের উদ্দেশে তাদের বাপ্তিস্ম দাও। আমি তোমাদের যা যা আজ্ঞা করেছি, সেই সমস্ত তাদের পালন করতে শেখাও। আর দেখ, আমি প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি—যুগান্ত পর্যন্ত।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
মহাপ্রাণ সাধু লিওর উপদেশ
প্রিয়জনেরা, আমাদের পরিত্রাণ-রহস্য, যার মূল্য বিশ্বস্রষ্টা আপন রক্তমূল্যেই নির্ধারণ করলেন, তাঁর দ্বারা বিনম্রতায় সাধিত হল—তাঁর জন্ম থেকে যন্ত্রণাভোগ-সমাপ্তি পর্যন্তই বিনম্রতা সাধিত হল।
দাসের রূপেও যদিও তিনি ঈশ্বরত্বের বহু লক্ষণ বিকিরণ করছিলেন, তথাপি সেকালে তাঁর কাজের উদ্দেশ্য প্রকৃতপক্ষে এ ছিল, তথা: ধারণ-করা-মানবস্বরূপের বাস্তবতা প্রমাণ করা।
অপরদিকে যন্ত্রণাভোগের পর, যে মৃত্যু নিষ্পাপ ব্যক্তিতে প্রবেশ ক’রে শক্তিহীন হয়েছিল, সেই মৃত্যুর শেকল ছিন্ন ক’রে দুর্বলতা শক্তিতে, মরণশীলতা অমরত্বে, অপমান গৌরবেই পরিণত হল।
প্রভু যিশু খ্রিষ্ট এসব কিছু অনেকের চোখের সামনে নানা স্পষ্ট সাক্ষ্যদানেই প্রকাশ করলেন, যে পর্যন্ত তিনি মৃতদের উপরে যে বিজয়মালা লাভ করেছিলেন তা স্বর্গে নিয়ে গেলেন। পাস্কা মহোৎসবে যেমন প্রভুর পুনরুত্থানই ছিল আমাদের আনন্দের কারণ, তেমনি আজ স্বর্গে তাঁর আরোহণই হচ্ছে আমাদের স্ফূর্তির বিষয়, কেননা আজ আমরা সেই দিন স্মরণ ও সম্মান করি যে দিনে আমাদের নিম্ন মানবস্বরূপ খ্রিষ্টে উন্নীত হল সমস্ত স্বর্গবাহিনীর ঊর্ধ্বে—দূতদের যত শ্রেণি ও শক্তিবৃন্দের উচ্চতার ঊর্ধ্বে, এমনকি পিতা ঈশ্বরের সঙ্গে সিংহাসনে আসীন হল!
আমরা তেমন ঐশকাজগুলির উপরে স্থাপিত ও নির্মিত রয়েছি, যেন সেই সমস্ত কিছু যা একসময় ন্যায়সঙ্গত ভাবে সম্ভ্রম জাগিয়ে তুলছিল তা মানুষের চোখের সামনে থেকে সরে গেলে, যখন বিশ্বাস আর নিঃশেষ হবে না, আশা টলমল হবে না, ভালবাসা শীতোষ্ণ হবে না, তখন যেন ঈশ্বরের অনুগ্রহ অধিক অপরূপ হয়ে প্রকাশ পেতে পারে।
চোখে যা দেখা যায় না তা নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করা, দৃষ্টি যেখানে পৌঁছতে পারে না সেখানে আকাঙ্ক্ষা স্থাপন করা, এই তো মহাপ্রাণের শক্তি, এই তো ভক্ত হৃদয়ের মহাজ্যোতি!
আমাদের পরিত্রাণ যদি দৃষ্টিগোচর বস্তুতেই মাত্র স্থাপিত হত, তাহলে আমাদের হৃদয়ে তেমন ভক্তি কোথা থেকেই বা উদ্ভূত হত, আর কেমন করেই বা মানুষ বিশ্বাস গুণেই ধর্মময় বলে প্রতিপন্ন হতে পারত?
এজন্যই যিনি নিজেরই হাতে খ্রিষ্টের দেহে যন্ত্রণাভোগের চিহ্নগুলি স্পর্শ না করা পর্যন্ত খ্রিষ্টের পুনরুত্থানে বিশ্বাস রাখতে অসম্মত ছিলেন, প্রভু তাঁকে বললেন, আমাকে দেখেছ বলেই তুমি বিশ্বাস করছ। না দেখেও বিশ্বাস করে যারা, তারাই সুখী (যোহন ২০:২৯)।
প্রিয়জনেরা, আমরা যেন তেমন আশীর্বাদের পাত্র হতে পারি, আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্ট শুভসংবাদ-প্রচার ও নবসন্ধির রহস্যগুলি ক্ষেত্রে যা উচিত ছিল তা সমাধা ক’রে পুনরুত্থানের চল্লিশ দিন পরে শিষ্যদের চোখের সামনে স্বর্গে উন্নীত হয়ে আপন দেহগত উপস্থিতির সমাপ্তি ঘটালেন।
আর তিনি পিতার ডান পাশে ততদিন থাকেন, যতদিন মণ্ডলীর সন্তান-বৃদ্ধির জন্য ঈশ্বরের নির্ধারিত কাল পূর্ণ না হয়: তখন তিনি যে মাংসে আরোহণ করলেন, জীবিত ও মৃতদের বিচার করতে তিনি সেই একই মাংসে পুনরাগমন করবেন।
সুতরাং আমাদের মুক্তিসাধকের যা কিছু দৃশ্য ছিল তা সাক্রামেন্তের আকারেই বিদ্যমান হয়েছে, এবং যেন বিশ্বাস অধিক উৎকৃষ্ট ও বলবান হতে পারে, সেজন্য ধর্মবিশ্বাসই দৃশ্যের স্থান দখল করল, যাতে করে দিব্য আলোতে আলোকিত হয়ে বিশ্বাসীদের হৃদয় সেই বিশ্বাসের অধিকার অনুসরণ করে।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ১২২
ধুয়ো: দেখ, আমি প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি,
—যুগান্ত পর্যন্ত। আল্লেলুইয়া।
আমি আনন্দ পেলাম ওরা যখন আমাকে বলল,
‘এসো, চলি প্রভুর গৃহে!’
এখন এসে থেমেছে আমাদের চরণ
তোমার তোরণদ্বারে, হে যেরুশালেম।
যেরুশালেম দৃঢ়সংবদ্ধ নগরীর মতই গড়া,
সেইখানে উঠে আসে গোষ্ঠীসকল, প্রভুরই গোষ্ঠীসকল—
ইস্রায়েলের বিধি তো তারা করবে প্রভুর নামের স্তুতি, সেইখানে যে অধিষ্ঠিত আছে বিচারাসনগুলি,
দাউদকুলের সিংহাসনগুলি।
যেরুশালেমের জন্য তোমরা শান্তি যাচনা কর!
যারা তোমাকে ভালবাসে, তাদের সমৃদ্ধি হোক;
শান্তি হোক তোমার প্রাচীর-মাঝে,
তোমার দুর্গশ্রেণির মাঝে সমৃদ্ধি হোক!
আমার ভাই ও বন্ধুদের খাতিরে
আমি বলব, ‘তোমাতেই বিরাজ করুক শান্তি!’
আমাদের পরমেশ্বর প্রভুর গৃহের খাতিরে
আমি তোমার মঙ্গল অন্বেষণ করব। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে সর্বশক্তিমান সনাতন ঈশ্বর, জগতে প্রবাসী তোমার মণ্ডলীকে
তুমি স্বর্গীয় রহস্যগুলি উদ্যাপন করার অনুগ্রহ দান করে থাক।
আশীর্বাদ কর: যেখানে আমাদের মানবস্বরূপ তোমার সঙ্গে মিলিত,
খ্রিষ্টীয় আশা সেইদিকে আমাদের আকর্ষিত করুক।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
৭ম পাস্কা-রবিবার
১। সূচনা [অনুষ্ঠাতা ও ভক্তগণ]পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে প্রভু, প্রসন্ন হয়ে আমাদের মিনতি কান পেতে শোন:
আমরা যারা মানবত্রাতা খ্রিষ্টকে তোমার ঐশগৌরবে ভূষিত বলে বিশ্বাস করি,
যেন উপলব্ধি করতে পারি যে,
তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতিমত যুগান্ত পর্যন্তই আমাদের মাঝে নিত্য উপস্থিত।
পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে তিনি ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন
ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (১:১২-১৪)
[যিশুর স্বর্গারোহণের পর] প্রেরিতদূতগণ জৈতুন নামে পর্বত থেকে যেরুশালেমে ফিরে গেলেন; সেই পর্বত যেরুশালেম থেকে তত দূরে নয়—সাব্বাৎ দিনে যত দূরে যাওয়া যায়, ততদূরে।
শহরে প্রবেশ করে তাঁরা সেই উপরতলার ঘরে গেলেন যেখানে সেসময়ে বাস করতেন। তাঁরা ছিলেন: পিতর ও যোহন, যাকোব ও আন্দ্রিয়, ফিলিপ ও থোমাস, বার্থলমেয় ও মথি, আল্ফেয়ের ছেলে যাকোব ও উগ্রধর্মা শিমোন এবং যাকোবের ছেলে যুদা।
এঁরা সকলে, ও তাঁদের সঙ্গে কয়েকজন নারী, যিশুর মা মারীয়া ও তাঁর ভাইয়েরা, একমন হয়ে প্রার্থনায় নিষ্ঠাবান ছিলেন।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ২৭
ধুয়ো: আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে,
প্রভুর মঙ্গলময়তা দেখবই আমি জীবিতের দেশে।
প্রভুই আমার আলো, আমার পরিত্রাণ,
কাকে ভয় করব আমি?
প্রভুই আমার জীবনের আশ্রয়দুর্গ,
কার্ ভয়ে কম্পিত হব আমি? [ধুয়ো]
প্রভুর কাছে আমার শুধু এই যাচনা—এইটুকু মাত্র অন্বেষণ করি—
আমি প্রভুর গৃহে বাস করতে চাই আমার জীবনের সমস্ত দিন,
প্রভুর কান্তির উপর যেন দৃষ্টি রাখতে পারি,
তাঁর মন্দির দর্শনে যেন মুগ্ধ হতে পারি। [ধুয়ো]
শোন, প্রভু, আমার কণ্ঠ—ডাকছি তো আমি:
আমাকে দয়া কর, আমাকে সাড়া দাও।
তোমার বিষয়ে আমার অন্তর বলে:
‘তাঁর শ্রীমুখ অন্বেষণ কর তোমরা।’ [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
প্রেরিতদূত সাধু পিতরের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (৪:১৩-১৬)
প্রিয়জনেরা, যতখানি তোমরা খ্রিষ্টের দুঃখযন্ত্রণার সহভাগী হচ্ছ, ততখানি আনন্দিত হও, যেন তাঁর গৌরবপ্রকাশের সময়ে আনন্দিত ও উল্লসিত হতে পার।
খ্রিষ্টের নামের জন্য যদি তোমাদের অপমান করা হয়, তাহলে তোমরা সুখী, কারণ তখন ঈশ্বরেরই আত্মা, গৌরবের সেই আত্মা তোমাদের উপরে অধিষ্ঠিত।
তোমাদের মধ্যে কাউকে যেন নরঘাতক বা চোর বা অপকর্মা বা পরাধিকারচর্চী বলেই দুঃখযন্ত্রণা ভোগ করতে না হয়। কিন্তু কাউকে যদি খ্রিষ্টিয়ান বলে দুঃখযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়, তবে লজ্জাবোধ না করে সে বরং যেন এই নামের জন্য ঈশ্বরের গৌরবকীর্তন করে।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
আমি তোমাদের অনাথ অবস্থায় রেখে যাব না,
একথা বলছেন প্রভু;
তোমাদের কাছে আবার আসব,
আর তোমাদের হৃদয় আনন্দিত হবে।
❖ আল্লেলুইয়া।
৮। সুসমাচার
✚ যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (১৭:১-১১ক)
সেসময়ে যিশু স্বর্গের দিকে চোখ তুলে বললেন, ‘পিতা, সেই ক্ষণ এসেছে: তোমার পুত্রকে গৌরবান্বিত কর, যেন পুত্র তোমাকে গৌরবান্বিত করতে পারেন, কারণ তুমি তাঁকে যাদের দিয়েছ, তাদের সকলকেই অনন্ত জীবন দান করার জন্য তুমি তাঁকে সমস্ত মর্তমানুষের উপর অধিকার দিয়েছ।
এটিই অনন্ত জীবন: তারা তোমাকে, অনন্য সত্যকার ঈশ্বরকে, এবং যাঁকে তুমি প্রেরণ করেছ, তাঁকে, সেই যিশুখ্রিষ্টকে জানবে। তুমি আমাকে যে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলে, তা সম্পন্ন করায় আমি পৃথিবীতে তোমাকে গৌরবান্বিত করেছি। পিতা, জগৎ হবার আগে তোমার কাছে আমার যে গৌরব ছিল, তুমি এখন তোমার নিজের সাক্ষাতে আমাকে সেই গৌরবে গৌরবান্বিত কর।
জগতের মধ্য থেকে যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, সেই সকল মানুষের কাছে আমি তোমার নাম প্রকাশ করেছি। তারা তোমারই ছিল, তাদের তুমি আমাকেই দিয়েছ, আর তারা তোমার বাণী পালন করেছে। তারা এখন জানে যে, তুমি আমাকে যা কিছু দিয়েছ, সবই তোমা থেকে এসেছে; কারণ যে সমস্ত কথা তুমি আমাকে দিয়েছিলে, তা আমি তাদের দিয়েছি, আর তারা তা গ্রহণ করেছে, এবং সত্যি জানে যে, আমি তোমার কাছ থেকে এসেছি, এবং বিশ্বাসও করেছে যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করেছ।
আমি তাদের জন্য প্রার্থনা করছি; জগতের জন্য প্রার্থনা করছি না, কিন্তু যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, তাদেরই জন্য প্রার্থনা করছি, কারণ তারা তোমারই। যা কিছু আমার, তা সমস্তই তোমার; এবং যা তোমার, তা আমার, এবং এইভাবেই আমি তাদের অন্তরে গৌরবান্বিত। আমি এজগতে আর থাকছি না, তারা কিন্তু এজগতে থাকছে, আর আমি তোমার কাছে আসছি।’
✦ প্রভুর বাণী।
৯। উপদেশ
যোহন-রচিত সুসমাচারে আলেক্সান্দ্রিয়ার বিশপ সাধু সিরিলের ব্যাখ্যা
ত্রাণকর্তা যখন বলেন, তিনি পিতা ঈশ্বরের নাম জ্ঞাত করেছেন, তখন বলতে চান, তিনি সমস্ত জগতের কাছে তাঁর গৌরব প্রকাশ করেছেন। তিনি কীভাবে তা করেছেন? আপন আশ্চর্য কাজগুলির মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করায়ই তিনি তা করেছেন। পিতা পুত্রের মধ্যে আপন স্বরূপের প্রতিমূর্তি ও প্রতিচ্ছবিতেই যেন গৌরবান্বিত হন, কেননা মূল-ছবির সৌন্দর্য তার প্রতিচ্ছবিতেই ব্যক্ত হয়। সুতরাং, একমাত্র পুত্র নিজেকে জ্ঞাত করেছেন, আর আপন সত্তায় তিনি হলেন প্রজ্ঞা ও জীবন, বিশ্বনির্মাতা ও স্রষ্টা; তিনি অমর ও অক্ষয়শীল, নিষ্কলঙ্ক, ত্রুটিহীন, করুণাময়, পবিত্র, মঙ্গলকর। পিতা তাঁরই মত বলে জ্ঞাত, কেননা জনক আপন জাতকের চেয়ে স্বরূপে ভিন্ন হতে পারেন না। পিতার গৌরব, তাঁর আপন স্বরূপের প্রতিমূর্তিতে ও আদর্শেই যেন, পুত্রের গৌরবে দৃশ্য।
পিতা হলেন একমাত্র ঈশ্বর, আমরা যেন একথা শিখতে ও সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারি যে পুত্র পিতার নাম জ্ঞাত করেছেন, তা শুধু নয়, কেননা অনুপ্রাণিত শাস্ত্র পুত্রের আগমনের আগেও একথা ঘোষণা করেছিল; তিনি বরং একথাও শেখাতে ও বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, সত্যকার ঈশ্বর ছাড়া তিনি পিতাও বলে যথার্থভাবে অভিহিত। তা এমনটি হয়, কেননা পিতার নিজের মধ্যে ও নিজে থেকে উদ্গত এমন পুত্র আছেন যিনি তাঁর নিজের সনাতন একই স্বরূপের অধিকারী: তিনি যে কালের সূচনার পরেই সর্বযুগের প্রভুর পিতা হলেন, তেমন নয়!
ঈশ্বরের বেলায় ‘ঈশ্বর’ নামের চেয়ে ‘পিতা’ নামটি যথার্থ নাম। ‘ঈশ্বর’ নাম তাঁর মর্যাদা ইঙ্গিত করে, বরং ‘পিতা’ নাম তাঁর ব্যক্তিত্বের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে। আমরা যদি ‘ঈশ্বর’ বলি, আমরা তাঁকে বিশ্বপ্রভু বলে স্বীকার করি; যদি তাঁকে ‘পিতা’ বলি, আমরা দেখাই ব্যক্তিত্বের দিক দিয়ে তিনি কিভাবে ভিন্ন, কেননা স্পষ্ট দেখাই যে তাঁর একটি পুত্র আছে। ‘পিতা’ নামটি যে একপ্রকারে সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও প্রকৃত নাম, একথা পুত্র নিজেই তখনই ব্যক্ত করেছেন, যখন তিনি ‘আমিই ঈশ্বর’ না ব’লে বরং আমি এবং পিতা, আমরা এক (যোহন ১০:৩০) বলেছেন; আবার তিনি নিজের সম্বন্ধে বলেছেন, পিতা ঈশ্বর তাঁকেই নিজের মুদ্রাঙ্কনে চিহ্নিক করেছেন (যোহন ৬:২৭)। আর যখন তিনি আপন শিষ্যদের আদেশ দিলেন, তাঁরা সর্বজাতিকে বাপ্তিস্ম দেবেন, তখন তিনি তা ঈশ্বরেরই নামে করতে বলেননি, বরং স্পষ্টই নির্দেশ দিলেন, তাঁরা পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামেই তা করবেন।
১০। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১১। অর্থদান
১২। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৩। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৪। ধ্যান-গীতি: সাম ১৩৩
ধুয়ো: পবিত্র পিতা, প্রার্থনা করি:
তারা যেন এক হয় আমরা যেমন এক। আল্লেলুইয়া।
দেখ, ভাইদের একত্রে বাস করা
কতই না ভাল, কতই না সুন্দর!
যেমন মাথায় সেই উৎকৃষ্ট তেল যা দাড়ি বেয়ে, আরোনের দাড়ি বেয়ে ঝরে পড়ে,
ঝরে পড়ে তাঁর পোশাকের গলবন্ধনীর উপর,
তেমনি সেই হার্মোনের শিশির,
যা ঝরে পড়ে সিয়োনের চূড়ায় চূড়ায়।
সেইখানে তো প্রভু জারি করেছেন আশীর্বাদ,
চিরকালীন জীবনদান। [ধুয়ো]
১৫। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে আমাদের ত্রাণেশ্বর, আমাদের এ মিনতি কান পেতে শোন:
পরমপবিত্র এ মহারহস্যে যোগদানের ফলে
আমরা যেন এ আস্থা রাখতে পারি যে,
গোটা দেহ-মণ্ডলীও সেই একই গৌরবে ভূষিত হবে,
যে গৌরব তুমি মাথা-খ্রিষ্টকে আরোপ করেছ।
তিনি জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
১৬। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]
পঞ্চাশত্তমী রবিবার
![]() ভাগ ভাগ করে প‘ড়ে তাঁদের প্রত্যেকজনের উপরে বসল, এবং তাঁরা সকলে পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হলেন (প্রেরিত ২:৩-৪)। |
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে।
- আমেন।
আমাদের প্রভু যিশুখ্রিষ্টের অনুগ্রহ,
পিতা ঈশ্বরের প্রেম,
এবং পবিত্র আত্মার প্রেরণা
তোমাদের মধ্যে বিরাজ করুক।
- আপনার মধ্যেও বিরাজ করুক।
এসো, এ পবিত্র অনুষ্ঠানে যোগ্যরূপে অংশ নেবার জন্য আমাদের পাপ স্বীকার করি।
হে প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া কর।
- তোমার বিরুদ্ধে যে করেছি পাপ।
আমাদের দেখাও, প্রভু, তোমার কৃপা।
- আমাদের দাও গো তোমার পরিত্রাণ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হোন, এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করে অনন্ত জীবনে চালনা করুন।
- আমেন।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
খ্রিষ্ট, দয়া কর
- খ্রিষ্ট, দয়া কর।
প্রভু, দয়া কর।
- প্রভু, দয়া কর।
২। জয় পরমেশ্বর।
৩। সমাবেশ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে ঈশ্বর, আজকের পর্বদিবস-সাক্রামেন্তের দ্বারা তুমি তো
সকল জাতি ও দেশের মানুষের মাঝে বিস্তৃত তোমার মণ্ডলীকে পবিত্রিত কর।
অনুনয় করি: বিশ্বমানবজাতির উপরে পবিত্র আত্মার যত দান বর্ষণ কর:
সুসমাচার প্রচারের প্রথম লগ্নে ঐশঅনুগ্রহ যে মহা মহা কাজ সাধন করেছিল,
আজও তুমি তোমার ভক্তদের অন্তরকে সেই অনুগ্রহে পূর্ণ কর।
তোমার পুত্র আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্টের দ্বারা, যিনি পবিত্র আত্মার ঐক্যে তোমার সঙ্গে
ঈশ্বররূপে জীবিত আছেন ও রাজত্ব করেন যুগে যুগান্তরে।
সকলে: আমেন।
৪। প্রথম পাঠ
প্রেরিতদের কার্যবিবরণী থেকে পাঠ (২:১-১১)
যখন পঞ্চাশত্তমী পর্বের দিন এল, তখন তাঁরা সকলে এক স্থানে একত্রে মিলিত হয়েছিলেন; এমন সময়ে হঠাৎ আকাশ থেকে প্রচণ্ড বাতাস বয়ে যাওয়ার মত একটা শব্দ এল, এবং তাঁরা যে বাড়িতে বসে ছিলেন, সেই বাড়ি সেই শব্দে ভরে গেল; আর তাঁরা দেখতে পেলেন, আগুনের মতই যেন কতগুলো জিহ্বা ভাগ ভাগ করে পড়ে তাঁদের প্রত্যেকজনের উপরে বসল, এবং তাঁরা সকলে পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হলেন, ও আত্মা তাঁদের যেভাবে বাক্শক্তি দিলেন, তাঁরা সেই অনুসারে অন্য অন্য ভাষায় কথা বলতে লাগলেন।
সেসময়ে, আকাশের নিচের সমস্ত দেশের বহু ভক্ত ইহুদী যেরুশালেমে ছিল। সেই শব্দ ধ্বনিত হলে ভিড় জমে গেল: তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল, যেহেতু প্রত্যেকজন নিজ নিজ ভাষায় তাঁদের কথা বলতে শুনতে পাচ্ছিল।
খুবই স্তম্ভিত ও আশ্চর্য হয়ে তারা তখন বলল, ‘দেখ, এরা যারা কথা বলছে, এরা সকলে কি গালিলেয়ার মানুষ নয়? তবে আমরা কেমন করে প্রত্যেকে নিজ নিজ মাতৃভাষায় এদের কথা বলতে শুনছি? এই আমরা, যারা পার্থিয়া, মেদিয়া এবং এলামের মানুষ আছি, আবার মেসোপতামিয়া, যুদেয়া ও কাপ্পাদকিয়া, পন্তস ও এশিয়া, ফ্রিগিয়া ও পাম্ফিলিয়া, মিশর ও লিবিয়ার কিরেনে অঞ্চলের মানুষ এবং রোম-অধিবাসী—ইহুদী ও ইহুদীধর্মাবলম্বী, উভয়েই—এবং ক্রীট ও আরব দেশের মানুষ, এই আমরা শুনতে পাচ্ছি, ওরা আমাদের নিজ নিজ ভাষায় ঈশ্বরের মহাকীর্তির কথা বলছে।’
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৫। সামসঙ্গীত ১০৪
ধুয়ো: তোমার আত্মাকে পাঠাও, প্রভু;
ধরণীর মুখ নবীন করে তোল।
প্রাণ আমার, প্রভুকে বল ধন্য!
প্রভু, পরমেশ্বর আমার, তুমি সুমহান!
হে প্রভু, কী অগণন তোমার কর্মকীর্তি; প্রজ্ঞার সঙ্গেই নির্মাণ করেছ এ সবকিছু,
তোমার কর্মরচনায় পৃথিবী পরিপূর্ণ। [ধুয়ো]
তুমি তাদের প্রাণবায়ু ফিরিয়ে নাও,
তারা মরে, ধুলায় ফিরে যায়।
তুমি নিজ আত্মাকে পাঠিয়ে দাও, তারা সৃষ্ট হয়,
এভাবেই তুমি ধরণীর মুখ নবীন করে তোল। [ধুয়ো]
প্রভুর গৌরব হোক চিরকাল;
আপন কর্মকীর্তি নিয়ে প্রভু আনন্দিত হোন।
তাঁর কাছে মনঃপূত হোক আমার এ জপন,
প্রভুতেই তো আনন্দ আমার। [ধুয়ো]
৬। দ্বিতীয় পাঠ
করিন্থীয়দের কাছে প্রেরিতদূত সাধু পলের প্রথম পত্র থেকে পাঠ (১২:৩খ-৭,১২-১৩)
প্রিয়জনেরা, পবিত্র আত্মার প্রেরণায় ছাড়া কেউ বলতে পারে না ‘যিশু প্রভু।’
বহুবিধ অনুগ্রহদান আছে, আত্মা কিন্তু এক; বহুবিধ সেবাকর্ম আছে, প্রভু কিন্তু এক; বহুবিধ কর্মক্রিয়া আছে, কিন্তু সকলের মধ্যে যিনি সেই সবকিছু সাধন করে থাকেন, সেই ঈশ্বর এক। কিন্তু প্রত্যেককে দেওয়া আত্মার সেই বিশেষ অভিব্যক্তি সার্বিক উপকারিতার উদ্দেশ্যেই দেওয়া। কেননা দেহ যেমন এক, অথচ তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অনেক এবং দেহের অঙ্গগুলি অনেক হয়েও সব ক’টি মিলে একদেহ হয়, খ্রিষ্টও সেইরূপ।
প্রকৃতপক্ষে আমাদের সকলেরই এক আত্মায় বাপ্তিস্ম হয়েছে একদেহ হবার জন্য—তা আমরা ইহুদী বা গ্রীক, ক্রীতদাস বা স্বাধীন মানুষ যাই হই না কেন; এবং পান করার মত আমাদের সকলকে এক আত্মাকে দেওয়া হয়েছে।
✦ ঈশ্বরের বাণী।
৭। গীতিগাথা
এসো, পবিত্রাত্মা, এসো!
স্বর্গ থেকে মোদের কাছে
তব আলোর পুণ্য রশ্মি
কর বিকিরণ।
এসো, দীনদুঃখীর পিতা,
এসো, মঙ্গলদানের দাতা,
এসো, মনের উজ্জ্বল জ্যোতি,
কর শান্তি দান।
সান্ত্বনাদানকারী তুমি,
অন্তরের মধুর অতিথি,
স্বস্তি আরাম কর সঞ্চার
মোদের হৃদিতে।
শ্রমে তুমিই বিশ্রামদাতা,
কষ্টে তুমিই মনের আরাম,
মুছে ফেল দুঃখের দিনে
মোদের চোখের জল।
ওগো দিব্য স্বচ্ছ জ্যোতি,
ভক্তের হৃদি কর দখল,
কর পূর্ণ তব আলোয়
মোদের অন্তর প্রাণ।
তব সর্বশক্তি বিনা
মানুষ দুর্বল, মানুষ শূন্য!
পাপের বোঝা ভারী অসহ্য,
কৃপা কর হে।
মন্দ যত কর ধৌত,
শুষ্ক যত কর সিঞ্চন,
ক্ষত যত কর সুস্থ,
প্রাণের চিকিৎসক।
উগ্র যত কর নম্র,
শীতল যত কর উষ্ণ,
বক্র যত কর সরল,
কর শান্তিদান।
তোমার কাছে ভক্তের ভিক্ষা:
দান কর গো পুণ্য মৃত্যু,
দান কর স্বর্গীয় পুরস্কার,
পরমানন্দ!
৮। সুসমাচার বরণ-গীতি
❖ আল্লেলুইয়া, আল্লেলুইয়া।
এসো, পবিত্র আত্মা, তোমার ভক্তদের হৃদয় তোমার প্রেরণায় পূর্ণ কর,
জ্বালাও তাদের অন্তরে তোমার দিব্য প্রেমের আগুন।
❖ আল্লেলুইয়া।
৯। সুসমাচার
✚ যোহন-রচিত পবিত্র সুসমাচার থেকে পাঠ (২০:১৯-২৩)
সেই দিন, সপ্তাহের প্রথম দিন, সন্ধ্যাবেলায়, শিষ্যেরা যেখানে ছিলেন, ইহুদীদের ভয়ে সেখানকার সমস্ত দরজা বন্ধ থাকতেই যিশু এলেন ও তাঁদের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক!’ এবং এই কথা বলে তিনি নিজের দু’হাত আর নিজের পাশটি তাঁদের দেখালেন। প্রভুকে দেখে শিষ্যেরা আনন্দিত হলেন।
যিশু তাঁদের আবার বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক! পিতা যেমন আমাকে প্রেরণ করেছেন, আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি।’ এবং একথা বলার পর তিনি তাঁদের উপরে ফুঁ দিলেন, ও তাঁদের বললেন, ‘পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ কর। তোমরা যদি কারও পাপ ক্ষমা কর, তা ক্ষমা করা হবে; যদি কারও পাপ ধরে রাখ, তা ধরে রাখা থাকবে।’
✦ প্রভুর বাণী।
১০। উপদেশ
বিশপ সাধু আগস্তিনের উপদেশ
ভ্রাতৃগণ, আমাদের জন্য সেই দিনের উদয় হল, যেদিনে পবিত্র মণ্ডলী বিশ্বাসীদের চোখে উদ্ভাসিত হয়, তাদের হৃদয়ে প্রজ্বলিত হয়। আমরা ঠিক সেই দিন উদ্যাপন করছি যেদিন প্রভু যিশুখ্রিষ্ট পুনরুত্থানের পর স্বর্গারোহণে গৌরবান্বিত হয়ে পবিত্র আত্মাকে প্রেরণ করলেন। বস্তুতপক্ষে সুসমাচারে তাঁর এই বাণী লেখা আছে: কেউ যদি তৃষ্ণার্ত হয়, সে আমার কাছে এসে পান করুক; জীবনময় জলের নদনদী তার অন্তর থেকে প্রবাহিত হবে। এপ্রসঙ্গে রচয়িতা ব্যাখ্যা দান করে বলেন, তিনি আত্মা সম্বন্ধেই একথা বলেছিলেন, সেই যে আত্মাকে তাঁর প্রতি বিশ্বাসী মানুষদের পাবার কথা; কারণ আত্মা তখনও ছিলেন না, যেহেতু যিশু তখনও গৌরবান্বিত হননি (যোহন ৭:৩৭-৩৯)। সুতরাং এ বাকি ছিল যে, মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানে ও স্বর্গারোহণে যিশু গৌরবান্বিত হলে পর যে আত্মাকে প্রেরণ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি সেই আত্মাকে দান করবেন: আর তাই ঘটেছে।
আপন শিষ্যদের সঙ্গে চল্লিশ দিন অতিবাহিত করার পর পুনরুত্থিত প্রভু স্বর্গে আরোহণ করলেন, ও পঞ্চাশত্তমী দিনে—যে দিনটি আমরা আজ উদ্যাপন করছি—তিনি আত্মাকে প্রেরণ করলেন, যেইভাবে লেখা আছে: হঠাৎ আকাশ থেকে প্রচণ্ড বাতাস বয়ে যাওয়ার মত একটা শব্দ এল। তাঁরা দেখতে পেলেন, আগুনের মতই যেন কতগুলো জিহ্বা ভাগ ভাগ করে পড়ে তাঁদের প্রত্যেকজনের উপরে বসল; এবং আত্মা তাঁদের যেভাবে বাক্শক্তি দিলেন, তাঁরা সেই অনুসারে অন্য অন্য ভাষায় কথা বলতে লাগলেন (প্রেরিত ২:২-৪)।
সেই বাতাস তাঁদের হৃদয়কে দৈহিক তুষ থেকে পরিশুদ্ধ করছিল; সেই আগুন প্রাচীন দেহলালসার খড় পুড়িয়ে দিচ্ছিল। পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাঁরা যে যে ভাষায় কথা বলছিলেন, এতে সেই ভাবী মণ্ডলীর একটা দৃষ্টান্ত ছিল, যে মণ্ডলীতে সকল জাতির ভাষা উপস্থিত। কেননা জলপ্লাবনের পরে ধর্মহীন মানুষের গর্ব প্রভুর বিরুদ্ধে উচ্চ একটা মিনার নির্মাণ করেছিল আর মানবজাতি ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় বিভক্ত হয়ে পড়েছিল, যার ফলে প্রতিটি জাতি অন্য জাতির কাছে নিজ কথা না বোঝাবার জন্য নিজ নিজ ভাষায় কথা বলত।
এখন কিন্তু ভক্তদের নম্র ভক্তি এ সমস্ত ভাষার বিভেদ মণ্ডলীর ঐক্যে সংগ্রহ করেছে, যার ফলে বিদ্বেষ যা বিক্ষিপ্ত করেছিল, ভালবাসা দ্বারা তা পুনর্মিলিত হয়েছে: এভাবে একদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মত মানবজাতির বিক্ষিপ্ত অঙ্গগুলি খ্রিষ্টের পুণ্য দেহের ঐক্যে ভালবাসার আগুনে গলে গিয়ে একমাথা সেই খ্রিষ্টের সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত হয়েছে। এজন্যই যারা শান্তির অনুগ্রহ ঘৃণা করে ও একতা ও সুসম্পর্ক রক্ষা করে না, তারা পবিত্র আত্মার দান থেকে সম্পূর্ণ রূপে বঞ্চিত। যদিও তারা আজ এখানে আনুষ্ঠানিক ভাবে একত্রিত, যদিও তারা পবিত্র আত্মার প্রতিশ্রুতি ও আগমন বিষয়ক এ পাঠগুলি শোনে, তবু তারা তা শুনে পুরস্কৃত নয়, দণ্ডিতই হবে। হৃদয় যা প্রত্যাখ্যান করে, কান দিয়ে তা গ্রহণ করলে কী লাভ? যাঁর আলো তারা ঘৃণা করে, তাঁর আগমন উদ্যাপনে তাদের কী উপকার? তোমরা কিন্তু, হে আমার ভ্রাতৃগণ, হে খ্রিষ্টের দেহের অঙ্গগুলি, একতার পল্লব ও শান্তির সন্তান যে তোমরা, তোমরা সানন্দে ও নির্ভয়ে এদিন উদ্যাপন কর, কেননা পবিত্র আত্মার আগমনের দিনগুলিতে যা পূর্বঘোষিত হয়েছে তা তোমাদের মধ্যে পূর্ণতা লাভ করে। যেমন সেসময় পবিত্র আত্মাকে যে গ্রহণ করত একজনমাত্র হয়েও সে সব দেশের ভাষায় কথা বলত, তেমনি এখন সর্বজাতির কাছে সর্বদেশের ভাষায় কথা বলছে এ ঐক্যই যার মধ্যে তোমরাই প্রতিষ্ঠিত যারা পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ করেছ; —অবশ্যই, তোমরা যদি কোন হিংসা-সূত্রে সেই খ্রিষ্টমণ্ডলী থেকে নিজেদের ছিন্ন না কর, যে মণ্ডলী সর্বদেশের ভাষায় কথা বলে।
১১। স্বর্গমর্তের স্রষ্টা…।
১২। অর্থদান
১৩। প্রভুর প্রার্থনা
অনুষ্ঠাতা:
ঐশশিক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে, এসো,
ত্রাণকর্তার নির্দেশবাণী-মতো সাহসভরে বলি: হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ (ইত্যাদি)
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রেমময় পিতা, সকল অমঙ্গল হতে আমাদের রক্ষা কর,
পৃথিবীতে শান্তি প্রদান কর,
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
আমরা যেন তোমার শান্তির পথে চালিত হই।
এই ভরসায় আমরা মুক্তিদাতা খ্রিষ্টের আগমনের প্রতীক্ষায় আছি।
সকলে:
যুগ যুগ ধরে তুমিই প্রভু, তুমিই শক্তিমান, তুমিই মহান।
অনুষ্ঠাতা:
হে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট,
তুমি তোমার শিষ্যদের বলেছ,
আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি,
আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।
মিনতি করি, হে প্রভু,
আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে
তোমার মণ্ডলীর বিশ্বাসের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
তোমার মণ্ডলীেক শান্তি ও একতা দান কর।
হে খ্রিষ্ট, যুগ যুগ ধরে তুমিই বিরাজমান, তুমিই প্রভু।
সকলে:
আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
এসো, একে অন্যকে শান্তির চিহ্ন প্রদান করি।
হে বিশ্বপাপহর (ইত্যাদি)
১৪। প্রভুকে গ্রহণ
পুরোহিত না থাকায় ভক্তগণ পবিত্র রুটি-ছাড়া অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে পারেন।
হে প্রভু, তোমাকে গ্রহণ করতে আমি অযোগ্য;কিন্তু বিশ্বাস করি, তোমার বাক্যেই আমি মুক্তি পাব।
১৫। ধ্যান-গীতি: সাম ১৩১
ধুয়ো: তাঁরা সকলে পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হলেন,
ও ঈশ্বরের মহাকীর্তির কথা ঘোষণা করতে লাগলেন। আল্লেলুইয়া।
প্রভু, আমার হৃদয় গর্বিত নয়,
আমার চোখও উদ্ধত নয়।
বিরাট কোন কিছুর পিছনে,
আমার বোধাতীত আশ্চর্যময় কোন কিছুর পিছনে যাই না কো আমি।
আমার প্রাণ বরং আমি শান্ত রাখি,
রাখি নিশ্চুপ;
মায়ের কোলে দুধ-ছাড়ানো শিশুর মত,
দুধ-ছাড়ানো তেমন শিশুরই মত আমার প্রাণ।
ইস্রায়েল, প্রভুর প্রতীক্ষায় থাক
এখন থেকে চিরকাল ধরে।
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার গৌরব হোক,
যিনি আছেন, যিনি ছিলেন, যিনি আসছেন, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। আমেন। [ধুয়ো]
১৬। শেষ প্রার্থনা: এসো, প্রার্থনা করি।
হে ঈশ্বর, তুমি তোমার মণ্ডলীকে স্বর্গীয় যত মঙ্গলদানে ধন্য করেছ।
অনুনয় করি:
মণ্ডলীর মধ্যে সঞ্চারিত তোমার সেই অনুগ্রহদান রক্ষা কর,
যে পবিত্র আত্মাকে তার উপরে বর্ষণ করেছ,
সেই পবিত্র আত্মার পরাক্রম যেন নিয়তই আমাদের অনুপ্রাণিত করে,
এবং এই আত্মিক খাদ্য গ্রহণের ফলে
আমরা যেন শাশ্বত মুক্তির পূর্ণতা লাভ করতে পারি।
আমাদের প্রভু সেই খ্রিষ্টের দ্বারা।
সকলে: আমেন।
১৭। বিদায়
অনুষ্ঠাতা:
পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।
সকলে: আমেন।
অনুষ্ঠাতা:
শান্তিতে যাও; নিজেদের জীবনাচরণে প্রভুকে গৌরবান্বিত কর।
সকলে: ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
[সূচী]